বৃহস্পতিবার ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২৩শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রোহিঙ্গা ইস্যুতে কৌশল বদলাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি ২০১৮
333 ভিউ
রোহিঙ্গা ইস্যুতে কৌশল বদলাচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী

কক্সবাংলা ডটকম(১১ জানুয়ারী) :: গত বছরের আগস্টের পর থেকেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়ন, ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে। কিন্তু বুধবার দেশটির সেনাপ্রধান ১০ রোহিঙ্গাকে সেনাবাহিনী হত্যা করেছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

দীর্ঘদিন অস্বীকারের পর রোহিঙ্গাদের হত্যার এই স্বীকারোক্তিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কৌশল বদল হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে এই কৌশল নেওয়া হতে পারে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি’র এক প্রতিবেদনে এমনটাই উঠে এসেছে।

গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালায় আরসা সদস্যরা। জবাবে ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চলে অভিযান জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। স্থানীয় বৌদ্ধদের সহায়তায় সেখানে বহু বাসিন্দাকে হত্যা ও ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

ত্রাণ সংস্থাগুলোর হিসাবে এই পর্যন্ত অভিযানের কারণে প্রতিবেশি বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক। জাতিসংঘ ওই অভিযানকে জাতিগত নিধনের পাঠ্যপুস্তকীয় অভিযান বলে মন্তব্য করে।

আগস্টের অভিযানের পর থেকেই সেনাবাহিনী নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞের বিষয় অস্বীকার করে আসছে। উল্টো রাখাইনে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। জাতিসংঘসহ সমালোচনাকারীদের রোহিঙ্গাদের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে এবং রোহিঙ্গা নির্যাতনের ‘ভুয়া খবর’ ছড়াচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে দেশটি। এরপর ডিসেম্বরে নিজেদের এক অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে রাখাইনে হত্যা আর ধর্ষণের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

এরপর গত বুধবার নিজের ফেসবুক পাতায় দেশটির সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইয়াং জানান, ২০১৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর ১০ রোহিঙ্গাকে হত্যার ঘটনায় চার সেনা সদস্য জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছেন তারা। এক পোস্টে তিনি জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর চার সদস্য ইন দীন গ্রামে ১০ ‘রোহিঙ্গা বিদ্রোহী’কে হত্যায় সহযোগিতা করেছিলেন। হত্যার পর তড়িঘড়ি তাদের মৃতদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়।

সেনাপ্রধান জানান, এই ঘটনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানায়নি ওই সেনাসদস্যরা।

মিয়ানমারের সেনাপ্রধান

মিয়ানমার সেনাপ্রধানের নজিরবিহীন এই স্বীকারোক্তির পর মানবাধিকার সংগঠনগুলো নড়েচড়ে বসেছে। তারা মিয়ানমারে ঘটে যাওয়া নিপীড়ন ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলোকে পুনরায় একসূত্রে গাঁথতে শুরু করেছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণপূর্ব এশিয়া-প্যাসিফিকের আঞ্চলিক পরিচালক জেমস গোমেজ বলেন,  সেনাবাহিনীর সবকিছু অস্বীকার করার নীতি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দেয় এই ভয়াবহ স্বীকারোক্তি। তবে এটা শুধু বিশাল বরফখণ্ডের মাত্র একটা খণ্ড। অন্য অভিযোগ গুলোর বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত হওয়া উচিত।

সেনাবাহিনীর এই স্বীকারোক্তিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রদূত স্কট মার্সিয়েল জানান, যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছ থেকে আরও বেশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রত্যাশা করে।

কয়েকজন পর্যবেক্ষক বলছেন, ইন দীন ও আশেপাশের এলাকায় বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ডের গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর সেনা কর্তৃত্ব ফিরিয়ে আনার পর একটি পদক্ষেপ হতে পারে এই স্বীকারোক্তি। এই স্বীকারোক্তি এমন দিনে প্রকাশ করা হয় যেদিন ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে মিয়ানমার। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানের তথ্য সংগ্রহের চেষ্টার জন্য তাদের বিরুদ্ধে দাফতরিক গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এএফপি’র প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, ওয়ে লোন এবং কিঁয়াও সোয়ে ও নামের ওই দুই সাংবাদিক ইন দীনের গণকবর নিয়ে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করেছিলেন। তবে এই দাবি অস্বীকার করে থাকে রয়টার্স।

ফরটিফাই রাইটসের কর্মকর্তা ম্যাথু স্মিথ বলেন, সামরিক বাহিনীর স্বীকারোক্তি সেনা সদস্য আর কমান্ডারদের গণহারে নৃশংসতার প্রমাণ দেয়। সাংবাদিকদের গ্রেফতার তাদের অপরাধ ঢাকার একটি জঘন্য প্রচেষ্টা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

রোহিঙ্গা গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার স্যাটেলাইট ছবি

ইয়াঙ্গুনভিত্তিক থিংক ট্যাংক দ্য টাম্পাডা ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞ খিন জাও উইন ওই এই মত সমর্থন করেন। তিনি জানান, এই স্বীকারোক্তির মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনী ‘নিজেদের অপরাধমুক্ত করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়’।

ডিসেম্বরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পাওয়া জেনারেল মং মং সোয়ে রাখাইনে পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ডের দায়িত্ব ছিলেন। ওই নিষেধাজ্ঞা সামরিক বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ে ভীতি জাগিয়েছে বলেও মনে করেন খিন জাও উইন। তিনি আরও জানান, অপরাধ ঢাকার এই প্রচেষ্টা তাদের হয়ত হিতে বিপরীত হতে পারে। অন্যান্য জেনারেলদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।

বুধবারের আগ পর্যন্ত সেনা কর্মকর্তারা বলে আসছেন, তাদের অভিযানে চারশো রোহিঙ্গা বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। তাদের দাবি, রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। যদিও কয়েক দশক থেকেই রাখাইনে বাস করা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ও জাতিসত্ত্বা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে মিয়ানমার। তাদের বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করে দেশটি।

333 ভিউ

Posted ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : Shaheed sharanee road, cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com