কক্সবাংলা ডটকম(৫ এপ্রিল) :: স্ট্যাটাস পড়ে একটা জিনিস নিশ্চিত হওয়া গেল, কোনও ফোন রেকর্ডই ফেইক না। সবই আসল! মামুনুল হকের ফোন রেকর্ড টাও আসল, তার বোনের রেকর্ডও আসল। কেননা, এ বিষয়ে মামুনুল হক টু শব্দটিও করেন নি।
মামুনুলের প্রথম স্ত্রী জানেই না তার হাজব্যান্ড দুইবছর আগে বিয়ে করেছেন। তিনি জেনেছেন- ফেসবুকে লাইভ ভিডিও দেখে। এ কেমন মানবিক বিয়ের গল্পরে ভাই? আরেকজনের ডিভোর্স হওয়া বৌ-কে মানবতা দেখালেন, অথচ নিজের স্ত্রীকে মানবতা দেখালেন না?
মামুনুল মাঠে ময়দানে যেভাবে মানুষকে নসিহত করছেন ও শিক্ষা দিচ্ছেন, কিন্তু নিজের মধ্যে ওইসব আমল না থাকায় পথভ্রষ্ট হয়েছেন, অন্যদেরও পথভ্রষ্ট করেছেন এবং দ্বীন ইসলামকে অন্য ধর্মের লোকদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন!
মামুনুল হক দ্বিতীয় বিয়ে করতেই পারেন, এজন্য হয়তো প্রথম স্ত্রীর অনুমতি লাগে না। সবই ঠিক আছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিয়ে করার পর প্রথম বৌ তো জানার অধিকার রাখেন – নাকি? মামুনুল হকের স্ট্যাটাস অনুযায়ী এরমাঝে দুইবছর পার হয়ে গেছে। তো, এই দুইবছরে উনি উনার প্রথমে স্ত্রীকে জানানোর প্রয়োজন মনে করেন নি?
উনার বোন জানেন,ভাগ্নে জানেন, দলের নেতাকর্মী জানেন, ফেসবুকে ডিফেন্ড করতে আসা সব অন্ধ পোলাপানও নাকি জানেন মামুনুল বিবাহিত! শুধু বৌ জানেন না? মারাত্মক মানবতার বিয়ের গল্প ভাই!
মামুনুল হক যখন তার স্ত্রীকে ঘটনা ফোনে বলেন – সেখানেও বলেন নাই যে মেয়েটাকে সে বিয়ে করেছে! বরং মামুনুল বলেছেন- সে শহীদুল ভাইয়ের স্ত্রী! আই রিপিট – শহীদুল ভাইয়ের স্ত্রী। ঠিক এই কথাটা বলেছেন। এরপর স্ত্রীকে বললেন কেউ যদি তার কাছে কিছু জানতে চান, তাহলে সে যাতে বলে সব জানেন।
কেন? কেন বলবেন তিনি সব জানেন? হুজুর লেবাসধারী মামুনুল কেন তার স্ত্রীকে মিথ্যা বলার ছবক দিলেন? মিথ্যা বলা তো মহাপাপ! হুজুর তার স্ত্রীকে মহাপাপ করতে বলছেন, এটা কেমন কথা?
যে লোক নিজের লুচ্চামির মত ঘৃনিত পাপকাজ ঢাকতে স্ত্রীকে মিথ্যা কথা বলার জন্য প্ররোচিত করতে পারেন, তিনি হেফাজতে ইসলামীতে নিজের অস্তিত্ব ধরে রাখতে মানবিক বিয়ের গল্পের নামে মিথ্যা গল্প বানাননি তার নিশ্চয়তা কি?
দেখেন, মামুনুল হক তার নিজের ব্যক্তিগত জীবনে কি করবেন বা করবেন না- এটা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তিনি যদি মনে করেন, তিনি আরেকটা বিয়ে করে প্রথম স্ত্রীকে কিছুই জানাবেন না এটাও তার একান্ত ব্যাপার এবং তার স্ত্রীর ব্যক্তিগত ব্যাপার। এটা নিয়ে কথা বলার কিছু নাই!
কিন্তু উপরে এতোগুলো কথা বলা হল এ কারণেই যে, মানুষজন মামুনুলকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে ইসলাম ধর্মকে টেনে এনেছেন। ইসলামে এসবের কোন জায়গা নেই।
আপনি যদি হেফাজত কর্মী হোন, অথবা হেফাজত সমর্থক হোন অথবা মামুনুল হকের ভক্ত হোন; তার এই অসময়ে আপনি তাকে ডিফেন্ড করবেন, নানা যুক্তি দিবেন তার পক্ষে- এটা এই দুষ্টগ্রস্ত সমাজে অস্বাভাবিক নয়। তাতেও কোনও সমস্যা নেই। আপনি আপনার নেতার পাশে দাঁড়াবেন খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু মাঝখান থেকে কোরআনের আয়াত, হাদীসের বয়ান- এইসব ব্যবহার করার মানে কি?
মামুনুল হক মানেই ইসলাম না; হেফাজত মানেই ইসলামের ধারক বাহক না। তারা পলিটিশিয়ান! পলিটিক্স করতে গেলে অনেক কাহিনী থাকবে এটাও স্বাভাবিক। এরচেয়ে বড় কথা- এরা সবাই মানুষ। মানুষ মাত্রই ভুল করে, মানুষ মাত্রই তার জীবনের অন্ধকার দিক থাকে। সেটা আমি আপনি সবাই। কেউই ধোয়া তুলসী পাতা নই। সবার মধ্যেই ভেজাল আছে। কিন্তু ‘ইসলাম’ ধর্মে কোনও ভেজাল নেই। আপনি যখন ভেজাল মানুষকে
ইসলাম দিয়ে ডিফেন্ড করতে যাবেন তখন আপনি ইসলামকেও ভেজাল বানাচ্ছেন। কিসের জন্য, কার জন্য? কুরআনের সূরা বাকারাতে একটা আয়াত আছে বনী ঈসরাইলকে উদ্দেশ্যে করে
“তোমরা আমার আয়াতকে স্বল্প মূল্যে বিক্রি করে দিও না।”
তবে এই আয়াতের তাফসির অনেক তাৎপর্য পূর্ণ। আপনি দুনিয়ার কোন কাজেই, যেকোন পার্থিব স্বার্থে কুরআনের আয়াত ব্যবহার করতে পারেন না।
আপনি আপনার নেতাকে ডিফেন্ড করে চান যেভাবে ইচ্ছা করুন। তাকে ডিফেন্ড করার অসংখ্য যুক্তি আছে। কিন্তু, ইসলাম ধর্মকে টানবেন না। কুরআনের আয়াত ও হাদীস এসব নেতাকে বাঁচাতে গিয়ে বিক্রি করে দিবেন না।
লেখক : কুদ্দুস আফ্রাদ
Posted ১:০৩ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৬ এপ্রিল ২০২১
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta