সোমবার ২৪শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

সোমবার ২৪শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

অর্থনৈতিক সংকটে বড় কোনো ঋণের প্রত্যাশা সরকারের

শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪
6 ভিউ
অর্থনৈতিক সংকটে বড় কোনো ঋণের প্রত্যাশা সরকারের

কক্সবাংলা ডটকম(১৫ জুন) :: সরকারের উন্নয়ন ও পরিচালন ব্যয় মেটাতে ঋণনির্ভরতা বাড়ছে। আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটেও ঘাটতি ব্যয় মেটাতে দেশী-বিদেশী উৎস থেকে আড়াই লাখ কোটি টাকার বেশি ঋণের পরিকল্পনা করেছে সরকার।

দেশের অর্থনীতিতে ডলার সংকটসহ নানা ধরনের বহির্মুখী চাপ রয়েছে।

তাই বড় প্রকল্পের অর্থায়ন ও বাজেট সহায়তার জন্য এখন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর ওপরও নির্ভরতা বাড়ছে।

এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ভারত ও চীন সফরের সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশ দুটি থেকে বড় ধরনের অর্থায়ন প্রতিশ্রুতিরও প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সপ্তাহেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। সে সময় দুই দেশের সরকার প্রধানের মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।

২১ জুন আবারো ভারত সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

টানা চতুর্থ দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর শেখ হাসিনার প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে দিল্লি যাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছিল আগেই।

এ অবস্থায় দুই দেশের সম্পর্ককে আরো উন্নয়নের মাধ্যমে ‘নতুন দিগন্তে নিয়ে যাওয়ার’ কথাও বলা হচ্ছে।

এছাড়া এবারের সফরে তিস্তার পানি বণ্টন, সীমান্ত হত্যা ও সামরিক সহায়তাসহ ভবিষ্যৎ উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েও কথা হওয়ার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

তবে ভারত থেকে এ মুহূর্তে নতুন করে বড় কোনো ঋণের প্রত্যাশা করছেন না বিশ্লেষকরা।

ভারত থেকে দেশে ফেরার কিছুদিনের মধ্যেই আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ৯-১২ জুলাই এ সফর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন সফরকে কেন্দ্র করে চীনের কাছ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

১ শতাংশ সুদে সহজ শর্তে এ ঋণ মিলবে বলে আলোচনা হচ্ছে। এছাড়া দেশটির সঙ্গে তিস্তা প্রকল্পসহ বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্প নিয়েও আলোচনার কথা রয়েছে।

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, চীন এরই মধ্যে তিস্তা প্রকল্পে বিনিয়োগে বেশ কয়েকবার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

এ প্রকল্প নিয়ে আলোচনা ইতিবাচক হলে কয়েক বছরের জন্য ৫ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তিও হতে পারে দেশটির সঙ্গে।

দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে চীন ও ভারতের মধ্যে প্রতিযোগিতা এখন বাড়ছে। বন্ধুপ্রতিম হিসেবে দুই দেশের সঙ্গেই সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে বাংলাদেশ।

বিশ্লেষকরা বলছেন, অন্যান্য দেশ থেকে সহযোগিতা নেয়ার সময় সম্ভাব্য লাভজনক ক্ষেত্রগুলো যাচাই ও বিবেচনা করে দেখতে হবে।

এ মুহূর্তে ভারতের কাছ থেকে বড় কোনো অর্থায়নের সম্ভাবনা না থাকায় বিদ্যমান ঋণ চুক্তিগুলোর শর্ত শিথিলের প্রয়াস চালাতে পারে বাংলাদেশ।

আর প্রধানমন্ত্রী চীনে যাওয়ার আগে ভারত সফর করাটা নয়াদিল্লির জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বড় একটি আশ্বাসও।

প্রধানমন্ত্রীর এ দুই সফরের বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে ৭ বিলিয়ন ডলারের তিনটি ক্রেডিট লাইন এরই মধ্যে বিদ্যমান। এগুলোর অর্থছাড় খুবই কম। ফলে ভারতের এখনই বড় অংকের টাকা নিয়ে এগিয়ে আসার সম্ভাবনা নেই। একটিই হতে পারে যেসব লাইন অব ক্রেডিট আছে, সেগুলো যাতে তাড়াতাড়ি ছাড় করানো যায়।

সেটিও কঠিন, কারণ সেক্ষেত্রে তাদের শর্তগুলো শিথিল করাতে দ্রুত রাজি করাতে হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সংক্ষিপ্ত সফরে যাবেন। সেখানে আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়। এমন কোনো দৃশ্যমান প্রস্তুতি আমার নজরে আসেনি। বড় কোনো সিদ্ধান্ত হবে বলে আমার মনে হয় না। দুই প্রধানমন্ত্রী নীতিগত কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন কিনা, তা তাদের মধ্যে বৈঠক শেষে বলা যাবে।’

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পেছনে চীনের বিষয়ে দেশটিকে আশ্বস্ত করার একটি বিষয় রয়েছে বলে মনে করছেন সাবেক এ পররাষ্ট্র সচিব। তবে ভারত ও চীনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রাজনীতিবিদরা মনে করছেন, দুটি সফরকে এক করে দেখার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য হলো দুই দেশের মধ্যে বাংলাদেশ নিয়ে কোনো প্রতিযোগিতা নেই। আর বাংলাদেশ এমন কোনো প্রতিযোগিতায় প্রবেশও করবে না।

এ বিষয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে আমাদের অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, বিজ্ঞানে সহযোগিতা ও জঙ্গিবাদ দমনের মতো বিষয়গুলো আলোচনায় থাকবে। এ সফরটির উদ্দেশ্য হবে মূলত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা এবং সমাধানের সম্ভাব্য জায়গাগুলো বের করা। এর বাইরে অর্থনৈতিক সুবিধা বাড়ানো যায় কিনা সে ব্যাপারে আলাপ হবে। এগুলো ছাড়া অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ সমাধান এ সফরে দেখছি না। ভারত ও চীনে সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি সফর। এখানে একটির সঙ্গে অন্যটি মিলিয়ে একপাল্লায় ফেলা ঠিক না।’

এ মুহূর্তে চীনের কাছ থেকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা নেয়াটাই দেশের জন্য কল্যাণকর বলে মনে করছেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় ঋণের পুরো টাকার ছাড়করণ এখনো হয়নি। এর পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থে তিস্তা মহাপরিকল্পনাটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। চীন বরাবরই বলে আসছে আমাদের অর্থনৈতিক সংকটে দেশটি পাশে থাকবে। শুধু তা-ই নয়, তারা সে সহযোগিতা করে এসেছেও। এরই ধারাবাহিকতায় তিস্তা পরিকল্পনায় চীনের সহযোগিতা নেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।’

চীন ও ভারতের পক্ষ থেকে করা ঋণ সহায়তার সব প্রতিশ্রুতির সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন এখনো হয়নি। দেশ দুটির সঙ্গে বেশকিছু চুক্তি সই ও প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেলেও সেগুলো বাস্তবায়ন ও অর্থছাড়ে ধীরগতির অভিযোগ রয়েছে ঢাকার। চলতি অর্থবছরেও এখনো দেশ দুটি থেকে নতুন কোনো অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি পায়নি বাংলাদেশ।

দুই দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা নেয়ার ক্ষেত্রে তা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জন্য দীর্ঘমেয়াদে সুবিধা ও লাভজনক কিনা তা বিবেচনা করে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে, তা বাংলাদেশের প্রয়োজনের নিরিখেই নির্ধারণ করতে হবে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে আমাদের জাতীয় স্বার্থে।

এখানে আমাদের উন্নয়ন অংশীদার যারা, তাদের তো নিজস্ব একটি দৃষ্টিভঙ্গি থাকবেই। কিন্তু সেখানে আমাদের মনে রাখতে হবে যে কোন কাজটাতে কার সক্ষমতা কেমন, আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা কী বলে, আমাদের জাতীয় স্বার্থে কোনটি স্বল্পমেয়াদে ও কোনটি দীর্ঘমেয়াদে প্রয়োজন। এছাড়া উদ্দেশ্য-সহযোগিতার ধরন, দীর্ঘমেয়াদে লাভযোগ্যতা ও তা উভয়পক্ষের জন্যই সুবিধাজনক কিনা, এসব বিষয় মাথায় রেখেই আমাদের সিদ্ধান্তে যেতে হবে।’

২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরকালে স্বাক্ষরিত হয় ‘স্ট্রেংদেনিং অ্যান্ড প্রডাকশন ক্যাপাসিটি কো-অপারেশন’ শীর্ষক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ)। ওই চুক্তির আওতাভুক্তসহ নানা খাতে সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেন শি জিনপিং। ওই এমওইউর আওতায় বাংলাদেশে চীনা ঋণে মোট ২৭টি প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু পরে ১০টি প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও অধিকাংশই আলোর মুখ দেখেনি।

তিনটি লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) অধীনে বাংলাদেশকে ৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত। ২০১০ সালে দুই দেশের মধ্যে প্রথম এলওসি চুক্তি হয়। পরে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে আরো দুটি এলওসি চুক্তি হয়। ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত এসব চুক্তির বিপরীতে অর্থায়ন মিলেছে দেড় বিলিয়ন ডলারের কম।

আর দ্বিতীয় ও তৃতীয় চুক্তির বিপরীতে অর্থছাড় ধীরে হচ্ছে। চুক্তির শর্ত নিয়েও রয়েছে জটিলতা। এসব চুক্তির শর্ত নিয়ে বেশ কয়েকবার দরকষাকষিও করতে হয়েছে ঢাকাকে। এবারের সফরেও চুক্তির শর্ত শিথিল করা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

ভারতের পক্ষ থেকে ঋণ দেয়ার চেয়ে নিরাপত্তা সহায়তা দেয়ার আগ্রহ বেশি থাকবে বলে মনে করছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘ ভারত ও চীন দুই দেশের সঙ্গে দুই ধরনের সম্পর্ক বাংলাদেশের। যারা আমাদের সহযোগিতা করবে তাদেরই স্বাগতম জানাব। কোনো বিশেষ দেশের ওপর আমরা নির্ভরশীল থাকব না। আমরা যে দেশের কাছ থেকেই অর্থনৈতিক সহযোগিতা পাব তার কাছ থেকেই নেব।’

প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরে নতুন অর্থায়নের প্রত্যাশা করলেও এ অর্থের যথাযথ ব্যয় নিশ্চিতে সতর্কতা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।

সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এমএ মান্নান এমপি বলেন, ‘দুটি দেশই আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত আমাদের আজীবনের প্রতিবেশী ও হাজার বছরের অংশীদার। তবে ভারতের ঋণ নিয়ে ভয় আছে। আমাদের ও তাদের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা প্রকট। তাই এলওসি ঋণের প্রকল্পগুলো ঠিকমতো এগোচ্ছে না। কিন্তু চীন অর্থায়নের দিক দিয়ে ভালো।

তবে তাদের ঠিকাদাররা আগ্রাসী। ঋণচুক্তির আগেই চীনা ঠিকাদাররা এখানে এসে পড়ে। তখন তাদের অগ্রাহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই অর্থ প্রাপ্তি নিয়ে শঙ্কা না থাকলেও যথাযথ ব্যয় নিয়ে ভয় আছে। আমাদের আরো কিছু স্থানে মিত্যব্যয়ী হয়ে খরচ কমাতে হবে।’

6 ভিউ

Posted ৩:০০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com