কক্সবাংলা ডটকম(১৮ জুন) :: কর্মব্যস্ত দিনের পর রাতে নিচ্ছিদ্র ঘুম কে না চায়। কিন্তু সেই ঘুম যদি হয় সোনার হরিণ, ধরা দেয় তো দেয় না, তাহলে তো রাতে ঘুম না আসার দুশ্চিন্তা বয়ে বেড়াতে হয় দিনেও। অন্যদিকে রাতের পর রাত ঘুম না হওয়াই শুধু নয়, অনেকের পর্যাপ্ত ঘুমের পরও শরীর থেকে ক্লান্তি ঝরছে না। এর কারণ টানা নিচ্ছিদ্র ঘুম না হওয়া। আর এসবের ফলে শারীরিকভাবেও আপনাকে নানা ঝামেলা পোহাতে হয়।
ঘুমের স্বল্পতার কারণে মেজাজ খিটমিটে হয়ে থাকে। যার প্রভাব পড়ে কাজে। মোট কথা, ঘুমে ব্যাঘাত হওয়া কিংবা অল্প ঘুমের কারণে পড়তে পারেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। তাই ঘুমের ব্যাপারে আরেকটু যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। শারীরিক ও মানসিক অনেক সমস্যা সমাধান হতে পারে একটা প্রশ্নের জবাবে, ভালো ঘুম হচ্ছে তো? ভালো ঘুমের জন্য কী করা উচিত, কী করা উচিত নয়, এসব নিয়েই আজকের আয়োজন—
আসলেই কতটা ঘুমানো দরকার?
ভালো ঘুমের সংজ্ঞা কয়েক ঘণ্টা দিয়ে হিসাব করা কঠিন। কেননা সেটা ক্ষেত্রভেদে ভিন্ন হতে পারে। তবে এ কথা সত্য যে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য রাতে ৭-৯ ঘণ্টা নিচ্ছিদ্র ঘুম প্রয়োজন। অন্যদের ক্ষেত্রে যা ৬ ঘণ্টা হলেও হয়। তবে সেটা অবশ্যই টানা নিচ্ছিদ্র ঘুম হতে হবে। অনেকেরই হয়তো ঘুম ভেঙে যায় কিন্তু বিছানা ছাড়তেই যত আপত্তি। সে সময় হয়তো পুরো ঘুম না, অনেকটা আচ্ছন্ন হয়ে বিছানায় শুয়ে থাকতেই ভালো বোধ করেন। কিন্তু জেনে রাখুন এটা অবশ্যই ভালো লক্ষণ নয়। যখন হতাশা আপনাকে গ্রাস করে ফেলবে, তখনই এমন বোধ হবে।
হতে হবে সাউন্ড স্লিপ
চোখজোড়া মুদে এলেই সেটা ঘুম, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। কেননা এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা সারা রাত ঘুমিয়েছেন কিন্তু সকালে ক্লান্তি তাকে ঠিকই ঘিরে ধরেছে। এর কারণ হচ্ছে পুরো নিচ্ছিদ্র ঘুম না হওয়া। আধো ঘুম, আধো জাগরণ কিংবা পারিপার্শ্বিক নানা কারণে ঘুমে ব্যাঘাত— এগুলো সাউন্ড স্লিপ না হওয়ার প্রতিবন্ধকতা। যদি আপনার ক্ষেত্রেও এমনটা হয়ে থাকে, তাহলে প্রথমেই খুঁজে বের করুন আপনার ঘুম না হওয়ার কারণগুলো। সম্পূর্ণ নির্ভার হয়ে ঘুমাতে যান। রাতে ঘুমানোর অন্তত ১ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার সেরে ফেলুন। পরিবারের সবার সঙ্গে গল্প করুন, সম্পূর্ণ চিন্তামুক্ত হয়ে ঘুমাতে যান।
ভালোর ঘুমের লক্ষণ
‘কোয়ালিটি’ এবং ‘কোয়ান্টিটি’ দুটো বৈশিষ্ট্যই সমানভাবে প্রয়োজন ভালো ঘুমের জন্য। ৬-৮ ঘণ্টা টানা ঘুমালেই সেটা বেশ ভালো ঘুমের উদাহরণ হবে না, যদি না সেটা নিচ্ছিদ্র ঘুম হয়ে থাকে। নিদ্রাহীনতায় ভুগছেন, এমন কারো কাছে হয়তো প্রাথমিকভাবে ঘুমের কোয়ালিটি বা মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকবে না। কিন্তু যারা নিদ্রাহীন রাত কাটাতে অভ্যস্ত নন, তাদের কাছে কিন্তু উল্টোটাই। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন আসলেই আপনার ভালো ঘুম হয়েছে কিনা? সকালে ঘুম থেকে উঠে বেশ ঝরঝরে বোধ করছেন, ক্লান্তি নেই এতটুকু, তাহলে বুঝে নিবেন আপনার বেশ ভালো ঘুম হয়েছে। অর্থাত্ ঘুমের মান এবং পরিমাণ দুটোই ঠিক ছিল। অন্যদিকে সময়মতো চোখ খুলেও যদি মনে হয় ঘুম ঘুম ভাব কাটেনি, মেজাজ খিটখিটে হয়ে আছে কিংবা বিরক্তিকর অনুভূতি তৈরি হয়, তাহলে নিশ্চিত থাকতে পারেন আপনার ঘুম ভালো হয়নি।
ভালো ঘুমের জন্য একটুখানি মেডিটেশন
ঘুমের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতে রাতে ঘুমানোর আগে কিছুটা সময় মেডিটেশন করে নিতে পারেন। খুব হালকা ধরনের মেডিটেশন, যা হয়তো আপনার মনকে ঠাণ্ডা করবে সঙ্গে প্রশান্তি ছড়িয়ে দেবে সারা শরীরে। এমনকি এটাও হতে পারে ঘুমানোর আগে বিছানায় বসে ৫-১০ মিনিট চোখ বন্ধ করে রাখুন। সে সময়টুকু সব ধরনের চিন্তা বাদ দিন, বরং মনোযোগ দিন নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে। খুব সাধারণ এই চর্চাটিও প্রশান্তি এনে দেবে আপনাকে।
Posted ১২:২৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৮ জুন ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta