কক্সবাংলা ডটকম(১৬ আগস্ট) :: রিয়ালের মাঠে গত এক যুগে বার্সেলোনার তিনটি স্মরণীয় জয়ের স্কোরলাইন: ৪-০, ৬-২ ও ৩-০। স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ে আজ তেমনই এক স্কোরলাইন চাই বার্সেলোনার।
অতীতে একাধিক সুখস্মৃতি আছে ঠিকই। ঘরের মাঠে ১-৩ গোলে হারের পর ফিরতি লেগ ঘিরে পাঁড় বার্সা সমর্থকও হয়তো আশায় বুক বাঁধবেন না। জিদানের রিয়ালের সর্বজয়ের ক্ষুধাই সে স্বপ্ন দেখতে দিচ্ছে না মেসিদের!
ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী জিদান দায়িত্ব নিয়েছেন ১৮ মাস। এ সময়ে অর্ধডজন ট্রফি উঠেছে রিয়ালের শোকেসে, যার দুটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, দুটি ইউরোপিয়ান সুপার কাপ, একটি ক্লাব বিশ্বকাপ এবং গত মৌসুমের লা লিগা ট্রফি। প্রতিপক্ষের মাঠে ৩-১ গোলের দুর্দান্ত জয়ে সপ্তম ট্রফির দ্বারপ্রান্তে ইউরোপের সফলতম ক্লাবটি।
পাঁচ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার খড়্গ মাথায় নিয়ে এ ম্যাচে দর্শক হয়েই থাকছেন সময়ের অন্যতম সেরা তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পর্তুগিজ সুপারস্টারের অনুপস্থিতিতে বার্সা কি পারবে প্রতিপক্ষের মুঠো থেকে স্প্যানিশ সুপার কাপ ছিনিয়ে নিতে? উত্তরটা সময়ই দেবে।
তার আগে ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের শাস্তিটা মেনে নিতে পারছে না রিয়াল শিবির। ‘এ সিদ্ধান্তে আমরা ক্ষিপ্ত। রোনালদো নিজেও ক্ষিপ্ত। কারণ সে সবসময়ই খেলতে চায়। খেলতে না পারাটা তার জন্য হতাশার’— প্রিয় শিষ্য সম্পর্কে বলেন রিয়াল কোচ জিদান।
বদলি হিসেবে নেমে মাত্র ২৪ মিনিটে অনেক ঘটনার জন্ম দেয়া রোনালদোর শাস্তির বিরুদ্ধে আবেদন করেছে রিয়াল। ধারণা করা হচ্ছে, স্প্যানিশ ফুটবল সংস্থার আপিল কমিটি পাঁচ ম্যাচের পরিবর্তে চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেবে।
এ সম্পর্কে রোনালদোর সতীর্থ দানি কারবাহাল বলেছেন, ‘রোনালদোর শাস্তিটা অতিরঞ্জিত। এটা তার জন্য হতাশার। আশা করছি, আপিল কমিটি শাস্তি কয়েক ম্যাচ কমিয়ে দেবে।’ বদলি হিসেবে নামার পর গোল করে জার্সি খোলার অপরাধে প্রথম হলুদ কার্ড দেখেন রোনালদো।
পরবর্তীতে স্যামুয়েল উমতিতির ট্যাকলে ডাইভ দেয়ায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পান। মার্চিং অর্ডারের হতাশায় রেফারিকে ধাক্কা দেয়ায় অতিরিক্ত চার ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে রোনালদোকে।
নেইমার-পরবর্তী বার্সা ঘরের মাঠে প্রবল প্রতিপক্ষের সঙ্গে দাপটের সঙ্গেই খেলেছে। কিন্তু ওই দাপট গোলমুখ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। একমাত্র সুখস্মৃতি মেসির পেনাল্টি গোল। অন্যদিকে জিদানের রিয়াল দেখিয়েছে, বল দখলে রাখার বিষয়টা কেবলই গাণিতিক। রক্ষণ সামলে বিধ্বংসী পাল্টা আক্রমণের জ্বলন্ত উদাহরণ সৃষ্টি করেছে ন্যু ক্যাম্পের ম্যাচ।
পল পগবাকে কিনতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড খরচ করেছে ১০৫ মিলিয়ন ইউরো। রিয়ালের গোটা মিডফিল্ডে বিনিয়োগ তার চেয়ে কম— মাত্র ৯০.৫ মিলিয়ন ইউরো! লুকা মডরিচ ও ইসকো (৩০ মিলিয়ন), ক্যাসেমিরো (৫.৫ মিলিয়ন) ও টনি ক্রুস (২৫ মিলিয়ন ইউরো)। অথচ দুর্দান্ত ছন্দে থাকা মাঝমাঠই রিয়ালের সাম্প্রতিক সাফল্যের চালিকাশক্তি।
নিষেধাঙ্গার কারণে প্রথম ম্যাচে দর্শক হয়ে থাকা মড্রিচ ফিরলে আরো শানিত হবে এ বিভাগ। রোনালদোর অনুপস্থিতিতে আক্রমণভাগে করিম বেনজেমাকে এ ম্যাচে সঙ্গ দেবেন ওয়েলস উইঙ্গার গ্যারেথ বেল।
সুপার কাপের ফিরতি লেগের আগে মাঠ ও বাইরে সমান চাপে আর্নেস্তো ভ্যালভের্দের বার্সা। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা রিয়ালকে নিজেদের মাঠে হারানোটা এমনিতেই কঠিন। তার ওপর ঘোচাতে হবে দুই গোলের ব্যবধান।
মাঠের এ চাপের সঙ্গে যোগ হয়েছে ট্রান্সফার-সংক্রান্ত চাপ। রেকর্ড গড়ে নেইমার পিএসজিতে যাওয়ার পর এখনো যোগ্য বিকল্প খুঁজে পায়নি বার্সেলোনা।
ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার পলিনহোকে কেনার পর খোদ বার্সা সমর্থকরাই বলছেন, এটি ক্লাবের জন্য লজ্জার। ইংলিশ ক্লাব টটেনহামে দুই মৌসুম খেলা এ মিডফিল্ডার কোনো প্রভাবই ফেলতে পারেননি। এ কারণেই তাকে ইউরোপে ফেরানোয় খুশি নন বার্সা সমর্থকরা।
মার্কা ও এএফপি
Posted ৩:০৩ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৬ আগস্ট ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta