কক্সবাংলা ডটকম(১০ জানুয়ারি) :: আজ ১০ জানুয়ারি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক ১৯৭২ সালের এই দিনে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরেছিলেন। একাত্তরে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর শহীদের রক্তস্নাত বাংলার মাটি এই দিনে তার হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ফিরে পেয়েছিল।
মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করেছিল। মুক্তিযুদ্ধকে পরাস্ত করতে পাকিস্তানিরা এ পদক্ষেপ নিলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেফতারের পর বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগারে আটকে রাখা হয়।
এদিকে মুক্তিমন্ত্রে দীক্ষিত বাঙালি হানাদারদের বিরুদ্ধে গড়ে তোলে প্রবল প্রতিরোধ। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রাণপুরুষকে বন্দি করেও পাকিস্তানিরা তার দেয়া মন্ত্রে উজ্জীবিত-প্রাণিত বাঙালিকে কোণঠাসা করতে পারেনি।
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের বাংলায় হানাদাররা যত পর্যুদস্ত হতে থাকে, বঙ্গবন্ধুর বিচারের নামে পাকিস্তানি প্রহসন তত এগিয়ে যেতে থাকে। একপর্যায়ে ফাঁসির আসামি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর জন্য কারাগারে তার সেলের পাশে কবর খোঁড়ে পাকিস্তানিরা। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি তার ইস্পাতদৃঢ় মনোবল আর আশাবাদ নিয়ে বীরোচিত মৃত্যুর প্রহর গুনতে থাকেন।
এদিকে মুক্তির প্রহর গুনতে থাকা বাংলার দামাল ছেলেরা হানাদারদের আত্মসমর্পণ ও পলায়নের মঞ্চ প্রস্তুত করে। ১৬ ডিসেম্বর বাঙালির মহান বিজয়ের সুবাদে পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে দেশে ফেরার সুযোগ দিতে বাধ্য হয়।
পাকিস্তানে ২৯০ দিন বন্দি থাকার পর লন্ডন-দিল্লি হয়ে ১৯৭২ সালের এই দিনে বেলা ১টা ৪১ মিনিটে বঙ্গবন্ধু তার সদ্য স্বাধীন স্বদেশের মাটিতে পা রাখেন। বাংলাদেশের জন্য এটা এক ধরনের পূর্ণতার উপলক্ষ। জীবন-মৃত্যুর দোলাচল পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু এই দিন তার সারা জীবনের আরাধ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। একইভাবে বাংলাদেশও রক্তস্রোতে সাঁতার কেটে ফিরে পায় জাতির জনককে।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে বাংলাদেশে নেমেছিল উত্সবের আমেজ। বাংলাদেশের মহান স্থপতিকে বরণ করতে সেদিনের তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স (সোহরাওয়ার্দী) ময়দান পর্যন্ত পুরো পথ হয়েছিল লোকারণ্য। বাংলাদেশের মানুষ যেমন বঙ্গবন্ধুকে দেখতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল, বঙ্গবন্ধু নিজেও তেমনি বাঙালির কাছে ফিরে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য সংগঠন বরাবরের মতো এবারও নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। সকাল সাড়ে ৬টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারা দেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে। এরপর সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন ও বিকাল ৩টায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়া জেলা, মহানগর থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে।
Posted ৩:০৫ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১০ জানুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta