মো:ফারুক,পেকুয়া(২০ জুলাই) :: সালাউদ্দিন আহমেদ কেন্দ্রীয় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য। গ্রামের বাড়ি পেকুয়া উপজেলার সিকদার পাড়া এলাকায়। কিশোর বয়সে গ্রামেই বেড়ে ওঠেছেন। লেখাপড়ায় মেধার পরিচয় দেওয়ায় রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে চাকরিও করেছেন। এক সময় সরকারী চাকরি ছেড়ে দিয়ে বিএনপি’র রাজনীতিতে যোগদান করে মেধার পরিচয় দেন। হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস, সংসদ ও প্রতিমন্ত্রী।
এরপর কক্সবাজার জেলায় উন্নয়নের রুপলেখা তৈরি করে উন্নয়নের রোল মডেল হিসাবে প্রতিষ্টা করেন। সর্বশেষ অজপাড়া গাঁ পেকুয়াকে উপজেলা প্রতিষ্টা করে পুরো উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ডে উন্নয়ন করে সাধারণ জনগণের প্রাণপুরুষে পরিণত হন তিনি।
এরপর ১/১১ থেকে জেল জুলমে শিকার হলেও বিএনপি রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেন। পরে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহন করলে মামলার আসামী হয়ে কিছু সময় পলাতক আবার জামিনে বের হয়ে দলীয় মুখপাত্রের ভুমিকা পালন করেন।
সর্বশেষ বিএনপি’র দুঃসময়ে বিএনপি’র সিনিয়র নেতারা গাঁ ডাকা ও সংস্কার পন্থির আশ্রয় নিলে তিনি দলের জন্য ব্রত হয়ে দলীয় হাল ধরেন। গোপন অবস্থায় থেকে মিডিয়াতে বিএনপি’কে বাঁচিয়ে রাখেন। ঢাকার উত্তরা থেকে অপহরণের শিকার হয়ে কয়েক মাস গুম ছিলেন। এ সময় তার স্ত্রী সাবেক এমপি হাসিনা আহমেদের মামলা, তৎবীর ও পেকুয়া তথা কক্সবাজারবাসীরা ব্যাপক আন্দোলন শুরু করে।
সর্বশেষ ২০১৫ সালে ভারতের শিলং পুলিশ রাস্তার ধারে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে। এরপর ভারতে চিকিৎসা আর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা। ২বছর মামলা চলার পর শেষ পর্যায়ে মামলাটি। অল্প কিছুদিনেই রায় হবে ওই মামলায়। বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানা গেছে, ভারতে শিলং থেকে মামলা শেষ করে বাংলাদেশে ফিরতে তিনি ব্যাকুল হয়ে আছেন। এ নিয়ে কি ভাবছে তার গ্রামের বাড়ির লোকজন ও দলীয় নেতাকর্মীরা।
অনলাইন পোর্টাল কক্সবাংলা’র সাথে কথা হয়েছে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের। তাদের বক্তব্য তুলে ধরা হল।
পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মাতবর পাড়ার মুকবুল বাড়ির প্রবীণ ব্যক্তি মো: সামশুর কাছে জানতে চাওয়া হই সালাউদ্দিন সাহেবের বিষয়ে। তিনি বলেন, আমি দলমত বুঝিনা। সালাউদ্দিন সাহেব আমার পেকুয়ার লোক। অতীতে পেকুয়াবাসীর খবর সময় রেখেছেন। বর্তমানে নিজে সমস্যায় থাকলেও আমাদের খবর রাখেন বলেন পেকুয়ার নেতারা সব সময় বলেন। দোয়া করি তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসুক।
চকরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্র পেকুয়ার সন্তান এফ.এম সুমন এ প্রসঙ্গে বলেন, সালাউদ্দিন সাহেব বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হলেও কক্সবাজারবাসীর জন্য শুধু দলীয় নেতা নয়। দলমত উর্ধ্বে থেকে তিনি এলাকায় উন্নয়ন করেছেন। এরকম নেতা বার বার জন্মেনা। তার অভাব আমরা অনুভব করি। তিনি দ্রুত দেশে ফিরে আসুক এ কামনা করছি।
উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি কামরান জাদিদ মুকুট এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রিয় নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ কক্সবাজার বিএনপি পরিবারের প্রাণপুরুষ। এছাড়াও সাধারণ জনগণের একনিষ্ট নেতা। তার দ্বারা কক্সবাজার জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছিল আজ সেই পর্যন্ত। বিশেষ করে পেকুয়া উপজেলায় মহাসড়কগুলোর করুণ অবস্থা। গ্রামীন সড়কগুলো দিয়ে চলাচল করা দায়। অথচ সালাউদ্দিন সাহেব বর্তমানে ক্ষমতায় না থাকলেও এলাকার প্রতি ছিল অসম্ভব ভালবাসা। নিজ টাকায় অনেক উন্নয়ন করেছেন। আমরা পেকুয়াবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীরা তার শূন্যতা অনুভব করছি। আমার আশা করছি তিনি ভারতে মামলা জড়িলতা শেষ করে দ্রুত দেশে ফিরবেন। আর দেশের মামলাগুলো রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক। এগুলো রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা হবে।
জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুপ রুবেল এ প্রসঙ্গে বলেন, সালাউদ্দিন সাহেবের কথা বললে আমাদের কান্না আসে। আমরা তার আদর্শ অনুসরণ করে চলি। তিনি ভারতে নিজ ইচ্ছাই যায়নি। তাকে মূমর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। যার কারণে অবৈধ অনুপ্রেবশেরে মামলায় তিনি নির্দোষ প্রমাণ হবেন। আর পেকুয়ায় আমরা যারা বর্তমান সরকারের মামলা মোকদ্দমায় জর্জরিত হয়ে আছি তাদের খোঁজখবর সব সময় রাখেন। উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি বাহাদুর শাহ’র মাধ্যমে সহযোগিতাও করে থাকেন। আর তার আমলে যা পেকুয়াসহ কক্সবাজার জেলায় হয়েছিল। বর্তমানে উন্নয়ন বলতে চোঁখে পড়েনা। যার কারণে তার অভাব পেকুয়াবাসী সব সময় করে থাকে।
জেলা শ্রমিকদলের সিঃসহসভাপতি উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদের গ্রামের বাড়ির সন্তান মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, সালাউদ্দিন আহমেদকে অপহরণ অথবা গুম করা হয়েছিল। অপহরণকারীরা তাকে ভারতে পেলে আসে। তাকে মূমর্ষ অবস্থায় ভারতের শিলং পুলিশ আটক করেছিল। যার কারণে আমার ধারণা তিনি ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশ করেনি। যদিওবা ভারতীই আইন অনুযায়ী অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা চলছে। মামলার রায় যা হউক তিনি নির্দোষ প্রমানীত হয়ে বাংলাদেশে ফিরবেন। তাকে আমরা খুব বেশি মিস করছি। দলীয় নেতাকর্মী ও পেকুয়াবাসী তাকে দ্রুত দেশে পাওয়ার আশা করছি। বাংলাদেশে এসেও রাজনৈতিক মিথ্যা মামলার জড়িলতা তিনি শেষ করবেন।
পেকুয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ এর প্যালেন চেয়ারম্যান মাহাবুবুল করিম এ প্রসঙ্গে বলেন, সালাউদ্দিন সাহেবের আমলে কক্সবাজার জেলায় কি উন্নয়ন হয়েছিল তা সবার জানা। পেকুয়াকে তো মডেল উপজেলা হিসাবে প্রতিষ্টিত করেছে। উন্নয়ন করেছেন নজিরবিহীন। আমরা যারা তার সমর্থক বার বার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয় তার উন্নয়নের অবদানে। তিনি বর্তমানে ভারতের শিলংয়ে অবস্থান করলেও কক্সবাজার জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের দলীয় নেতাকর্মীদের খোঁজখবর রাখেন। আর সাধারণ জনগণের কথা সব সময় বলে থাকেন। আমর আশা মামলা জটিলতা শেষ করে তিনি দ্রুত বাংলাদেশে ফিরবেন। এ আশায় আমরা পেকুয়াবাসী প্রিয় নেতাকে দেখার জন্য অপেক্ষায় আছি।
উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু এ প্রসঙ্গে বলেন,সালাউদ্দিন সকলের প্রিয় নেতা। মামলা জটিলতায় ভারতে অবস্থান করলেও তিনি দ্রুত দেশে ফিরতে ব্যাকুল হয়ে আছেন। আমরা যারা দলীয় নেতাকর্মীদের আশা মামলা শেষ করে তিনি দ্রুত দেশে ফিরবেন।
এ প্রসঙ্গে পেকুয়া উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মো: ইকবাল হোছাইন বলেন, সালাউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল (বিএনপি) এর নির্বাহী কমিটির সদস্য। দল ক্ষমতায় থাকাবস্থায় তার নেতৃত্বে কক্সবাজার জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়। প্রতিমন্ত্রী থাকাবস্থায় সারা বাংলাদেশে উন্নয়নে কাজ করেছেন। প্রিয় নেতা ভারতে মামলা জটিলতায় অবস্থান করছেন। আমরা যারা পেকুয়াবাসী দলমত নির্বিশেষে আশা করি মামলা শেষ করে তিনি দেশে ফিরবেন। দলীয়ভাবে নেতাকর্মীরাও তার জন্য ব্যাকুল আছে। যদিওবা ভারতী আইন অনুযায়ী মামলা চলছে তার সাঁজা হউক আর না হউক আমাদের আশা তিনি নির্দোষ প্রমাণ হবেন। কারণ তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ভারতে যাননি। বাংলাদেশে মামলা থাকলেও বীরের বেশে বাংলাদেশে আসবেন আর রাজনৈতিকভাবে মামলা মোকাবেলা করবেন।
সালাউদ্দিন আহমেদের ভাতিজা সবসময় বিদেশে আর দেশে তার দেখভাল করা সাংবাদিক ছফওয়ানুল করিম এ প্রসঙ্গে বলেন, আমার কাছ থেকে এলাকার লোকজন সালাউদ্দিন আহমদ স্যারের খোঁজ খবর নেন। তার মামলা ও শারীরিক অবস্থা কেমন আর দেশে কখন আসছে তার জন্য ফোনে অথবা সরাসরি এসে জানতে চান। এটি এলাকাবাসীর ভালবাসার বহিপ্রকাশ। আমার জানা মতে তার জন্য এলাকাবাসীও ব্যাকুল আছে। মামলাও শেষ পর্যায়ে। স্যারও দেশে ফিরে আসার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছেন।
Posted ৬:৩৮ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta