কক্সবাংলা ডটকম(১০ জুলাই) :: ঋণখেলাপির শীর্ষ ১০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সংসদে। এর মধ্যে দুজন ব্যক্তি ও বাকি সব প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আবার দুটির নাম রয়েছে দুবার। প্রতিষ্ঠান দুটি হচ্ছে— বিসমিল্লাহ টাওয়েলস ও যমুনা এগ্রো কেমিক্যাল। আর ব্যক্তি দুজন হলেন— এমদাদুল হক ভূঁইয়া ও মজিবর রহমান খান। তবে এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কার কাছে কি পরিমাণ খেলাপি ঋণ রয়েছে, সে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণতথ্য ব্যুরোর (সিআইবি) ডাটাবেজে রক্ষিত ২০১৭ সালের এপ্রিলভিত্তিক তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশে কার্যরত তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১১ হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা। এসব খেলাপি ঋণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকাই গতকাল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পক্ষে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম সংসদে তুলে ধরেন। সংসদে এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর চান সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মানিক।
খেলাপি ঋণের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে চট্টগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়িক গ্রুপ মোহাম্মদ ইলিয়াস ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেডের নাম। তালিকায় প্রথম ১০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরো রয়েছে— জাসমির ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড, ম্যাক্স স্পিনিং মিলস, বেনেটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, ঢাকা ট্রেডিং হাউজ, আনোয়ারা স্পিনিং মিলস, ইয়াসির এন্টারপ্রাইজ, কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেমস লিমিটেড, এমএম ভেজিটেবল অয়েল প্রডাক্টস লিমিটেড ও আলফা কম্পোজিট টাওয়েলস লিমিটেড।
সংসদে উপস্থাপিত শীর্ষ ঋণখেলাপির তালিকায় এর পরই রয়েছে জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড। এর পরে রয়েছে যথাক্রমে ম্যাক ইন্টারন্যাশনাল, আলোচিত হল-মার্ক ফ্যাশন, মুন্নু ফ্যাব্রিকস, ফেয়ার ট্রেড ফ্যাব্রিকস লিমিটেড, সাহারিশ কম্পোজিট টাওয়েল, নূরজাহান সুপার অয়েল লিমিটেড, সালেহ কার্পেট মিলস লিমিটেড, এসকে স্টিল ও চৌধুরী নিটওয়্যারস লিমিটেড।
শীর্ষ ১০০ ঋণখেলাপি তালিকার ক্রমানুসারে ২১ নম্বরে আছে রানকা সোহেল কম্পোজিট মিলস লিমিটেড। এর পরে আছে হল-মার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় আলোচিত প্রতিষ্ঠান টি অ্যান্ড ব্রাদার নিট কম্পোজিট লিমিটেড। এর পরের স্থানগুলোয় আছে যথাক্রমে তানিয়া এন্টারপ্রাইজ ইউনিট, রহমান স্পিনিং মিলস, এস স্পিনিং লাইন, হাজী ইসলাম উদ্দিন স্পিনিং মিলস, গ্রাম-বাংলা এমপিকে ফার্টিলাইজার অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, টেলিবার্তা, কটন করপোরেশন ও ভারগো মিডিয়া।
ঋণখেলাপির তালিকায় ৩১তম স্থানে রয়েছে সোনালী জুট মিলস লিমিটেড। এর পরের নয়টি স্থানের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো হলো— এক্সপার টেক লিমিটেড, এমবিএ গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড, ওয়াল মার্ট ফ্যাশন, ওয়ান ডেনিম মিলস, এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, হিমালয় পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস, এমদাদুল হক ভূঁইয়া, এমকে শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড স্টিলস ও রানকা ডেনিম টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড।
শীর্ষখেলাপি গ্রাহকদের তালিকায় ম্যাক শিপ বিল্ডার্স রয়েছে ৪১তম স্থানে। তালিকায় এর পরের স্থানে রয়েছে যথাক্রমে বিশ্বাস গার্মেন্টস, মাস্টার্ড ট্রেডিং, হিন্দুল ওয়ালি টেক্সটাইল, ইসলাম ট্রেডিং কনসোর্টিয়াম, কাপিট্যাল বনানী ওয়ান, মেরিন ভেজিটেবল অয়েল, অর্জন কার্পেট অ্যান্ড জুট ওয়েভিং, এ. জামান অ্যান্ড ব্রাদার্স ও অরনেট সার্ভিসেস লিমিটেড।
সংসদে উপস্থাপিত শীর্ষখেলাপির তালিকায় ৫১ থেকে ৬০তম স্থানে আছে যথাক্রমে দোয়েল অ্যাপারেলস লিমিটেড, আশিক কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলস, মুন বাংলাদেশ লিমিটেড, মোস্তফা পেপার কমপ্লেক্স, এইচআর স্পিনিং মিলস, বিসমিল্লাহ টাওয়েলস, কেয়া ইয়ার্ন মিলস, তাবাসসুম এন্টারপ্রাইজ, অ্যাপেক্স উইভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস ও দ্য ওয়েল টেক্স লিমিটেড।
ডেল্টা সিস্টেমস রয়েছে প্রকাশিত খেলাপি গ্রাহকের তালিকায় ৬১তম স্থানে। তালিকায় এর পরের স্থানে আছে— জাহিদ এন্টারপ্রাইজ, হিলফুল ফুজুল সমাজকল্যাণ সংস্থা, মজিবর রহমান খান, নিউ রাখী টেক্সটাইলস মিলস, আলী পেপার মিলস, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, নর্দান ডিস্টিলারিজ, লাকি শিপ বিল্ডার্স ও যমুনা এগ্রো কেমিক্যাল।
প্রকাশিত তালিকায় ৭১তম স্থানে রয়েছে মাকসুদা স্পিনিং মিলস লিমিটেড। তালিকায় ৭২ থেকে ৮০তম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে শাপলা ফ্লাওয়ার মিলস, সিদ্দিক অ্যান্ড কোম্পানি, যমুনা এগ্রো কেমিক্যাল, মনোয়ারা ট্রেডিং, একে জুট ট্রেডিং, মাহবুব স্পিনিং লিমিটেড, আল আমিন ব্রেড অ্যান্ড বিস্কিটস লিমিটেড, প্রফিউশন টেক্সটাইল ও মা টেক্স।
জাহাজ ভাঙা প্রতিষ্ঠান সুপার সিক্স স্টারশিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড রয়েছে তালিকার ৮১তম স্থানে। পরের নয়টি স্থানে রয়েছে যথাক্রমে টেকনো ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, বিসমিল্লাহ টাওয়েল, ন্যাম করপোরেশন, জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড পিএ, সর্দার অ্যাপারেলস, জেড অ্যান্ড জে ইন্টারন্যাশনাল, বিশ্বাস টেক্সটাইলস, মডার্ন স্টিল মিলস ও নিউ অটো ডিফাইন।
শীর্ষ ১০০ খেলাপি গ্রাহকের তালিকায় বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো হলো— অনিকা এন্টারপ্রাইজ, ডি আফরোজ সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিজ, মোবারক আলী স্পিনিং মিলস, আফিল জুট মিলস, রেজা জুট ট্রেডিং, আরকে ফুডস, আলফা টোব্যাকো ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি, ফেয়ার এক্সপো উইভিং মিলস, কেয়ার স্পেশালাইজড হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্স সেন্টার ও ফিয়াজ এন্টারপ্রাইজ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ৭৩ হাজার ৪০৯ কোটি টাকা, বিতরণকৃত মোট ঋণের যা ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ। গত বছরের মার্চে খেলাপি ঋণ ছিল ৫৯ হাজার ৪১১ কোটি টাকা। এ হিসাবে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে আরো ৪৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ অবলোপন করা হয়েছে।
Posted ৭:৫৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১০ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta