কক্সবাংলা ডটকম(১৯ ডিসেম্বর) :: যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল উন্মোচন করতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জঙ্গিবাদ দমনের জন্য পাকিস্তানকে চাপ দিয়েছেন। নিজস্ব ভূখণ্ডে তৎপরতা চালানো জঙ্গিদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর কৌশলগত অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন একটি জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল উন্মোচন করেন ট্রাম্প। ওই কৌশলের কাগজপত্রে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে একটি সম্ভাব্য সামরিক সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। এই সংঘাত পারমাণবিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াকে জটিল জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জে থাকা অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ট্রাম্প ঘোষিত নতুন নিরাপত্তা কৌশলের আওতায় দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের জঙ্গিবাদের হুমকি মোকাবিলা, আন্তঃ সীমান্ত সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা এবং পারমাণবিক অস্ত্র, প্রযুক্তি যেন সন্ত্রাসীদের হাতে না পৌঁছায় তা নিশ্চিত করাকে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের বিষয় হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
ট্রাম্পের দাবি, পাকিস্তানকে ভিত্তি করে কার্যক্রম পরিচালনাকারী আন্তর্জাতিক জঙ্গিরা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ধারাবাহিক হুমকি তৈরি করে আসছে। কোনও দেশ যদি জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয় তবে তাদের সঙ্গে অন্য দেশের অংশীদারত্বভিত্তিক সম্পর্ক টিকতে পারে না। কারণ, ওই জঙ্গিরা অংশীদার দেশের নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ওপর হামলা চালায়।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা অবশ্যই দেখতে চাই, তাদের (পাকিস্তান) ভূখণ্ডে কার্যক্রম পরিচালনাকারী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর জন্য প্রতি বছর আমরা পাকিস্তানকে বিপুল সহায়তা দিই। তাদেরও আমাদেরকে সহায়তা করতে হবে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত সম্পর্ক গভীর করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ‘ভারত মহাসাগর এবং ওই অঞ্চলের নিরাপত্তায় ভারতের নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা’ পালনে ভারতকে সমর্থন দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
ট্রাম্পের নিরাপত্তা কৌশলের আওতায় দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় সমৃদ্ধি আনতে অর্থনৈতিক সমন্বয়কে উৎসাহিত করা হয়েছে। এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক সহায়তা বাড়ানোর জন্য ভারতকেও আহ্বান জানানো হয়েছে। ট্রাম্পের নতুন নিরাপত্তা কৌশলের ওই নথিপত্রে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকিয়ে নিজেদের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার জন্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে সহায়তা করবে যুক্তরাষ্ট্র।’
এই কৌশলের অংশবিশেষ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সাবেক উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলিসা আয়রেস বলেন: ‘ট্রাম্পের নতুন কৌশলে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে গুরুত্ব দেওয়া এবং ভারতের ব্যাপারে যে ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা হয়েছে তা আগের প্রশাসনগুলোর সঙ্গে মিল রয়েছে। যদিও এখানে পাকিস্তানের প্রতি কড়া শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।’
তবে আলিসা মনে করেন, ট্রাম্প তার পূর্বসূরীদের তুলনায় অনেক বেশি বলিষ্ঠ শব্দ ব্যবহার করেছেন। পারস্পরিক সহযোগিতার বদলে প্রতিযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প চীন ও রাশিয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। দাবি করেছেন, এই দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব, সম্পদ ও মূলবোধকে চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করছে। আমেরিকা ফার্স্ট নীতি অক্ষুন্ন রেখে ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারত্ব গড়তে চায়, কিন্তু তা এমন উপায়ে যেন তাতে মার্কিন স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে।
Posted ৪:৪১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta