কক্সবাংলা ডটকম(১০ অক্টোবর) :: জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের দিনক্ষণ নিয়ে শেষ পর্যন্ত একমত হতে ব্যর্থ হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। নানা পথ আর মতের সন্ধান দিলেও অভিন্ন পথের দিকে যেতে পারেনি তারা। আইনি মারপ্যাঁচ, আদর্শগত বিভেদ আর ইগোর কারণে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি বলে মূল্যায়ন করেছেন আলোচনায় অংশ নেওয়া বিভিন্ন দলের নেতারা।
ঠিক এক বছর আলোচনা করে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে শেষপর্যন্ত একমত হতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষ হয়েছে কোনো সমাধান ছাড়াই। জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের সময় ও পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক মতবিরোধ রেখেই দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষত বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অনড় অবস্থানের মুখে ঐকমত্য কমিশন বলেছে, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত সমন্বয় করে আগামী দু-এক দিনের মধ্যে কমিশন সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ দেবে।
১৫ থেকে সর্বোচ্চ ১৭ অক্টোবরের মধ্যে জুলাই সনদে স্বাক্ষর হবে বলে কমিশন আশা করছে।
গত বুধবার বেলা ৩টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দলগুলোর সঙ্গে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে শেষ দিনের আলোচনা শুরু হয়। আলোচনা শেষ হয় রাত ১১টার পর।
শেষ দিনের আলোচনায় দলগুলোকে মোটাদাগে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়তে দেখা গেছে। বিএনপিসহ কিছু দল জাতীয় নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোটের পক্ষে অনড় থাকে।
আর জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ কিছু দল জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের পক্ষে অবস্থান নেয়। গণভোটের প্রশ্ন কী থাকবে, ভিন্নমত থাকা প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে- এসব প্রশ্নেও সুরাহা হয়নি। ছয়টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ।
এর খসড়া চূড়ান্ত হলেও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্য হয়নি। এ কারণে আটকে আছে জুলাই সনদ। ফলে, দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধ, বাংলাদেশের রাজনীতিকে আবারও এক অনিশ্চয়তার মোড়ে দাঁড় করিয়েছে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ সেই নির্বাচনকে ক্রমশ অনিশ্চিত করে তুলেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। জুলাই সনদ নিয়ে অচলাবস্থা ছাড়াও বেশ কিছু ঘটনা গণতন্ত্রের উত্তরণে বাধা সৃষ্টি করছে বলেই অনেকে মনে করছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা অস্থিরতা, নতুন নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতীক জটিলতা, সারা দেশে ক্রমবর্ধমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং আগামী নির্বাচন নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের নানামুখী তৎপরতা নির্বাচনের পথকে আরও কঠিন করে তুলছে।
এ মুহূর্তে দেশের প্রশাসন যেভাবে নড়বড়ে অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে, তাতে নির্ধারিত সময়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করা সরকারের জন্য এক কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেই মন্ত্রণালয় বেশ কদিন সচিববিহীন। এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা।
সারা দেশে নির্বাচনের জন্য মাঠ প্রশাসন সাজানো, ফিট লিস্ট তৈরি- এসব কাজ এখনো শুরুই হয়নি। অথচ নির্বাচনের আছে মাত্র চার মাস। মাঠ প্রশাসনে চলছে আতঙ্ক এবং অস্থিরতা।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে স্পষ্ট অবস্থান নিচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ উভয়ই বলেছে, ‘একটি অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনই টেকসই গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত।’ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অর্থ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
কেউ কেউ মনে করছেন, এরকম বক্তব্যের মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত পতিত স্বৈরাচারকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি তিনটি নরডিক দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতার বৈঠক রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। সরকারের একটি মহল পরিশুদ্ধ আওয়ামী লীগ তৈরির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। এই নিয়ে বাড়ছে অবিশ্বাস, সন্দেহ। জুলাই আন্দোলনের শক্তিগুলো এখন একে অপরের বিরুদ্ধে সমালোচনায় মুখর।
এ পরিস্থিতিতে দেশে নতুন ধরনের রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে। এটাও নির্বাচনের পথে একটি বড় বাধা। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু সম্প্রতি পরিকল্পিতভাবে সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে চলছে অপপ্রচার এবং গুজব সন্ত্রাস। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থান এলাকাটিতে অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলেছে।
রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক কয়েকটি হত্যাকাণ্ড, অপহরণ ও গোলাগুলির ঘটনা দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে। আরাকান আর্মি বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনের আগে এখানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা গোটা দেশের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
নির্বাচন নিয়ে রহস্যময় আচরণ করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিভিন্ন ইস্যুতে দলটি ঘন ঘন তাদের অবস্থান বদল করছে। যেমন জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট নিয়ে তারা প্রথমে জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটে রাজি ছিল, কিন্তু বুধবার তারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে।
ওইদিন তারা আগে গণভোট দাবি করে। নির্বাচন ও সংগঠনের চেয়ে এনসিপির তরুণরা এখন হুমকি এবং হতাশা প্রকাশ নিয়েই ব্যস্ত। কদিন আগে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সেফ এক্সিট নিয়ে কথা বলে বিতর্ক সৃষ্টি করেন।
আগামী নির্বাচনে এনসিপি বড় ফ্যাক্টর না হলেও তারা নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত হতে পারে। প্রতীক নিয়ে জটিলতার সমাধান না হলে তেমন কিছু করাটা অসম্ভব না। দলের প্রতীক নিয়ে জটিলতা এখন নির্বাচনি রাজনীতির এক নতুন আলোচ্য বিষয়। এনসিপি এখন পর্যন্ত শাপলা প্রতীকে অনড়। এ নিয়ে জটিলতা কমার লক্ষণ নেই।
গত ১৪ মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সারা দেশে চুরি, ছিনতাই, খুন, নারী নির্যাতন, এমনকি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা চোখে পড়ার মতো বেড়েছে। রাজধানী ঢাকাতেই এক সপ্তাহে ঘটে গেছে অন্তত পাঁচটি সংঘবদ্ধ ডাকাতির ঘটনা। গ্রামাঞ্চলে স্থানীয় রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে প্রাণহানি ঘটছে প্রতিদিন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ, আর জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা, প্রার্থীদের প্রচারণা, এমনকি নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনভাবে কাজ করার সক্ষমতা- সবকিছুই চাপে পড়ছে। এসব সংকটের বিপরীতে একটিই আশার আলো, তা হলো জন-আকাঙ্ক্ষা।
একটি উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য দেশের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে তা হবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। জনগণ সেটা মেনে নেবে না। দেশে এখন নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। সবকিছু অচল হয়ে আছে। একটি নির্বাচিত সরকারই পারে এ অচলাবস্থার অবসান।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র একাধিকবার সংকটের মুখোমুখি হয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই জাতি পথ খুঁজে নিয়েছে। এবারও সেই সুযোগ আছে- যদি রাজনৈতিক দলগুলো সংলাপ ও সমঝোতার পথে ফিরে আসে। কিন্তু যদি বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তাহলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন শুধু অনিশ্চিতই নয়, বরং জাতীয় স্থিতিশীলতার জন্য নতুন ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে।
তিন কারণে একমত হয়নি দলগুলো
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের দিনক্ষণ নিয়ে শেষ পর্যন্ত একমত হতে ব্যর্থ হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। নানা পথ আর মতের সন্ধান দিলেও অভিন্ন পথের দিকে যেতে পারেনি তারা। আইনি মারপ্যাঁচ, আদর্শগত বিভেদ আর ইগোর কারণে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি বলে মূল্যায়ন করেছেন আলোচনায় অংশ নেওয়া বিভিন্ন দলের নেতারা।এ অবস্থায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের দিনক্ষণ নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে। অন্যদিকে কমিশন দলগুলোকে এক কাতারে আনতে ব্যর্থ হয়ে এখন দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছে সরকারের ওপর।
সরকারকেই এখন পথ খুঁজতে হবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের। তবে ওই পথে সব রাজনৈতিক দল হাঁটবে কি না সে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি কোনো দলের পক্ষ থেকে। এদিকে আগামী ১৫ অক্টোবর জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ স্বাক্ষরিত হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
সবমিলিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় এখনো কাটেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে কয়েকটি দলের পক্ষ থেকে রাজপথে নামার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোট ইস্যুর বলটি এখন সরকারের কোর্টে বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
আর বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে অন্তর্বর্তী সরকার দুই ধরনের চাপে পড়েছে। প্রথমত-গণভোট আয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোকে এক করা। দ্বিতীয়ত-অন্যথায় রাজপথে আন্দোলনের চাপ।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বুধবার প্রায় মধ্যরাতে শেষ হওয়া সংলাপে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে। ওই বৈঠক শেষে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজন করা যেতে পারে। যারা গণভোট আগে চাচ্ছে তারা আসলে নির্বাচন পেছানোর পাঁয়তারা করছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আগামী মাসেই (নভেম্বর) গণভোট অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া গণভোটের দিনক্ষণ মানবে কি না সে প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেয়নি দলটি।
তারা জানিয়েছে, আমরা এ নিয়ে (সরকারের সিদ্ধান্ত) অপেক্ষা করছি। সামনের দিন বলে দেবে কী করা যায়। এই ইস্যুতে জামায়াতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আলোচনার শেষ দিনে এসে নিজেদের অবস্থানের পরিবর্তন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি আগে নির্বাচনের দিন গণভোটের কথা বললেও এখন জাতীয় নির্বাচনের আগে ওই নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে।
ঐকমত্যে ব্যর্থ হওয়া প্রসঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, কমিশন যদি আরও এক মাস এভাবে আলোচনা করেন, কোনোভাবে আমরা সিদ্ধান্তে আসতে পারব না। রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্ন ভিন্ন মতকে একমত করতে কমিশনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যেভাবে ভিন্নমত দেখলাম। সর্বশেষ দিনে জাতীয় নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদের পক্ষে গণভোট। তারাও দেখলাম যে ইউটার্ন করেছে। তারাও এখন বলছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট।
আমার বাংলা (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, কিছু কিছু শক্তি বা ব্যক্তি আছেন, তারা আসলে বিভেদ চায়, অনৈক্য চায় এবং একটা হাঙ্গামা ও বিপর্যয় চায়। আমাদের এই ইগো সংকটের কারণে মনে হচ্ছে, পরোক্ষভাবে আমরা ওই সীমান্তের ওপারের ইচ্ছাটাকেই প্রাধান্য দিচ্ছি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তি যদি রচনা করতে চাই সেটা তো সেমিলটেনিয়াস ইলেকশনের মধ্যে হতে পারে। এজন্যই তো আমরা আইনগত ভিত্তি মনে করছি এবং জনগণের সম্মতি এটা।
একটা বিশাল নির্বাচনি আয়োজনের মধ্যে যেটা আছি সেরকম আরেকটি আয়োজন যদি তার আগে করি এটা নির্বাচনকে বিলম্বিত করার মতো একটা প্রয়াস হবে বলে আমরা মনে করি। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আমাদের স্ট্যান্ডিং হচ্ছে গণভোট হবে।
এ ব্যাপারে আমরা একমত সবাই। কিন্তু গণভোটটি নভেম্বরের শেষের দিকে যদি করা যায়। কারণ আমাদের কাছে রেকর্ড আছে বাংলাদেশেই ১৯ দিনের ব্যবধানেও গণভোট হয়েছে। এক মাসের ব্যবধানেও গণভোট হয়েছে।
ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে এবং নভেম্বরের ভিতরেই জুলাই সনদের ওপর আমাদের গণভোট হবে। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, এমন প্রক্রিয়ায় যাওয়া ঠিক হবে না, যাতে সংস্কারগুলো ভবিষ্যতে প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে বা বাতিল হয়ে যেতে পারে। সংস্কারকে টেকসই করার দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
তাই জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট হতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট হলে গণভোট গুরুত্ব হারাবে।
১৫ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হবে জুলাই জাতীয় সনদ
এদিকে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫, ১৫ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করবেন। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কার্যালয়ের সভাকক্ষে কমিশনের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়।
সভায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের ৫টি বৈঠকে পাওয়া মতামত বিশ্লেষণ করা হয়। বৈঠকে আশা প্রকাশ করা হয় যে, বিশেষজ্ঞরা এবং রাজনৈতিক দলসমূহ থেকে পাওয়া অভিমতগুলো বিশ্লেষণ করে খুব শিগগিরই বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত সুপারিশ এবং চূড়ান্ত করা জুলাই সনদ সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।