মঙ্গলবার ১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্টে হাজারো রোহিঙ্গা

শনিবার, ২৬ আগস্ট ২০১৭
878 ভিউ
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের জিরো পয়েন্টে হাজারো রোহিঙ্গা

কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৮ আগস্ট) :: বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের কক্সবাজারের উখিয়ার সীমান্তবর্তী ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রুর ওপারে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ক্যাম্প থেকে ব্যাপক ফাঁকা গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। আর দমন-নিপীড়ন ও নির্যাতনের ভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে জড়ো হয়েছে হাজারো রোহিঙ্গা। শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। তবে অনেকে তাবু গেড়ে অপেক্ষা করছে সন্ধ্যার পর সুযোগ বুঝে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার।

আর এসব অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকাতে বিপুল সংখ্যক বিজিবি সদস্যদের সীমান্তে সতর্কতা আরও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার বিজিবির সেক্টর কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) লে.কর্নেল আনোয়ারুল আজিম।

তিনি বলেন,রাখাইন রাজ্যে হামলার পর নিপীড়নের ভয়ে অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় জিরো পয়েন্টে এসেছে। শুক্রবার ভোর থেকে বিজিবি কঠোর তৎপরতায় তাদের অনুপ্রবেশ প্রতিহত করছে।

তিনি আরও বলেন, জিরো পয়েন্টে জমায়েত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়তে থাকায় তারা ওপারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির চৌকিতে হামলা করতে পারে এভয়ে আত্বরক্ষায় ক্যাম্প থেকে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করেছে মিয়ানমার বিজিপি। ভীতি সঞ্চারে এটি করা হয়েছে। গুলি বর্ষণের আওয়াজ শুনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এমন উত্তরই দিয়েছে বিজিপি সংশ্লিষ্টরা।

গত বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) রাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা উগ্রপন্থি (এআরএসএ) ৩০টি পুলিশ পোস্টে হামলার ঘটনায় বুছিদং ও রাছিদং জেলার ময়্যু পর্বতমালা সংলগ্ন রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে কারফিউ জারি করেছে সেনারা। আর এ উত্তেজনা আর শঙ্কার মধ্যে কক্সবাজারের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা অব্যহত রয়েছে। কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী স্থল সীমান্ত দিয়ে প্রবেশেরে আশায় শুক্রবার থেকে নাফ নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীরে বসে থাকা কয়েক হাজার রোহিঙ্গা স্থানীয় দালালের মাধ্যমে বালুখালী এবং কুতুপালং শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। শনিবারও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

এদিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারী বাহিনী এবং রোহিঙ্গা উগ্রপন্থিদের সাথে চলমান সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ১১ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের পর মো. মুসা (২২) নামে এক রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। তিনি মিয়ানমারের মংডু এলাকার মেহেদি পাড়ার বাসিন্দা।শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।বাকীদের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এনজিওদের তত্বাাবধানে চিকিৎসা চলছে।

অপরদিকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এক জরুরী সভা শনিবার সকাল ১০ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত উপজেলা অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক আলী হোসেন বলেন, কোন অবস্থাতেই একজন রোহিঙ্গাকেও আর এদেশে ঢুকতে দেওয়া হবেনা। মানবতার নামে আর একজন রোহিঙ্গাকেও সীমান্ত ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া হবেনা। মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের নিয়ে যা কিছু সমস্যা তা তাদের দেশের অভ্যন্তরিন এবং তারাই সমাধা করবে। মিয়ানমারে হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক বাহক রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ এবার ঠেকাতে হবে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল বলেন, এখানকার মানুষ রোহিঙ্গাদের কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের কারণে বনভূমি ও সংস্কৃতি নষ্ট হচ্ছে। তাই সবার সহযোগীতা চেয়েছেন।

অপরদিকে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা। শুক্রবার রাত নয়টা থেকে আজ শনিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত কোস্টগার্ড ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা নাফ নদী দিয়ে টেকনাফে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে বিভিন্ন এলাকা থেকে ৭৩ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছেন।এর আগে শুক্রবার টেকনাফ দিয়ে ১৪৬ জনকে ফেরত পাঠানোর একদিন পরই ৭৩ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হলো। এদের মধ্যে ৫৬ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছে কোস্টগার্ড এবং ১৭ জনকে ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি সদস্যরা।

কোস্টগার্ড ও বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের ২০৮ কিলোমিটার স্থল ও ৬৩ কিলোমিটার জলসীমানা রয়েছে। গত দুই দিনে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ২১৯ জন রোহিঙ্গাকে আটক করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কোস্ট গার্ড ২৪ ঘণ্টা নাফনদী ও এর আশপাশের সীমান্তে টহলে রয়েছে।

প্রসঙ্গত মিয়ানমারে জাতিগত নিপীড়নের শিকার হয়ে গত কয়েক দশকে বাংলাদেশে ৫ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। মুসলিম রোহিঙ্গাদের নিজ দেশের নাগরিক হিসেবে মানতে নারাজ মিয়ানমার। চলতি অস্থিরতায় আরও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকতে সীমান্তে জড়ো হয়েছে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের জঙ্গি তৎপরতাসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

 

878 ভিউ

Posted ৬:৩৩ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৬ আগস্ট ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : Shaheed sharanee road, cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com