কক্সবাংলা ডটকম(২২ ডিসেম্বর) :: ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসকে সামনে রেখে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই লক্ষ্যে একটি রোডম্যাপ প্রস্তুতির কাজও শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচনের সময়সীমা দিয়ে প্রস্তুত হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তবে নির্বাচন কমিশন ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে ভোটের প্রস্তুতি নিলেও সরকারের একটি পক্ষ ২০২৬ সালের ৩০ এপ্রিল নির্বাচন আয়োজনে বদ্ধপরিকর।
তারা ২০২৬ সালের ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর নির্বাচনের তপসিল ঘোষণার পরামর্শ দিয়েছে।
তবে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি দ্রুত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে। ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচনের জন্য সমমনা দলগুলোর সঙ্গে দলটি সিরিজ বৈঠক শুরু করেছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২০২৫ সালের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। এ ধরনের বাস্তবতায় নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে নির্বাচন কমিশন কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকলেও ডিসেম্বরকে টার্গেট করে অগ্রসর হচ্ছে এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন।
নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ বলেন, ‘২০২৫ সালের ডিসেম্বরকে ধরেই আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। রোডম্যাপ ঘোষণার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজনে কোনো সমস্যা হবে না।’
জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে কত সময় দরকার
গত বুধবার দেশের ১০ অঞ্চল ও ৬৪ জেলার নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনলাইনে অনুষ্ঠিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
সিইসি বলেন, ‘আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন করার সম্ভাব্য ডেডলাইন। তাই চলমান কর্মযজ্ঞ সমুন্নত রাখতে যার ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করা আছে, সেগুলো আপনারা সঠিকভাবে এবং যথাযথভাবে পালনে সচেষ্ট থাকবেন।
এই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে মাঠ পর্যায়ে কেউ বাধার সম্মুখীন হতে পারেন। যদি কেউ এ ধরনের সংকটে উপনীত হন, তাহলে তাৎক্ষণিক আমাদের জানাবেন, আমরা আইন ও বিধির আলোকে তা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করব।’
ইসি সূত্রে জানা গেছে, তিন মাসের সময় দিয়ে যে কোনো সময় জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশনের জন্য যথেষ্ট। সাংবিধানিকভাবে সাধারণত যে কোনো নির্বাচন আয়োজনে তিন মাসের সময় পায় কমিশন।
বিদ্যমান সংবিধানের ১২৩ (খ) বলা আছে, ‘মেয়াদ-অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভাঙ্গিয়া যাইবার ক্ষেত্রে ভাঙ্গিয়া যাইবার পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।’ যেহেতু বর্তমানে সংসদ নেই, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে। এই সরকারের মেয়াদও অনির্ধারিত।
ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, ‘বাংলাদেশের বিদ্যমান ছবিসহ ভোটার তালিকার বিষয়ে সঠিক পরামর্শ পাননি প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস। ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজটিও কঠিন নয়। আমাদের যে ভোটার তালিকা তা ত্রুটিপূর্ণ নয়।’
গত সোমবার সকালে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যদি অল্প কিছু সংস্কার করে ভোটার তালিকা নির্ভুলভাবে তৈরি করার ভিত্তিতে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয়, তাহলে ২০২৫ সালের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠান হয়তো সম্ভব হবে।
আর যদি এর সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রত্যাশিত মাত্রার সংস্কার যোগ করি, তাহলে আরও অন্তত ছয় মাস অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে।
মোটাদাগে বলা যায়, ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা যায়।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘প্রথমে সবচেয়ে বড় কাজ ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা। এটা এমনিতেই কঠিন কাজ। এখন কাজটা আরও কঠিন হলো এ জন্য যে, গত তিনটা নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ করার সুযোগ ছিল না।’
ছবিসহ নির্ভুল ভোটার তালিকা কঠিন নয়
নির্বাচনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে যে ভোটার তালিকা তা ছবিসহ। যেটি বিগত ২০০৮ সালের এ টি এম শামসুল হুদা কমিশন করেছিল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এ ভোটার ডাটাবেজের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। দেশের সামরিক বাহিনীসহ বেসামরিক কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি ও পেশাজীবীর, সর্বোপরি দেশের জনগণের বিশাল কর্মযজ্ঞের ফসল এ ভোটার তালিকা।
বেসরকারি সংস্থা ভোটার তালিকা নিরীক্ষা করে বলেছে ভোটার তালিকাটি ৯৯.৯৮ শতাংশ সঠিক। যেখানে ছবি, পুরো ঠিকানা ও বায়োমেটিক্স দিয়ে যাচাই করা, ফলে কোনো ভুল ভ্রান্তি থাকার কথা নয়। ভোটার তালিকা হালনাগাদ নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ। আইনে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক থাকায় ১৮ বছর বয়সী প্রত্যেক নাগরিককে ভোটার হতে হয়। যারা ভোটার তারাই মূলত জাতীয় পরিচয়পত্রধারী।
এনআইডির ভিত্তিতে নির্ভুল ভোটার তালিকা করতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। গত তিনটি নির্বাচনে যে মানুষ ভোট দিতে পারেননি, সেটা ভোটার তালিকার গরমিলের কারণে নয়, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হওয়ার কারণে। গত তিনটি নির্বাচনে প্রথম ভোটার হওয়া তরুণ-তরুণীরা ভোট না দিলেও তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে। ফলে নির্ভুল ভোটার তালিকা করার কাজটি খুব কঠিন বলে যারা প্রধান উপদেষ্টাকে বুঝিয়েছেন, তারা ঠিক পরামর্শ দেননি।
এদিকে, চলতি বছর নির্ধারিত সময়েয় ভোটার তালিকা হালনাগাদ করতে না পারলেও আইনে হালনাগাদের বাইরে ইসিকে যে কোনো সময় ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষমতাও দেওয়া আছে। কোনো নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার দিন থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় পর্ব ছাড়া অন্য যে কোনো সময় নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রয়োজন অনুসারে ভোটার তালিকা সংশোধন করতে পারে ইসি।
এতে ভোটার হওয়ার যোগ্য কিন্তু বাদ পড়েছেন, এমন নাগরিকদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা, মৃত বা ভোটার হওয়ার অযোগ্য ব্যক্তির নাম তালিকায় থাকলে সেগুলো বাদ দেওয়া, ভোটার এলাকা স্থানান্তর, তালিকার যেকোনো ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে সেগুলো দূর করার ক্ষমতা দেওয়া আছে। এই আইনের ক্ষমতা বলে ভোটারযোগ্য ভোটার করার কার্যক্রম শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।
ইতিমধ্যেই ভোটার করার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ভোটারের তথ্য সংগ্রহ চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। ভোটার তালিকায় যে ত্রুটির কথা বলা হচ্ছে সেটি মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই শুরু হয়ে গেছে। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি কমিটিও করা হয়েছে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ে আগেই আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হতে পারব। আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে কোনো ঘাটতি নেই।’
ইসি যে নতুন ভোটার করার কার্যক্রম শুরু করেছে তা শেষে ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি সারা দেশে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর যে কোনো সময় জাতীয় নির্বাচন করতে কোনো সমস্যা নেই ইসির। এর অংশ হিসেবে গত বুধবার মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসে ইসি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) পক্ষ থেকে সবার আগে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম সুচারুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সবাইকে কাজ করার জন্য কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে।
আংশিক রোডম্যাপ নিয়ে প্রতিক্রিয়া
প্রধান উপদেষ্টার আংশিক নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। আংশিক রোডম্যাপ ঘোষণার পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।
পর গত বৃহস্পতিবার হতাশা প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের যে সম্ভাব্য সময়সূচি প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করেছেন, তা ‘স্পষ্ট’ হয়নি বিএনপির কাছে। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা এবং তার প্রেস সচিবের দেওয়া বক্তব্য ‘সাংঘর্ষিক’।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচন সংক্রান্ত বক্তব্য অস্পষ্ট। আমি মনে করি যে, এখন ইলেকশন কমিশন গঠন হয়ে গেছে, ইলেকশন পরিচালনা করবার, কনডাক্ট করবার জন্য তার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সেই ধরনের কোনো সমস্যা নেই। আমরা যেটা আশা করেছিলাম যে চিফ অ্যাডভাইজার সুনির্দিষ্ট একটা সময়ের মধ্যে তার রোডম্যাপ দিয়ে দেবেন; সেটা তিনি দেননি। দ্রুত নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপের দাবিতে আন্দোলনে নামতে যাচ্ছে বিএনপি।
আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যেই এ বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না হলে ফেব্রুয়ারির প্রথম থেকেই কর্মসূচি শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছেন নেতারা। সমমনাসহ ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া অন্তত ৫০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠক শুরু করেছে। সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচনের সময় নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনার পর এই বৈঠক হচ্ছে।
কুমিল্লায় এক জনসভায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৫ সালের মধ্যেই হতে হবে, এ সময়ের মধ্যে সব সংস্কার শেষ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আশা করি প্রধান উপদেষ্টা সংস্কার শেষ করেই ২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবেন। এ দেশের জনগণ দ্রুত তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়।
দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের মিত্র দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি। শনিবার বিকালে ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও বাংলাদেশ লেবার পার্টির সঙ্গে আলাদাভাবে রাজধানীর গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক করে লিয়াজোঁ কমিটি। এতে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে মত দেন মিত্র দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সার্বিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার তা করবে বলেও মত দেন নেতারা।
বৈঠক সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমা প্রসঙ্গে জোট নেতাদের কাছে মতামত জানতে যায় বিএনপি। সেখানে এসব জোট ও দলের নেতারা অভিন্ন সুরে জানান, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোনোভাবেই ২০২৫ সাল অতিক্রম করতে পারে না। এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশে অস্থিরতা বাড়বে, পতিত ফ্যাসিবাদের দোসররা আরও শক্তি সঞ্চয় করে গভীর ষড়যন্ত্র করতে সক্ষম হবে। এতে দেশ ও জাতির বড় ক্ষতি হবে।
আরও জানা যায়, বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও তার প্রেস সচিবের বক্তব্যে পরস্পরবিরোধী উল্লেখ করে এর সমালোচনা করেন নেতারা। তারা বলেন, সরকারের মধ্যেই কোনো সমন্বয় নেই। এতে শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনে নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। তাই সরকারের মধ্যে অবশ্যই সমন্বয় থাকা উচিত এবং নির্বাচন ইস্যুকে তাদের সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া উচিত। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন-দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু।
জানা গেছে, বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব উপস্থিত জোট নেতাদের উদ্দেশে বলেন, দেশ নিয়ে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত থেমে নেই। চক্রান্তকারীরা যে কোনো উপায়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। এমন সময়ে দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসাবে সবাইকে আরও কৌশলী হতে হবে, আরও সংযমী হতে হবে। রাজনৈতিক বক্তব্য-বিবৃতিতে কোনো বিভক্তি আনা যাবে না। এই সরকারকে নির্বাচন আয়োজনের সময় দিতে হবে। তবে সেটা যৌক্তিক হতে হবে। এটা নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিভেদ নয়, আলোচনার টেবিলকেই বেশি প্রাধান্য দিতে হবে বলে জানান তিনি ।
বৈঠক শেষে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অবস্থা, জনগণের নানা সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে মতবিনিময় করেছি। এই আলোচনার প্রেক্ষিতে কিছু করণীয় সিদ্ধান্ত হলে সেটা জানাব।
১২ দলীয় জোট প্রধান জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, বর্তমানে দেশের উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আমাদের আগামী দিনে কর্মসূচি কী হওয়া উচিত, সেসব বিষয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলেছি। কিন্তু আমরা কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হইনি। বিএনপি, ১২ দলীয় জোটসহ যারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। আমাদের সেই ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়নি। আগামীতে সেটা আরও গভীরভাবে অনুভূত হবে। বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে খুব শিগগিরই আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করব।
১২ দলীয় জোটের পক্ষে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন-জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিকল্পধারার নুরুল আমিন বেপারী, বাংলাদেশ এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, কল্যাণ পার্টির শামসুদ্দিন পারভেজ, লেবার পার্টির লায়ন মো. ফারুক রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের অধ্যাপক আবদুল করিম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম ও জাগপা রাশেদ প্রধান।
এনপিপির ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটে থাকা ১১টি দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ লেবার পার্টি নেতারা বিএনপির লিয়োজোঁ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। জানা গেছে, দু’একদিনের মধ্যে অন্যান্য সমমনা দলের সঙ্গেও ধারাবাহিক বৈঠক করবে বিএনপি।
Posted ৪:৪৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta