কক্সবাংলা রিপোর্ট(২২ মে) :: কক্সবাজারের মহেশখালীতে বাস্তবায়নাধীন মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন দুদকের মামলায় গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি মহেশখালীর মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের ২০ কোটি টাকা দুর্নীতি মামলার অন্যতম আসামি। এর আগে কক্সবাজারের সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ জাফর আলমকে গত ১০ মে ঢাকায় আটক করে দুদক।এ মামলায় এনিয়ে ৫জন আসামিকে গ্রেফতার করা হল।
কক্সবাজার আদালত সূত্রে জানা যায়,চার সপ্তাহের জামিন শেষে কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন ২২ মে দুপুর ১২টায় কক্সবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আত্মসর্ম্পন করতে গেলে মহামান্য বিচারক তৌফিক আজিজ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।গতকাল ২১ মে রবিবার উচ্চ আদালতের দেয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হয়।
এদিন দুদকের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি এডভোকেট মোঃ আব্দুর রহিম ও এডভোকেট মোঃ সিরাজ উল্লাহ।
প্রসঙ্গত ২০১৪ সালের ৭ডিসেম্বর সাবেক ভূমি হুকুম দখল কর্মকর্তা এম এম মাহমুদুর রহমান কক্সবাজার সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং-১৯।আর ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল মামলার চার্জসীট দাখিল করেন দুদকের চট্টগ্রাম উপ-পরিচালক সৈয়দ আহমেদ।
এর আগে কক্সবাজারের সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ জাফর আলম গত ১০ মে ঢাকায় এবং কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের এলএ শাখার সাবেক উচ্চমান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদার, অ্যাডভোকেট নুর মোহাম্মদ সিকদার ও কক্সবাজার রাজস্ব বিভাগের সাবেক সার্ভেয়ার ফখরুল ইসলামকে গত ৩ এপ্রিল দুদক টিম গ্রেফতার করে।
এ ব্যাপারে এডভোকেট আবদুর রহিম কক্সবাংলাকে জানান,মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা জমির বিপরীতে ভূয়া মালিকানা তৈরি করে ক্ষতিপূরণের প্রায় ২০ কোটি টাকা আত্মসাত করেন মামলার আসামিরা।
এ ঘটনায় মাতারবাড়ির কায়সার চৌধুরী বাদী হয়ে কক্সবাজারের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন, এডিসি জাফরসহ ২৩ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলা জজ আদালতে মামলা করেন।
আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য দুদককে দায়িত্ব দেয়। দুদক উক্ত মামলার তদন্তের কাজ শেষ করে গত ৩ মে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে।
এতে কক্সবাজারের তৎকালীন জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জাফর আলম, সার্ভেয়ার, কানুনগোসহ ১৩ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ২৩ জন স্থানীয় বাসিন্দাসহ ৩৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের উপ-পরিচালক সৈয়দ আহমেদ রাসেল।
তিনি বলেন,মহেশখালীর কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায় অধিগ্রহণ করা জমির বিপরীতে ২৩৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়। এর মাঝে ২৫টি অস্তিত্বহীন চিংড়ি ঘের দেখিয়ে ৪৬ কোটি ২৪ লাখ ৩ হাজার ৩২০ টাকা ক্ষতিপূরণ নিজেদের করায়ত্তে নেয় এবং কক্সবাজার ভূমি অধিগ্রহণ শাখার উচ্চমান সহকারী আবুল কাশেম মজুমদারের নেতৃত্বে ৩৬ জনের একটি সিন্ডিকেট। উক্ত অর্থ থেকে এ সিন্ডিকেট কৌশলে ১৯ কোটি ৮২ লাখ ৮ হাজার ৩১৫ টাকা তুলে নেয়। বাকী টাকার জন্য ইস্যু করা হয়েছিল আরও পাঁচটি চেক। তবে মামলা করার পর পাঁচটি চেকের আওতায় নির্ধারিত ক্ষতিপূরণের বাকী টাকা আটকে দেয়া হয়।
Posted ৩:০০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২২ মে ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta