মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ইলিশের সুদিন ফেরাতে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

সোমবার, ১৪ আগস্ট ২০১৭
772 ভিউ
ইলিশের সুদিন ফেরাতে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

কক্সবাংলা ডটকম(১৩ আগস্ট) :: সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে। দেশের মোট মাছের চাহিদার ১২ শতাংশ মেটায় ইলিশ। বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ইলিশের অবদান ১ দশমিক ১৫ শতাংশ বা প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা।

তবে সরকার চায় ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়াতে। এই লক্ষ্যে পদ্মা নদীতে ইলিশের আবাসস্থল পূর্বের ন্যায় ফিরিয়ে আনতে নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে মৎস অধিদপ্তর।

নতুন এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে সাগর থেকে প্রধান নদী প্রনালীসহ পদ্মা নদীতে ইলিশের আবসস্থল পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এবং সমৃদ্ধ করা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধ্যের মধ্যে সবার কাছে ইলিশ পৌঁছে দিতে দীর্ঘ মেয়াদী এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ নামে এই প্রকল্পটির মেয়াদ ৪ বছর। যা ২০১৮ সালে জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ২০২১ সালে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৭২ কোটি ১৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।

প্রকল্পের মাধ্যমে দাদনদার, মহাজন ও এনজিও ঋণ থেকে জেলেদের মুক্ত করতে জাল ও নৌকা সহায়তা প্রদান করা হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, উপকূলীয় মৎস্যজীবীদের জীবিকার প্রধান উৎস হচ্ছে ইলিশ। প্রায় পাঁচ লাখ জেলে সরাসরি ইলিশ আহরণে নিয়োজিত। ২০-২৫ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে এর সঙ্গে।

এইসব জেলেরা প্রতিবছরই দাদনদার ও মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ইলিশ মাছ ধরার জন্য জাল ও নৌকা কেনার ব্যবস্থা করে। শর্ত অনুযায়ী মহাজনের আড়তেই ইলিশ মাছ বিক্রি করতে হয় এবং তাদের নির্ধারিত দামেই অর্থ দিয়ে থাকে। সেই সঙ্গে সুদের টাকা কেটে নেয়া হয়। ফলে একজন জেলে শুধু মৎস্য শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। তাদের ইচ্ছমতো কেনাবেচা করতে পারেন না।

এই কারণেই বর্তমানে লাখ লাখ জেলে এনজিও ও মহাজনী ঋণে জর্জরিত। কিস্তি পরিশোধের ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে থাকতে হয় তাদের। তাই তারা স্বাবলম্বী হতে পারেন না। তাই এ প্রকল্পের মাধ্যমে দাদনদার, মহাজন ও এনজিও ঋণ থেকে জেলেদের মুক্ত করতে জাল ও নৌকা সহায়তা প্রদান করা হবে।

এছাড়া জাটকা এবং প্রজননক্ষম ইলিশ সংরক্ষণের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা; জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা; ইলিশের অভয়াশ্রম বৃদ্ধি করা; মৎস সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন ও লজিস্টিক সহায়তা করা এবং জাটকা ও প্রজননক্ষম ইলিশ সংরক্ষণে জেলে সম্প্রদায়সহ নাগরিক সমাজের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা এই প্রাকল্পের উদ্দেশ্য।

গেল শতকের ৮০ ও ৯০ দশকে ইলিশ উৎপাদন সঙ্কটে পড়ে। এ সময়ের আগে দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনে ২০ শতাংশ ছিল ইলিশের অবদান। কিন্তু ২০০৩-০৪ সালে তা ক্রমান্বয়ে কমে গিয়ে দাঁড়ায় জাতীয় উৎপাদনের মাত্র ৮ শতাংশে।

মৎস্য অধিদপ্তরের জাটকা সংরক্ষণ ও গবেষণা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এ.বি.এম. জাহিদ হাবিব বলেন,  ইলিশ সংরক্ষণ, বিচরণ ও উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে ৪ বছর মেয়াদী যে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে এর প্রধান কাজ হবে সাগর থেকে ইলিশকে নদী মুখী করা।  পদ্মা-মেঘনাসহ নদীগুলোতে ইলিশের বিচরন বাড়ানো।

এ প্রকল্পের মাধ্যমে কিভাবে ইলিশের আবাসস্থল করা যায়? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মাছ সবসময় উজানমুখী; তারা সব সময় উপরের দিকে আসতে চায়। প্রথমে ইলিশ সাগরের লবণাক্ত পানি থেকে আধা লবণাক্ত পানিতে এসে ৩-৪ মাস অবস্থান করে। পরে তারা ভোলা-পটুয়াখালির দিকে রওনা দেয়। আসতে তাদের কমপক্ষে ৭ দিন সময় লাগে। এখান থেকে চাঁদপুর-লক্ষীপুর আসতে আরও ৭ দিন সময় লাগে। পরে চাঁদপুর-লক্ষীপুর থেকে রাজশাহী পৌঁছাতে সময় লাগে আরও সাতদিন।

প্রকল্পটির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ হাজার জেলেকে  দাদনদার ও মহাজনদের হাত থেকে মুক্তির জন্য মাছ ধরার জাল সহায়তার সংস্থান রাখা হয়েছে। এছাড়া সব জেলের জাল সহায়তার পাশাপাশি ৯ কোটি ৫০ টাকা ব্যয়ে মৎস সংরক্ষণ আইনের বাস্তবায়নের সহায়তায় ১৯টি দ্রুতগতি সম্পন্ন এফআরপি স্পিডবোট কেনা হবে হবে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে জেলেদের অবৈধ জাল তুলে নিয়ে বৈধভাবে জাল দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে মৎস সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন ও প্রয়োগ করা যাবে। এছাড়া মৃত ও নিখোঁজ জেলেদের তালিকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। যার প্রতিটি পরিবারকে ১ লাখ টাকা প্রদান করা হবে।

ইলিশ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র অর্জনের ব্যাপারে জাহিদ হাবিব বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫ লাখ মেট্রিকটন ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন হয়েছিল ৩ দশমিক ৯৪ লাখ মেট্রিকটন। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৫ লাখ মেট্রিকটন।

772 ভিউ

Posted ৩:০১ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১৪ আগস্ট ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com