কক্সবাংলা ডটকম(২৮ জুন) :: বাংলাদেশের মানবপাচার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। মার্কিন সরকারের মানবপাচার সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ তালিকায় ‘ট্র্যাফিকিং ইন পারসন’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ি গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান এক ধাপ নেমে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভিক্টিমস অব ট্র্যাফিকিং অ্যান্ড ভায়োলেন্স প্রোটেকশন অ্যাক্ট’ অনুযায়ী দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মানবপাচার বিষয়ে সচেতনা বৃদ্ধির জন্য প্রতি বছর পাঁচটি ধাপে টিআইপি প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। প্রতিবেদনটি মানবপাচার বিষয় মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশের উদ্যোগ ও সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর ১৮৮টি দেশকে র্যাংকিং করে থাকে।
পাচারের শিকারদের রক্ষার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণকারী দেশগুলো স্থান পায় প্রথম ধাপে (টায়ার ওয়ান)। পাচার রোধে সমস্ত উদ্যোগ না নিতে পারলেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে উদ্যোগ গ্রহণকারীদের স্থান হয় দ্বিতীয় ধাপে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ওই দ্বিতীয় ধাপে।
তবে ২০১৬ সালে এসে বাংলাদেশের অবস্থান নেমে গেছে। টায়ার টু থেকে তারা টায়ার টু’র পর্যবেক্ষণ তালিকায় স্থান পেয়েছে। মার্কিন সরকারের বিধান অনুযায়ী, যেসব দেশ মানদণ্ড অর্জনের চেষ্টা করছে কিন্তু কার্যকর ক্ষেত্রে তার পর্যাপ্ত প্রমাণ রাখতে ব্যর্থ হয় তারা এই তালিকায় স্থান পায়। এইসব দেশে উল্লেখযোগ্য হারে পাচারের শিকার মানুষ ও বিভিন্ন ধরনের মানব পাচারের অস্তিত্ব থাকে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের অবস্থান এই পর্যবেক্ষণ তালিকায় নেমে এসেছে।
বাংলাদেশের অবস্থান নেমে যাওয়ার যুক্তি হিসেবে ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে যৌন ও শ্রম ক্ষেত্রে মানব পাচার বিষয়ে তদন্তের পরিমাণ কমে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের দাবি, মানব পাচার রোধে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে না বাংলাদেশ। আগের বছরের তুলনায় পাচারের সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, মানবপাচার প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করলেও, বিদেশগামী শ্রমিকদের ওপর ধার্য করা ফি বিষয়ে বাংলাদেশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সরকার বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজকে ক্রমাগতভাবে বিদেশগামী শ্রমিকদের ওপর উচ্চ হারে ফি ধার্য করার সুযোগ দিচ্ছে, যা শ্রমিকদের দারিদ্র ও পাচারের ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী রেক্স টিলারসন এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্বে ২ কোটি মানুষ পাচারের শিকার। এটি জননিরাপত্তা ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। মানব পাচার রোধে সবগুলো দেশকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।