কক্সবাংলা ডটকম(২৪ আগস্ট) :: বিশ্বের সবথেকে বড় অস্ত্র নির্মাণকারী সংস্থা লকহিড মার্টিন। আর মার্কিন এই সংস্থার কাছ থেকে ভারতীয় বায়ুসেনায় আসার কথা F-16 যুদ্ধবিমানের। সেই বিষয়ে চলছে কথাবার্তা। সম্প্রতি ‘বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন ওই সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, ভারত যদি এই যুদ্ধবিমানকে বেছে নেয়, সেক্ষেত্রে এই দেশেই প্রত্যেক মাসে অন্তত ৩ থেকে ৪টি F-16 তৈরি হবে।
সংস্থার মার্কেটিং বিভাগের কর্ণধার র্যান্ডি হওয়ার্ড বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক মাসে তিনটি বা তার থেকে বেশি এয়ারক্রাফট তৈরি করার ব্যবস্থা করব। তবে সবটাই নির্ভর করছে, ভারত ক’টা এয়ারক্রাফট কিনতে চায় আর কবে কিনতে চায়, তার উপর।’ সংস্থার তরফ থেকে আরও বলা হয়েছে যে ভারত যদি এই সংস্থাকে বেছে নেয় সেক্ষেত্রে ভারতকে F-16 ফাইটার জেটের গ্লোবাল মেনটেনেন্স হাবে পরিণত করবে তারা।
১২ বিলিয়ন ডলারের এই বরাত পাওয়ার জন্য মার্কিন সংস্থা লকহিড ভারতের টাটা অ্যাডভান্স সিস্টেম লিমিটেডের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে নিলামে অংশগ্রহণ করছে। এক্ষেত্রে, ওই সংস্থার প্রতিযোগী হিসেবে থাকছে ‘গ্রিপেন ফাইটার জেট’-এর নির্মাতা সুইডিস সংস্থা SAAB. গত জুন মাসে প্যারিs এয়ার শো-তে F-16 যুদ্ধবিমান প্রদর্শিত হওয়ার পরেই মার্কিন সংস্থার সিইও মেরিলিন হিউসনের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এই চুক্তি হলে ভারত ও আমেরিকা দুই দেশই যথেষ্ট উপকৃত হবে বলে উল্লেখ করেছেন লকহিডের চিফ টেকনোলজি অফিসার কেওকি জ্যাকসন। তিনিও জানিয়েছেন, বিশ্ব জুড়ে অন্তত ৩০০০ F-16 ফাইটার জেট রয়েছে। আর চুক্তি সম্পূর্ণ হলে সেই সব যুদ্ধবিমানের সার্ভিসিং হবে ভারতে।
F-16 বিশ্বের সবথেকে সফল মাল্টি-রোল ফাইটার জেট। এই চুক্তি হলে, ভারতে প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। চুক্তি কার্যকর হলে হায়দরাবাদে তৈরি হবে এই যুদ্ধবিমানগুলি।
ভারতীয় বায়ুসেনার অন্যতম ভরসা যুদ্ধবিমান তেজস-এর উৎপাদন খুব শীঘ্রই দ্বিগুণ হতে চলেছে বলে দাবি করল হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (হাল)।
এক সরকারি বিবৃতির মাধ্যমে তারা জানিয়েছে, ২০১৯-২০র মধ্যেই দ্বিগুণ হয়ে যাবে এই যুদ্ধ বিমানটির উৎপাদন। চলতি সময়ে এক বছরে ৮টি বিমান তৈরি করে হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড, কিন্তু ২০১৯ থেকে এক বছরে ১৬টি করে তেজস তৈরি করবে হাল।
এই বিশালাকার প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করতে অতিরিক্ত ১২.৩১ বিলিয়ন খরচ করতে হবে বলে জানায় তারা। উল্লেখ্য, ২০০৫এ ভারতীয় বায়ুসেনা ২০টি Mk1 বিমানের অর্ডার দেয় হালকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩টি বিমানের যোগান দিতে পেরেছে তারা। কিন্তু ২০১৭-১৮র মধ্যে ৮টি এবং পরবর্তী বছরে ১০টি Mk1 যুদ্ধবিমান সরবরাহ করবে তারা। সুতরাং পরিসংখ্যান যা বলছে, যদি সেইমত কাজ হয় তবে ২০১৯ থেকে প্রতি বছরেই ১৮টি তেজস বিমান পেতে চলেছে ভারতীয় বায়ুসেনা।
২০১৬র নম্ভেম্বর মাসে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের সঙ্গে হওয়া ৫০০.২৫ বিলিয়নের চুক্তি অনুসারে ৮৩টি তেজস যুদ্ধবিমান বানানোর বরাত পায় হাল। হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্সের চেয়ারম্যান টি সুভার্না রাজু সংবাদমাধ্যমকে জানান, ইতিপূর্বে একটি বিমান তৈরি করতে প্রায় ১৯ মাস সময় লেগে যেত হাল-এর।
কিন্তু বর্তমানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আরও দ্রুত গতিতে উৎপাদন সম্ভব হবে এই বিমানের। বায়ুসেনার মিগ বিমানগুলিকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই যান্ত্রিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন চালকেরা। একই সঙ্গে প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্য বিমানগুলি পুষতেও নাজেহাল অবস্থা সেনার। তাই নতুন যুদ্ধবিমান আমদানি করতে উঠেপড়ে লেগেছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক।