বুধবার ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ষোড়শ সংশোধনীর রায় : প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সমঝোতায় সরকার

শুক্রবার, ২৫ আগস্ট ২০১৭
418 ভিউ
ষোড়শ সংশোধনীর রায় : প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সমঝোতায় সরকার

কক্সবাংলা ডটকম(২৫ আগষ্ট) :: ষোড়শ সংশোধনীর রায়কে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্কের অবসান ঘটাতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সঙ্গে সরকারের সমঝোতার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। রায়ের সঙ্গে দেওয়া ‘অপ্রাসঙ্গিক’ পর্যবেক্ষণগুলো বাদ দেওয়ার শর্তে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৃষ্ট দূরত্ব ঘোচাতে সমঝোতার প্রক্রিয়া চলছে। ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

রায় থেকে পর্যবেক্ষণ বাদ দেওয়ার বিষয়ে সমঝোতার প্রক্রিয়া চললেও  বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে আসবে কিনা এবং সে বিষয়ে সমঝোতা হবে কিনা প্রশ্নে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে সৃষ্ট আস্থার সংকট কেটে যাওয়ার পর রায় রিভিউ করে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।

সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতি ও  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গহওর রিজভীর মধ্যে অনুষ্ঠিত বুধবারের (২৩ আগস্ট) বৈঠকের পর সমঝোতার পথ প্রশস্ত হয়েছে। জানা গেছে, ওই বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা শেষে চলমান জটিলতা নিরসনে নির্বাহী ও বিচার বিভাগ উভয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনে ঐকমত্যে পৌঁছেছে।

সূত্রের দাবি, এই ইস্যুটি নিয়ে বিএনপি ষড়যন্ত্র করছে, এমন ইঙ্গিত পেয়েছে ক্ষমতাসীনরা। ধীরে ধীরে অন্য মহলও  ইস্যুটি পুঁজি করে নানান খেলায় মেতে উঠতে পারে। তাই এটি জিইয়ে রেখে ষড়যন্ত্রের খেলা বাড়তে দিতে চায় না ক্ষমতাসীন দল। সরকার প্রধান বিচারপতির বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত ও অবস্থান নিয়ে রাখলেও বাস্তবায়নে যেতে পারছে না।

দলটির সভাপতিমণ্ডলীর দু’জন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সামনে জাতীয় নির্বাচন। সময়টা আমাদের জন্যে একটু খারাপ। তাই অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে ব্যাকফুটে গিয়ে।’

ওই দু’নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের আগে ষড়যন্ত্র শুরু হয় নানামুখী। তাই এখন কৌশল হলো-  কিছুটা কঠোর ও কিছুটা আপস  করা।’

জানা গেছে,সরকারের নীতি নির্ধারকদের কেউ কেউ মনে করেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায় সরকারকে বিব্রত করলেও প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ আত্মঘাতী হয়ে যেতে পারে। সরকারের পক্ষ থেকে নানা হিসাব মিলিয়ে এখনও সমঝোতা করে চলার ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে থাকলেও প্রধান বিচারপতিকে এখনই সরাতে চায় না সরকার।তবে প্রধান বিচারপতি বিব্রত হয়ে নিজে থেকে সরে দাঁড়ালে আপত্তি নেই। আপাতত এই কৌশল গ্রহণ করে জানুয়ারিতে  প্রধান বিচারপতির মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত সময় পার করতে চায় সরকার।

সূত্র জানায়, সংবিধান ও রাষ্ট্রপতির হাতে থাকা ক্ষমতা প্রয়োগ করে প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে দেওয়া অনেকখানি ‘রিস্কি’ মনে করায়,এখনি এ সিদ্ধান্ত নিতে চায় না তারা। এক্ষেত্রে আরও ধৈর্য ধারণ করতে চায় সরকার। ধৈর্যচ্যুতি ঘটলে সংবিধানে থাকা এখতিয়ার অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দিকে যাবে ক্ষমতাসীনরা।

জানা গেছে, আরও একটি বিকল্প চিন্তা ভর করেছে সরকারের ভেতরে। তা হলো, ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুসরণ করে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি যিনি হবেন, তিনি কতখানি আস্থাশীল হবেন, তা নিয়েও চলছে নানা হিসাব-নিকাশ।

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী দুই নেতা জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতির প্রতি তাদের আস্থা-বিশ্বাস একেবারেই তলানিতে, এটা ঠিক। কিন্তু পরে যিনি প্রধান বিচারপতি হয়ে আসবেন, তিনি যে আরও জটিলতা সৃষ্টি করবেন না, তার নিশ্চয়তা কতটুকু? ফলে সিদ্ধান্ত যেটাই  হোক না কেন, এ ক্ষেত্রে সময় নিতে চায় সরকার।

সম্পাদকমণ্ডলীর চার জন নেতা জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সমঝোতা হলেও প্রধান বিচারপতিকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে রাজনৈতিক মাঠে কিছুটা সমালোচনা জিইয়ে রাখা হবে। সেই সমালোচনা সর্বোচ্চ মহলের দুই-তিন জন নেতা করবেন। অন্য নেতারা ঢালাওভাবে সমালোচনা না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এখন সমালোচনা করা হবে ‘পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা’ ও ‘একক নেতৃত্ব’-এই দু’টি ইস্যুটি নিয়ে। কারণ, এ দু’টি ইস্যুতে পাবলিক সেন্টিমেন্ট তৈরি করা সম্ভব হবে।

নীতি-নির্ধারকরা বলছেন, ‘সরকারের হাতে রয়েছে সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ, যা বিকল্প অপসন হিসেবে রেখে দেওয়া হয়েছে। ৯৭ অনুচ্ছেদকে সরকার মনে করছে তাদের হাতে সর্বশেষ অস্ত্র। শেষ অস্ত্র প্রয়োগ করলে হিতে-বিপরীত হতে পারে, এ আশঙ্কাও কাজ করছে। এসব বিচার-বিবেচনা করে সংবিধানে ৯৭ অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করতে আরও  ধৈর্য ধরতে চায় সরকার।

আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, প্রধান বিচারপতির হাতে সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আরও  দু’টি রিট নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এ দু’টি হলো অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরিবিধি ও নির্বাহী বিভাগের হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা। এ নিয়ে বিচার বিভাগের সঙ্গে মতবিরোধ অব্যাহত রয়েছে। অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরিবিধি আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে চায় সরকার। কিন্তু উচ্চ আদালত সেটা তাদের হাতে নিতে চায়।

অন্যদিকে নির্বাহী বিভাগের হাত থেকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা কেড়ে নিতে চায় উচ্চ আদালত। আর এ ক্ষমতা নির্বাহী বিভাগের হাতে রাখতে চায় সরকার। ষোড়শ সংশোধনীর রায় সরকারের বিপক্ষে গেলেও এ দু’টি রিট যাতে সরকারের পক্ষে থাকে, তার জন্যও সমঝোতা প্রয়োজন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, ‘এ জটিলতা নিরসনে আইন অনুযায়ী যা হবার তা হবে।’ তিনি বলেন,‘ আমরা কোনও ক্রাইসিস সৃষ্টি করতে চাই না। আইনে যা বলা আছে, সেভাবেই হবে।’

সাবেক আইনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু বলেন, ‘এই রায়ে দেওয়া অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য নিয়ে আমাদের অবস্থান আগের মতোই। অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্যগুলো বাদ দিলে চলমান জটিলতার অবসান হতে পারে। এছাড়া জটিলতা নিরসনের কোনও পথ নেই।’ তিনি বলেন, ‘এটি এক্সপাঞ্জ করার মতো যথেষ্ট সুযোগ প্রধান বিচারপতির রয়েছে।’

418 ভিউ

Posted ২:৩০ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৫ আগস্ট ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : Shaheed sharanee road, cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com