কক্সবাংলা ডটকম(১২ জুলাই) :: তুন ভ্যাট আইন কার্যকর না হলেও ১১ অংকের বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (বিআইএন) ও নতুন করে অনলাইনে নেয়া ই-বিআইএন উভয় পদ্ধতিতে ভ্যাট আহরণের কথা জানিয়েছিল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে প্রযুক্তিগত জটিলতার কারণে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে এনবিআর। পুরনো পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ায় চলতি অর্থবছর ভ্যাটের লক্ষ্য অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
এনবিআর বলছে, ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের পুরো প্রক্রিয়াটি ভ্যাটের হার অভিন্ন ধরে সংযুক্ত করায় তাতে ভিন্ন ভিন্ন হারে ভ্যাট আদায় সম্ভব নয়। আগের আইন অনুযায়ী ব্যবসায়ীদের হিসাব সংরক্ষণ পদ্ধতিও অত্যন্ত জটিল হওয়ায় তা অনলাইনের সঙ্গে যুক্ত করা কঠিন। এমতাবস্থায় শুধু সনাতনী পদ্ধতিতে ভ্যাট আহরণ করবে এনবিআর। তবে কেউ চাইলে নতুন করে নেয়া ই-বিআইএনের মাধ্যমেও ভ্যাট পরিশোধ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে সব কাজও করতে পারবেন করদাতা।
এনবিআরের ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের পরিচালক ও সদস্য (ভ্যাট প্রশাসন) মো. রেজাউল হাসান বলেন, ই-বিআইএন স্থগিত করার সংবাদটি সঠিক নয়। তবে নতুন আইন কার্যকর না হওয়ায় অনলাইনে ভ্যাট পরিশোধে কোনো প্রতিষ্ঠানকে বাধ্য করা হবে না। সনাতনী ও অনলাইন উভয় পদ্ধতিতে ভ্যাট আদায়ে এনবিআর প্রস্তুত রয়েছে। এনবিআর মূলত প্রচলিত পদ্ধতিতে ভ্যাট আদায় করবে। তবে কেউ চাইলে অনলাইনেও তা পরিশোধ করতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধনে ৯ সংখ্যা বা ১১ সংখ্যা কোনো বিষয় নয়। ব্যবসায়ীরা এখন যেকোনো পদ্ধতিতে নিবন্ধন নিতে পারবেন। তবে মাঠপর্যায়ের অফিসগুলো নতুন নিবন্ধন ইস্যুর ক্ষেত্রে ১৯৯১ সালের ভ্যাট আইন/বিধির আলোকে আগের সনাতনী পদ্ধতি অনুসরণ করবে।
ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পে বিদ্যমান নিবন্ধন মডিউলটি ১৯৯১-এর আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংস্কার করে সে অনুযায়ী চালুর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সংস্কারকাজটি শেষ হলেই অনলাইন পদ্ধতি পুরোপুরিভাবে চালু হবে। এ বিষয়ে শিগগিরই একটি নির্দেশনা জারি হবে।
নতুন অর্থবছরের জন্য ভ্যাট থেকে ৯১ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা, অর্থাৎ অংকের হিসাবে বাজেটের প্রায় এক-চতুর্থাংশ রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরের ভ্যাট আদায়ের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে ৩৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে নতুন বাজেটে ওই লক্ষ্য ঠিক করেছিল এনবিআর।
সংস্থাটির পরিকল্পনা ছিল, ২০১২ সালের ভ্যাট আইন ১ জুলাই থেকেই কার্যকর হবে এবং তার ফলে পণ্য বিক্রি ও সেবায় অভিন্ন হারে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আদায় করে লক্ষ্য পূরণ সম্ভব হবে। শেষ মুহূর্তে এসে আগের আইন বহাল থাকায় ভ্যাট আদায়ে সনাতনী পদ্ধতির সঙ্গে অনলাইনও কার্যকর করে অতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রা পূরণের কথা জানিয়েছিল এনবিআর।
নতুন অনলাইন পদ্ধতিতে নিবন্ধন নেয়া ৫৫ হাজার ও সনাতনী নিবন্ধনকৃতসহ মোট ৭০ হাজার প্রতিষ্ঠান থেকে চলতি বছর ভ্যাট আহরণের কথাও জানিয়েছে সংস্থাটি। তবে প্রক্রিয়াগত জটিলতায় অনলাইনের পরিবর্তে এখন সনাতনী পদ্ধতিতেই ভ্যাট আহরণ করবে তারা। এতে ভ্যাটের লক্ষ্য পূরণ কঠিন হবে বলে মনে করছেন রাজস্ব কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতি বছরই শেষ মুহূর্তে এসে লক্ষ্যমাত্রা কমানো হয়। নতুন আইন ও পদ্ধতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রা অনেক বেশি কমানো হবে। সনাতনী পদ্ধতিতে ভ্যাট আদায় করায় এনবিআরের এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রমও খুব একটা কাজে দেবে না।
Posted ১:৫৪ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১২ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta