কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৭ আগস্ট) :: কক্সবাজার জেলার সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইনে গত বৃহস্পতিবার রাতে একসঙ্গে ৩০টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর আরাকান রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় এ পর্যন্ত ১০০ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ১২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।বাকী নিহতরা রোহিঙ্গা বলে জানা গেছে।
এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে অসংখ্য রোহিঙ্গা। এরমধ্যে গুলিবিদ্ধ ১১ জনকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে উখিয়ার কুতুপালং সহ অন্যান্য রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এমএসএফ হাসপাতাল সহ এনজিও পরিচালিত অন্যান্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে।
জানা যায়,শনিবার ভোর রাতে মিয়ানমার থেকে আসা গুলিবিদ্ধ চারজন রোহিঙ্গাকে কে বা কারা কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছিল। তাদের মধ্যে মুছা(২২) নামে একজন শনিবার সকালে মারা যান।
এরপর শনিবার গভীর রাতেই উখিয়ার কুতুপালং থেকে গুরুতর আহত আরও তিন রোহিঙ্গাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে নিয়ে আসা হয় বলে মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন জানিয়েছেন।
বর্তমানে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬ রোহিঙ্গা হলেন- মোক্তার হোসেন, শামসুর ইসলাম ও মো. ইদ্রিস, জেয়াবুল হক, ইলিয়াস ও মোহাম্মদ তোহা।
গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাত তিনটার দিকে লাইল্লাতলী পুলিশ ক্যাম্প এলাকায় তারা গুলিবিদ্ধ হন। পরে শুক্রবার দিনগত রাত ২টার দিকে নৌপথে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর শনিবার চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
প্রসঙ্গত বিচ্ছিন্নতাবাদী রোহিঙ্গা মুসলিমদের সঙ্গে মায়ানমারের মানুষদের লড়াই বহু দশকের। ব্রিটিশদের সময় থেকেই এই সংঘর্ষ চললেও ব্রিটিশ পরবর্তী যুগে এর সূত্রপাত হয় মূলত ধর্মীয় কারণে মায়ানমারের রোহিঙ্গা প্রদেশকে মায়ানমার থেকে আলাদা করার দাবির জন্য। রোহিঙ্গা মুসলিমরা ভারত ভাঙ্গার কায়েদাতেই মায়ানমারকেও ধর্মের অজুহাতে ভাঙতে চেয়েছিল। এমনকি ভারত ভাঙ্গার কারিগর মহঃ আলি জিন্নাহকেও তারা চিঠি লিখে জানিয়েছিল যে তারা মুসলিম দেশ পাকিস্তানের সঙ্গেও যুক্ত হতে চায়ে। পরবর্তীকালে ভিনধর্মী মুক্ত রাখাইন প্রদেশ তৈরির জন্য বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার শুরু করে রোহিঙ্গা উগ্রপন্থিরা। ঐ অঞ্চলের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের ওদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠার পর মায়ানমার সরকার ১৯৮২ সালে ওদের নাগরিকত্বই কেরে নেয়। তখন থেকেই বিচ্ছিন্নতা কামী এই রোহিঙ্গা মুসলিমরা রাষ্ট্রহীন একটি মানব গোষ্ঠী।
Posted ১:৫০ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৮ আগস্ট ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta