রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার অর্ধশত ‘ফিদায়ী’ স্কোয়াড’ ঢাকায়

বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট ২০১৭
397 ভিউ
আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার অর্ধশত ‘ফিদায়ী’ স্কোয়াড’ ঢাকায়

কক্সবাংলা ডটকম(১৭ আগস্ট) :: ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে জঙ্গি সংগঠনের ‘ফিদায়ী স্কোয়াড’। ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে দলবদ্ধভাবে তারা ফিদায়ী স্কোয়াডে নাম লেখাচ্ছে। আর এই ফিদায়ী স্কোয়াডের কাজ হচ্ছে আত্মঘাতী হামলা। ফিদায়ী স্কোয়াডের প্রায় অর্ধশত সদস্য নির্দিষ্ট একটি স্থান বা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের অপারেশনাল কর্মকান্ড পরিচালনা করছে।

কে কখন হামলা চালাবে-তা নিজেরাই নির্ধারণ করে। হামলার আগে সদস্যরা ঘটনাস্থল রেকি করে। সে অনুযায়ী নিদিষ্ট স্থানে অবস্থান করে। হামলার আগের দিন অন্য সদস্যরা যিনি আত্মঘাতী হামলায় অংশ নিবে বোমা তার কাছে পৌঁছে দেয়। এরপরই সে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে নিহত হয়।

গত মঙ্গলবার রাজধানীর পান্থপথে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির অদূরে হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নিহত সাইফুল ইসলাম ফিদায়ী স্কোয়াডের সদস্য ছিল। আত্মঘাতী হামলায় আরো কয়েকজন সদস্য এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল বলে ডিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

ইসলামের ভাষায় আক্রমণ বা আত্মোত্সর্গমূলক কর্মকান্ডকে ফিদায়ী বলা হয়। এক বা একাধিক ব্যক্তির অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রবল শত্রুর বিরুদ্ধে অপারেশন পরিচালনা করাই ফিদায়ী স্কোয়াডের কাজ। এই স্কোয়াডের সদস্যদের এমনভাবে তালিম দেয়া হয় যে তাদেরকে বলা হয়, ‘—আল্লাহ যদি আমাকে মুশরিকদের বিরুদ্ধে কোন যুদ্ধে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ দেন, তাহলে আল্লাহ দেখবেন যে, আমি কী করি’।

ডিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বলেন, চলতি বছরের ২০ জুলাই খুলনার ডুমুরিয়ার বান্ধা বটতলা গ্রামের ছোট বাজারে যতীন্দ্রনাথ গাতিমারের চায়ের দোকানে প্রেশার কুকার বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। ওই বিস্ফোরণটি ঘটিয়েছিল পান্থপথে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে নিহত সাইফুল ইসলাম।

তার বাড়িও ডুমুরিয়ার সাহস ইউনিয়নের নোয়াকাঠি গ্রামে। ঘটনার দিন ৩/৪ জন তরুন যতীন্দ্রনাথের দোকানে এসে কেক খেতে চায়। দোকান থেকে চলে যাওয়ার সময় তারা দোকানদারের অগোচরে একটি কালো রঙের ব্যাগ রেখে যায়। কিছু সময় পর ওই ব্যাগটি বিস্ফোরিত হয়।

পরে পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে দেখে যে সেটি ছিল প্রেশার কুকার বোমা। সাইফুলের সেটি ছিল প্রথম পরীক্ষা। এরপরই সাইফুল ফিদায়ী স্কোয়াডের সদস্য হয়ে শোক দিবসের কর্মসূচিতে আত্মঘাতী হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

গতকাল বুধবার ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালে জঙ্গি সাইফুল ইসলামের সঙ্গে তার আরও কয়েকজন সহযোগী ছিল। ঘটনাস্থলের আশপাশে এদের অবস্থান ছিল।

প্রাথমিকভাবে জঙ্গি সাইফুলের সহযোগীদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। তার সহযোগীদের ধরতে গোয়েন্দারা কাজ করছেন।’ যদিও পুলিশ কমিশনার দাবি করেছেন সাইফুল ইস্তিহাদী হামলার জন্য নিয়োজিত হয়েছিল।

‘ইস্তিহাদী’ হামলা হলো কোন অপারেশনাল কার্যক্রমে নিজে ও অন্য সহযোগীসহ আত্মঘাতী হামলা চালাবে। এ ধরণের ইস্তিহাদী হামলা বাংলাদেশে এখনও ঘটেনি।

সাইফুলের শরীরে ইলেকট্রনিক ডিভাইস:

নিহত সাইফুল ইসলামের শরীর থেকে প্লাস্টিকের তৈরি ইলেকট্রনিক ডিভাইস পাওয়া গেছে। গতকাল বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে তার ময়নাতদন্তের সময় এই ইলেকট্রনিক ডিভাইসটি উদ্ধার করেন ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ। ময়নাতদন্ত শেষে ডা. সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বোমা বিস্ফোরণে জঙ্গি সাইফুলের মৃত্যু হয়েছে। তার এক চোখ ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে বোমার স্প্লিন্টার আলামত হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছে। তার কোমরের উপরের অংশে একটি প্লাস্টিকের তৈরি ইলেকট্রনিক ডিভাইস পাওয়া গেছে। সাইফুলের ভিসেরা, রক্ত ও ইউরিন সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে। আত্মঘাতী হওয়ার আগে সে কোনও মাদক সেবন করেছিল কিনা তা ওই প্রতিবেদনে উঠে আসবে ।

জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে সাইফুলের পিতাকে

খুলনা অফিস ও ডুমুরিয়া সংবাদদাতা জানায়, জঙ্গি সাইফুল ইসলামের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছে পুলিশ। সে কাদের মাধ্যমে জঙ্গি সম্পৃক্ততায় জড়িত হয়েছে পুলিশ তাদেরও সন্ধান করছে। এছাড়া সাইফুলের পিতা আবুল খায়ের মোল্লাকেও থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে পুলিশ বিস্তারিত তথ্য জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডুমুরিয়া উপজেলার সাহস ইউনিয়নের নোয়াকাঠি গ্রামের সাইফুল কারো সঙ্গে তেমন মিশত না। দারিদ্র্যের কারণে বাকপ্রতিবন্ধি মা এবং ছোট দুই বোনকে রেখে সংসারে বাবাকে সহায়তা করতে কাজের সন্ধানে ঢাকায় গিয়েছিল সাইফুল।

তবে তার আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা এলাকাবাসীকে হতবাক করেছে। সাইফুলের চাচতো বোন জেসমিন আক্তার বলেন, সাইফুল জঙ্গি হতে পারে, এটা তারা বিশ্বাসই করতে পারছেন না।

গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে স্থানীয় ভান্ডারপাড়া গ্রামের রিপন শেখ, নোয়াকাটি গ্রামের খলিলুর রহমান মোল্লা, আবিদ সরদার, ইজাজ মোল্লা, এহসান, ঘোষগাতি গ্রামের সাম্মি, ডুমুরিয়া আলিয়া মাদ্রাসার দফতরি মুনসুর মাঝিকে আটক করেছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাজধানীর পান্থপথের ওলিও ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয় জঙ্গি সাইফুল ইসলাম।

397 ভিউ

Posted ২:৫৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com