মোসলেহ উদ্দিন, উখিয়া(২৯ আগষ্ট) :: মিয়ানমারে সহিংসতার জের ধরে অব্যাহত রয়েছে রোহিঙ্গার আগমন। সারাদিন সীমান্তের বেড়ি বাঁধে বসে থাকার পর রাতের আধাঁরে কুতুপালং ক্যাম্পে ও বিভিন্ন গ্রামে ঢুকে পড়ছে। মিয়ানমারের আরাকানের বিভিন্ন গ্রামে অগ্নিকান্ড বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা থেকে দেখা যাচ্ছে।
আতংকিত রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের উখিয়ার বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে এপারে ঢুকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে আশ্রয় নিচ্ছে।
উখিয়া সংলগ্ন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্ত পয়েন্টে দিয়ে ১০ হাজারের বেশী রোহিঙ্গা প্রবেশের অপেক্ষায় আছে। ওই এলাকার জিরো পয়েন্টে প্রায় এক হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে গিয়ে বিজিবির হাতে আটকা পড়েছে।
সীমান্তে জড়ো হয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের আতঙ্কিত করতে মিয়ানমার বিজিপি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গুলি ছুঁড়েছে এবং বিজিপির ছোঁড়া তিনটি গুলি তুমব্রু বাজারে এসে পড়েছে। তবে কারও কোনো ক্ষতি হয়নি। দিশেহারা রোহিঙ্গাদের আর্তনাদে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে। বিজিবি সীমান্তে কড়া পাহারায় রয়েছে এবং অতিরিক্ত টহল জোরদার করেছে।
উখিয়ার পার্শ্ববর্তী ঘুমধুম, তুমব্রু, জলপাইতলীর নুরুল ইসলামের আমবাগান, পশ্চিমকুলের বাশঁ বাগান, পালংখালীর রহমতের বিল, ধামনখালী, বালুখালী পয়েন্ট দিয়ে দিন -দিন রোহিঙ্গারা জিরো পয়েন্টে জটলা বাধছে। সীমান্তের পরিস্থিতি দেখতে ২৭ আগস্ট রবিবার বিকালে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের ঘুমধুম জলপাইতলী এলাকা পরিদর্শণ করেছেন।
এদিকে প্রবেশকারী রোহিঙ্গারা টেকনাফের হোয়াইক্যং উলুবনিয়া, লম্বাবিল, খারাইংগ্যা ঘোনা, উখিয়ার পালংখালী এলাকা দিয়ে শত শত রোহিঙ্গা নাফনদী অতিক্রম করে সীমান্তের উপকূলীয় বিভিন্ন কেওড়া বনে লুকিয়ে থাকছে বলে জানা গেছে। এসব রোহিঙ্গারা রাতের আধারে প্রবেশ করে টেকনাফের লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প, নয়াপাড়া শারণার্থী ক্যাস্প, উখিয়া কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প, কুতুপালং ও বালুখালী অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাস্পে সুযোগ বুঝে আশ্রয় নিচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
প্রবেশকারী রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, মিয়ানমার সেনাবাহীনি ঘর বাড়ী জ্বালিয়ে দিচ্ছে। পুুরুষদের ধরে গুলি করে হত্যা করছে। মহিলাদের নির্যাতন ও ধর্ষণ করা হচ্ছে। রোহিঙ্গারা আতংকে পাহাড়, ধান ক্ষেতে ও বনজঙ্গলে পালিয়ে লুকিয়ে আছে। হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে। কিন্তু বিজিবি বাধা দেওয়ায় কেউ ঢুকতে পারছেনা। তারা রাতের আধারে বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান।
পালিয়ে আসা মিয়ানমারের ঢেকিবনিয়ার দিল মোহাম্মদ ও মিনারা বেগম জানান, সেনা বাহিনীরা গ্রামে ঢুকে অত্যাচার করছে। পুরুষদের ধরে নির্যাতন চালিয়ে গুলি করে হত্যা করছে। গ্রামে অগ্নি সংযোগ করে গোটা প্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে। অত্যাচারের মাত্রা দিন -দিন বাড়ছে, ফলে বাড়ছে উৎকণ্ঠাও।
Posted ১২:১৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ৩০ আগস্ট ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta