মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও(২৬ জুলাই) :: কক্সবাজারের ঈদগাঁও-ফরাজী পাড়া সড়কে পারাপারের জন্য এখন নৌকাই একমাত্র ভরসা। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্থ এ সড়ক নির্মাণে এবার মাঠে নেমেছেন মহিলারা। বন্যার পানিতে নেমে রাজনৈতিক নেতারা কি ফটো সেশনে ব্যস্ত? নাকি বন্যা দূর্গতদের পাশে তা নিয়ে মানুষের মধ্যে চলছে আলোচনা সমালোচনা। অপরদিকে জালালাবাদের ভেঙ্গে যাওয়া বেড়ীবাঁধটি ২য় বারের মত নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যে প্রকাশ, সাম্প্রতিক প্রবল বর্ষণ ও বন্যার পানিতে জনগুরুত্বপুর্ণ ঈদগাঁও-ফরাজী পাড়া সড়ক তথা জালালাবাদ সড়কের দু’স্থানে বিরাট অংশ ভেঙ্গে যায়। ভেঙ্গে যাওয়া অংশ দুটি হচ্ছে রাবারড্যাম সংযোগ সড়ক সংলগ্ন ব্রীজ এলাকা এবং পূর্ব লরাবাক হাফেজ খানা সংলগ্ন এলাকা।
পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর ব্যবস্থাপনায় সর্বস্তরের লোকজনের পারাপারের সুবিধার্থে উক্ত ভাঙ্গন দুটিতে কাঠের তৈরী অস্থায়ী সাঁকো নির্মাণ করা হয়। ক’দিন আগের বৃষ্টি ও পাশর্^বর্তী ঈদগাঁও নদীর ঢলের পানিতে সড়কের পূর্ব পাশের্^র অস্থায়ী সাঁকোটি ভেঙ্গে যায়।
এতে স্থানীয় লোকজনের যাতায়াতের একমাত্র ভরসায় পরিণত হয় নৌকা। অবশ্য এর অনেক আগে থেকে উক্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সদর উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম রহিম উল্লাহর নেতৃত্বে একটি টীম যেদিন উক্ত ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শনে আসেন ঐদিন গভীর রাতে নির্মানাধীন বেড়ীবাঁধটি আবারো ভেঙ্গে পানির নিচে তলিয়ে যায়।
স্থানীয় এমইউপি নুরুল আলম জানান, রাবারড্যাম সংলগ্ন এ বেড়ীবাঁধটির নির্মাণ কাজে প্রায় দেড় হাজার বালির বস্তা বসানো হয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন প্রতিনিধির উপস্থিতিতে তারই নির্দেশনামতে বাঁধ পুনঃনির্মাণের কাজ চলে আসছিল। কিন্তু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগেই আবারো বেড়ীবাঁধটি ভেঙ্গে গিয়ে সবকিছু তছনছ হয়ে যায়।
বুধবার থেকে স্থানীয় চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদের তত্ত্বাবধানে দ্বিতীয় বারের মত বেড়ীবাঁধের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান এমইউপি সাইফুল হক। এদিকে বন্যায় ক্ষতবিক্ষত জালালাবাদ সড়ক মেরামত কাজে নেমেছেন স্থানীয় মহিলারা।
একই সময়ে এলাকাবাসীর উদ্যোগে পুনঃনির্মাণের এ কাজ শুরু হয় বলে জানান নুরুল হুদা। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বৃহত্তর ঈদগাঁওর বিস্তীর্ণ এলাকা আবারো বন্যা ও ভাঙ্গনের মুখে পড়ে। এতে চরম দূর্ভোগ যাচ্ছে মানুষের। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন পোকখালী, জালালাবাদ, ইসলামাবাদ, চৌফলদন্ডী ও ঈদগাঁওর বৃহত্তর জনগোষ্ঠি।
ভাঙ্গনের কবলে পড়া পানিবন্দী মানুষের যেন দুঃখের শেষ নেই। গোমাতলীতে যেন বন্যা মাসের পর মাস লেগেই আছে। কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে চৌফলদন্ডীর ঘোনাপাড়ার ৫নং ওয়ার্ড এবং ইসলামাবাদের পূর্ব গজালিয়ায় নদীর ভাঙ্গনে বিরাট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
বন্যার পানিতে নাপিতখালী বিল থৈ থৈ করছে। চৌফলদন্ডীর বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। দূর্যোগ কবলিত এসব এলাকাকে এখনো দূর্গত এলাকা ঘোষণা করা হয়নি। এদিকে রামু-কক্সবাজারের বর্তমান ও সাবেক এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল ও লুৎফুর রহমান কাজল ঈদগাঁওর ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে আসেন এবং ত্রাণ বিতরণ করেন।
বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানিতে নেমে তারা যেভাবে দলীয় নেতাদের নিয়ে ফটো সেশনে ব্যস্ত সময় পার করেন তাতে সমালোচকরা বলছেন আসলেই কি তারা বন্যা কবলিত মানুষের পাশে এসেছেন? নাকি ত্রাণ বিতরণের নামে রাজনীতি করছেন?
তবে দলীয় সূত্রগুলোর দাবী, বিভিন্ন স্থানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ঈদগাঁও নদীর ভাঙ্গা পরিদর্শন করে শীঘ্রই মেরামতের আশ^াস দেন বর্তমান সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল। তিনি ঈদগাঁও বাঁশঘাটা ও খোদাইবাড়ী এলাকা পরিদর্শন করেন বলে জানান জুয়েল রানা।
অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ ও বিধ্বংস জনপদ দেখতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান কাজল এসে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ করেন। এসময় এ দু’নেতার সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১১:০৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৬ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta