বিশেষ প্রতিবেদক(২৯ মে) :: রোজার শুরুতেই বেসামাল হয়ে পড়ছে শহরের বাজার ব্যবস্থা। রমজান কেন্দ্রীক নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যে যার মতো করে বিক্রি করছে । কোন দোকানের সাথে কারো মিল নেই। কিছু দোকানে ছোলা ৮৫ টাকা আর কোন দোকানে এই ছোলার দাম ১০০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে প্রত্যক দোকানে মূল্য তালিকা টাঙ্গানো নিয়ম থাকলেও এই নিয়ম অনেকই মানেনি।
ইচ্ছে মতো বিক্রি করে ক্রেতা ঠকানোর ফঁন্দি ঘেড়ে বসেছে অনেক আসাধু ব্যবসায়ী। মাছ মাংসের দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি। গুরুর মাংস বিক্রির আগে জবকৃত গুরুতে পৌরসভা কর্তৃক সীলমোহর থাকার কথা থাকলেও বেশ কিছু মাংস বিক্রিতাকে এইসব মানতে দেখা যায়নি।
অনেকই আবার ৫০০ টাকার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে। কাঁচা বাজারেরও একই অবস্থা। প্রত্যক জিনিসের দাম বেশি। তবে এক এক বাজারে এক এক দাম। ইফতার বাজারে নানা চটকদার রং মিশিয়ে বিক্রি হচ্ছে নানা জাতের ইফতার সামগ্রী। সেখানে কতটাই বা স্বাস্থ্যসম্মত সেইটার ও দেখার বিষয় রয়েছে। শহরের ফুটপাতে বসেই অহরহ বিক্রি হচ্ছে এই খবার গুলো।
কক্সবাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য ক্রমশ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এ ঊর্দ্ধগতির ফলে মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবার গুলোর জীবন দূর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারি হাজার হাজার মানুষ পড়ছে চরম বিপাকে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার কিছুদিন স্থিতিশীল থাকার পর আবারও অস্থির হয়ে উঠেছে। রমজানের শুরুতে নিত্যপণ্যের অস্থির বাজারে হতাশ জেলাবাসী। একই সাথে এক শ্রেনীর আসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় যে যারমতো বিভিন্ন খাদ্যপন্য গুদামজাত ব্যস্থ হয়ে পড়েছে।
বিশেষ করে কক্সবাজার শহরের বাজার ও দোকানিরা এইসব মালামাল মজুদ করেছে বলে জানাগেছে। প্রতি বছর এই ব্যবসায়ীরা এইভাবে গুদামজাত করে সুবিধা পায় বলে এটি তাদেরকে কাছে অনেক সহজ হয়েছে ওঠছে। অতিরিক্ত মালামাল মজুত করলেও প্রশাসনের তরফ থেকে তেমন কোন অভিযান না থাকায় এটিকে তোয়াক্কা করছে না তারা।
কক্সবাজার শহরের বাজার ঘাটা এলাকার খুচরা বিক্রেতারা জানান, পাইকারী বাজারে দ্রব্যের মূল্য উচ্চহারে বৃদ্ধি পেয়েছে যার কারনে বেশি মূল্য দিয়ে মালামাল ক্রয় করতে হচ্ছে। এ জন্য বাজারে কাঁচামাল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ বাজার মনিটরিং না করায় বিক্রেতারা তাদের ইচ্ছামত উচ্চমূল্যে পণ্য বিক্রি করছে। রমজানের শুরুতে এখনই বাজারদর চড়া হতে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে ইফতার সামগ্রী প্রস্তুতিতে ব্যবহার্য পেয়াজ, কাঁচামরিচ, বেগুন, বেসনের দাম হঠাৎ করে ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়াও দাম বৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে কলা, খেজুর ও ছোলার দাম। রমজানে দ্রব্যমূল্য কোথায় গিয়ে ঠেকবে সে কথা ভেবে মানুষ দিশেহারা। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে খোজঁখবর নিয়ে দেখা যায়, চাউলের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। তবে চালের দাম গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। বেশ কিছু দিন থেকে চালের দাম বৃদ্ধি হলেও এই পর্যন্ত কোন ধরণের তেমন প্রশাসনের তরফ থেকে কমানোর আস্বাস না থাকায় অনেক ক্রেতারা অসন্তুস প্রকাশ করেন।
তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা বেড়েছে ভোজ্য তেলের মূল্য। এছাড়াও দাম বৃদ্ধিতে বিক্রি হচ্ছে রসুন, আদা, পেঁয়াজ, বিভিন্ন প্রকার কাঁচামাল। এক সপ্তাহে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মধ্যে ১০/১২ টি নিত্য পণ্যের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কাছে যেন জিম্মি হয়ে পড়েছে গোটা জনগোষ্ঠি।
ক্রেতাদের অভিযোগ, প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী রমজানে মালামাল উচ্চমূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে তাদের আড়তে বিভিন্ন প্রকার মালামাল মজুদ করেছে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট সৃষ্টি করে নিজেদের খেয়াল-খুশি মত জিনিস পত্রের দাম বাড়িয়ে মুনাফার নামে ‘লুটতরাজ’ করছে। এদিকে দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে ভোক্তা সাধারণ। তাদের অভিযোগ দিনে দিনে যেভাবে সব কিছুর দাম বাড়ছে তাতে উপার্জনের টাকা দিয়ে সংসার চাকা ঘুরানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। এই বিষয়ে কক্সবাজার জেলা বাজার মনিটরিং কর্মকর্তা শাহজান আলীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, নিয়মিত বাজার পরিদর্শন হবে। কোন ব্যবসায়ী অনিয়ম করলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
Posted ৭:৪০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৯ মে ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta