কক্সবাংলা ডটকম(২৪ মে) :: যুক্তরাষ্ট্রে সাধারণত অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসা অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে যতটা ভাবা হচ্ছে, ততটাই নজরের বাইরে থেকে যাচ্ছে ভিসা অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়া অভিবাসীরা। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানিয়েছে, সাত লাখের বেশি বিদেশী, যাদের গত বছর দেশ ত্যাগ করার কথা ছিল, ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরও তারা দেশে রয়ে গেছেন। যদিও তাদের মধ্যে অনেককেই ক্রমান্বয়ে দেশ থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে।
পরিসংখ্যানটি বাইরে থেকে আসা পাঁচ কোটি ভ্রমণকারীর একটা ছোট অংশের প্রতিনিধিত্ব করছে (১ দশমিক ৫ শতাংশ), যাদের ভিসা গত অর্থবছরে শেষ হয়ে গেছে। একটি বিশাল অংশ যথাসময়ে দেশ ত্যাগ করার পরেও একটি বিষয় স্পষ্ট যে, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে রয়ে যাচ্ছেন, যারা বৈধ কাগজ নিয়েই প্রবেশ করেছিলেন।
অবৈধভাবে বসবাসকারীদের বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানান, দেশের ১ কোটি ১০ লাখ কাজপত্রহীন বিদেশীর মধ্যে ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ ভিসার সময়সীমা অতিক্রম করার পরও বসবাস করছেন। অবৈধ অভিবাসীদের সংখ্যাগরিষ্ঠই আইনগতভাবে আসেন কিন্তু ফিরে যাওয়ার সময়সীমা পার হয়ে গেলেও দেশত্যাগ করেন না।
বিদেশীদের নজরদারিতে রাখতে কংগ্রেস দীর্ঘদিন ধরেই প্রবেশ ও দেশত্যাগের ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহারের সুপারিশ করে আসছে। কিন্তু কোনো প্রশাসনই এর বাস্তবায়ন ঘটায়নি। এ ব্যবস্থার যারা সুপারিশ করছেন, তারা উল্লেখ করেন, যেসব সন্ত্রাসী ২০০১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা বৈধভাবেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিল এবং ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পরও দেশে রয়ে গিয়েছিল।
গত বছর প্রথমবারের মতো ওবামা প্রশাসন যথেষ্ট পরিমাণ উপাত্ত সংগ্রহ করার পরিপ্রেক্ষিতে মেয়াদোত্তীর্ণদের নিয়ে প্রথম একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে সক্ষম হয়। ২০১৫ অর্থবছরের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০১৫ সালে দেশত্যাগের কথা ছিল এমন ৫ লাখ ২৭ হাজার ১২৭ জন ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণের পরও দেশে রয়ে গেছেন।
এ বিষয়ে সোমবার কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, তাদের মধ্যে মাত্র ৩ লাখ ৪০ হাজার জন এখনো দেশে রয়ে গেছেন। ২০১৬ অর্থবছরের উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে সোমবারের প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে।
বর্তমানে বায়েমেট্রিক ব্যবস্থায় কেবল ব্যক্তিদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। দেশত্যাগের তথ্য উড়োজাহাজ ও জাহাজ থেকে সংগ্রহ করা হয়। উড়োজাহাজ ও সমুদ্র পথে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগের ক্ষেত্রে দেশটিতে বসবাসের সময় ভ্রমণকারী নতুন কোনো অভিবাসী মর্যাদা পেয়েছেন কিনা, তা অন্যান্য তথ্যকেন্দ্রের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা বাধ্যতামূলক। এদিকে স্থল পারাপারের তথ্য সাধারণত আমলে আনা হয় না। যদিও আগমনের ক্ষেত্রে পন্থাটি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এছাড়া আকাশপথে দেশত্যাগের ক্ষেত্রে চেহারা শনাক্তের সফটওয়্যারটি এখনো পরীক্ষাধীন রয়েছে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ চলতি বছরের প্রথম দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশ অনুসারে একটি বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা সম্পন্ন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে, যেখানে সব আগমনকারীর তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া আগামী কয়েক মাসের মধ্যে অতিরিক্ত সাতটি বিমানবন্দরে বায়োমেট্রিক প্রস্থান কর্মসূচি সম্প্রসারণ করার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।
সূত্র : ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল
Posted ৭:৩৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৪ মে ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta