কক্সবাংলা ডটকম(২১ আগস্ট) :: নয়াদিল্লি-বেজিং যুদ্ধ হলে চরম ক্ষতি হবে চিনের। ভারতীয় সেনার উপর হামলা চালালে মৃত্যুমিছিল দেখবে লালফৌজ। শুধু তাই নয়, ধাক্কা খাবে এশিয়া মহাদেশে ‘রাইজিং সুপারপাওয়ার’ হিসেবে চিনের ভাবমূর্তি। এই ভাষাতেই চিনকে সতর্ক করল কেন্দ্র।
স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
দেশের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরাও এই বিষয়ে একমত। তাঁদের মতে, যতই গর্জাক না কেন আদতে কখনই ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পথে হাঁটবে না কমিউনিস্ট দেশটি। সেক্ষেত্রে চূড়ান্ত আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে বেজিংকে। আন্তর্জাতিক মহলেও একঘরে হয়ে যেতে হবে। তবে ডোকলাম ও অন্যান্য সীমান্তবর্তী এলাকায় ছোটখাটো অনুপ্রবেশ চালাতে পারে লালফৌজ। ভারতকে চাপে রাখতে কূটনৈতিকভাবেও কিছুটা সুবিধা আদায় করে নিতে পারে চিন। তবে চূড়ান্ত সংঘাতের পথে এখনই হাঁটার সাহস দেখাবে না চিন।
উল্লেখ্য, ষাটের দশকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহেরুর ‘বিফল’ পঞ্চশীল ও ‘ফরওয়ার্ড পলিসি’ আটকাতে পারেনি আগ্রাসী চিনকে। যুদ্ধে চরম লাঞ্চনা ভোগ করতে হয় ভারতকে। তাই এবার ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে তৈরি দিল্লি। এক শীর্ষ ভারতীয় কূটনীতিবিদ জানিয়েছেন, ১৯৬২ সালের ভারত আর আজকের ভারতে প্রচুর ফারাক।
অবশ্য একথা আগেও জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। শুধু এশিয়া মহাদেশেই নয়, গোটা বিশ্বে ভারত আজ একটি মহাশক্তি। ডোকলাম বিবাদ নিয়ে চিন হামলা চালালে মুখ পুড়বে ড্রাগনেরই। কৌশলগত দিক থেকে বিচার করলে ডোকলামে সুবিধাজনক অবস্থান ভারতীয় সেনার। তাই হামলা করলে রক্তাক্ত হবে লালফৌজই।
ডোকলাম থেকে ভারত সেনা না সরালে ৩ হাজার ৪৮৮ কিমি ভারত-চিন সীমান্তের যে কোনও এলাকায় হামলা চালাবে লালফৌজ, এমনটাই হুমকি দিয়েছিল চিনা বিদেশমন্ত্রক। কিন্তু ‘সাউথ ব্লকে’র কর্তারা মনে করছেন, যুদ্ধের পথে হাটলে চরম ক্ষতি হবে চিনের। ভারতের কাছে হেরে এশিয়ার চিনের প্রতিপত্তি খর্ব হবে। এছাড়াও প্রবল ধাক্কা খাবে আমেরিকাকে টেক্কা দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা।
ডোকলামে ভারতীয় সেনার সাহসী পদক্ষেপে যথেষ্ট আশঙ্কায় ড্রাগনের দেশ। তাই মুখে আস্ফালন করলেও এই মুহূর্তে সরাসরি সংঘাতে যেতে নারাজ লালফৌজ।তাছাড়া, ভারতের পাশে রয়েছে আমেরিকা ও জাপান। মালাবার নৌমহড়ায় শক্তিপ্রদর্শন করেছে তিন দেশের নৌসেনার। তিন মহাশক্তির সঙ্গে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা নেই লালফৌজের, আর তাই লড়াইয়ে নামবে না চিন, এমটাই বলছেন দেশের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
তাঁদের মতে, শিলিগুড়ির কাছে ‘চিকেন নেক’ এলাকাকে নজরে রেখেই ডোকলামে সড়ক নির্মাণ করার চেষ্টা চালিয়েছিল চিন। তা বিফল হওয়ায় কৌশলগতভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে ভারত। এছাড়াও রপ্তানি নির্ভর চিন হারাবে ভারতের বিশাল বাজার। প্রায় ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য হয় দু’দেশের মধ্যে। তাই যুদ্ধ শুরু করে নিজের অর্থনীতিতে চরম আঘাত হানবে না চিন।
প্রসঙ্গত, আগামী মাসেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘ব্রিকস সামিট’। সেখানে সীমান্ত বিবাদ নিয়ে আলোচনায় বসতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। মনে করা হচ্ছে সংঘাত ভুলে আপাতত শান্তির পথেই হাটবেন দুই দেশের নেতাই।
Posted ১২:৩৭ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২১ আগস্ট ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta