কক্সবাংলা ডটকম(৯ জুন) :: অনেকটা জুয়াই বলা যায়। ৩ বছরের মত সময় থাকা সত্বেও আগাম নির্বাচন দিয়ে জুয়া খেলায় হেরে গেছেন প্রধানমন্ত্রী টেরিসা মে। নির্বাচনের কোনো প্রয়োজন ছিল না। তারপরও প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে নিজের ক্ষমতা আরও নিরঙ্কুশ করতে হুট করে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেন। তাঁর আত্মবিশ্বাস ছিল। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল বলছে, থেরেসা মে ভুলই করেছেন। জুয়ায় হেরে গেছেন তিনি। সর্বশেষ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফলাফলে প্রধানমন্ত্রী টেরিসা মের দল কনজারভেটিভ পার্টি স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন। আগের বারের তুলনায় ভালো ফল করেছে বর্তমান বিরোধী দল লেবার পার্টি। দেশটিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের সম্ভাবনা দেখছেন বিশ্লেষকরা।
বৃহস্পতিবারের (৮ জুন) নির্বাচনে নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সের প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী,৬৫০টি আসনের মধ্যে কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ৩১৬টি। লেবার পার্টি পেয়েছে ২৬১টি। অন্যদিকে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি) ৩৫টি, লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা ১২টি এবং ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি ১০টি আসনে জয় পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ছোট দলগুলোর দখলে গেছে বাকি ২২ টি আসন।
কোনো দলকে এককভাবে সরকার গঠন করতে হলে কমপক্ষে ৩২৬টি আসনে জয়লাভ করতে হবে। ২০১৫ সালের নির্বাচনে ৩৩১টি আসনে বিজয়ী হয়ে এককভাবে সরকার গঠন করে কনজারভেটিভ পার্টি। এবার দলটি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পথে রয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে আবার ক্ষমতায় ফিরবেন, নাকি বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন- তা জানতে আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। তবে দাবি উঠেছে প্রধানমন্ত্রী টেরিসা মের পদত্যাগের।
ব্রেক্সিট ইস্যুতে আয়োজিত গণভোটে ব্রিটিশ জনগণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দিলে পদত্যাগ করেন ডেভিড ক্যামেরন। এরপর থেরেসা মে যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আসেন। আগাম নির্বাচনের বিরুদ্ধে বারবার বক্তব্য দিয়ে আসলেও ১৮ এপ্রিল আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।
টেরিসা মের পদত্যাগ দাবি করবিনের
ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনের ফলাফলে প্রধানমন্ত্রী টেরিসা মের দল কনজারভেটিভ পার্টি স্পষ্ট ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পথে রয়েছে। ভালো ফল করেছে বর্তমান বিরোধী দল লেবার পার্টি। সমর্থন কমায় প্রধানমন্ত্রী টেরিসা মের পদত্যাগ দাবি করেছেন লেবার নেতা জেরেমি করবিন।
নিজের আসনে জেতার পরে লেবার নেতা জেরেমি করবিন বলেন, ‘জনগণ ব্যয় সঙ্কোচনের রাজনীতি প্রত্যাখান করেছে। আর এজন্য টেরিসা মের পদত্যাগ করা উচিত।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ভবিষ্যত নিয়ে নিজ দলের ভেতরেও গুঞ্জন চলছে। একজন সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রীর বরাতে বিবিসির রাজনৈতিক সম্পাদক লরা কুয়েন্সবার্গ জানান, চূড়ান্ত ফলাফলে ক্ষমতাসীনরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালে টেরিসা মের নিজ পদে থাকা বেশ কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন তার দলের রাজনীতিকরাই।
বৃহস্পতিবারের (৮ জুন) নির্বাচনে নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সের ৬৫০টি আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ফলাফল জানা গেছে ৬০৫টি আসনের। এর মধ্যে কনজারভেটিভ পার্টি পেয়েছে ২৯০টি। লেবার পার্টি পেয়েছে ২৪৯টি।
অন্যদিকে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি) ৩৪টি। লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা ১১টি এবং ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টি ১০টি আসনে জয় পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ছোট দলগুলোর দখলে গেছে বাকি ১১টি আসন। কোনো দলকে এককভাবে সরকার গঠন করতে হলে কমপক্ষে ৩২৬টি আসনে জয়লাভ করতে হবে।
সেই হিসাবে এবার দলটি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পথে রয়েছে। ২০১৫ সালের নির্বাচনে ৩৩১টি আসনে বিজয়ী হয়ে এককভাবে সরকার গঠন করে কনজারভেটিভ পার্টি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আসেন রক্ষণশীল দলের নেতা ডেভিড ক্যামেরন।
পরবর্তীতে ব্রেক্সিট ইস্যুতে আয়োজিত গণভোটে ব্রিটিশ জনগণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় দিলে পদত্যাগ করেন তিনি। এর পর যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান টেরিসা মে। আসছে ২০১৯ সালে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও টেরিসা মের ঘোষণা অনুযায়ী আগাম নির্বাচন হয়েছে।
বিবিসি, সিএনএন ও রয়টার্স।