মোসলেহ উদ্দিন,উখিয়া(১১ জুলাই) :: ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের কারণে উখিয়ার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসময় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক সহ গ্রামীণ সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় প্রায় ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ ৫শ’ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানা খন্দকসহ সড়ক ভেঙ্গে কৃষি জমির সাথে একাকার হয়ে পড়ার কারণে যোগাযোগ ও শিক্ষা ব্যবস্থার মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিন রাজাপালং ইউনিয়নের চাকবৈঠা, ডেইলপাড়া, পূর্ব ডিগলিয়া, পশ্চিম ডিগলিয়া এলাকা ঘুরে গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টি ও জোয়ারের পানির তোড়ে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়ছিল। এসময় ঘরবাড়ি রক্ষার্থে গ্রামবাসী চলাচলের রাস্তা কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করায় এসব সড়কে ছোটখাট যানবাহন এমনকি রিক্সা চলাচল পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মীর সাহেদুল ইসলাম রোমান জানান, গ্রামবাসী স্ব-উদ্যোগে কিছু কিছু সড়ক সংস্কার করলেও যানবাহন চলাচলের উপযোগী হয়নি বিধায় যোগাযোগ ব্যবস্থার আশু উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারি অর্থ বরাদ্ধের প্রয়োজন রয়েছে।
পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী এলাকা আশার বাপের পাড়া, রহমতের বিল, আনজুমান পাড়া, বটতলী, তেলখোলা, মোছারখোলা সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় আকারের ভাঙ্গনের সৃষ্টি হওয়ায় প্রাথমিক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তুরের ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেন না।
তেলখোলা গ্রামের সমাজ কর্মী মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, তেলখোলা হয়ে থাইংখালী পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়ক ও ৩টি কালভার্ট ধ্বসে পড়ার কারণে বিশেষ প্রয়োজনের স্বার্থে গ্রামবাসী পায়ে হেটে যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করছে।
উপজেলা সহকারি প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আহসান উল্লাহ জানান, এলজিইডি, কাবিকা, কাবিটা, টিআর প্রকল্পের আওতায় নির্মিত প্রায় ৫শত কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
এদিকে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতির কারণে উখিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও ইবতেদায়ী শিক্ষা প্রতিষ্টানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রায়হানুল ইসলাম মিয়া জানিয়েছেন। থাইংখালী দাখিল মাদ্রাসা সুপার খাইরুল বশর জানান, বন্যায় তার মাদ্রাসাটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হওয়ায় পড়ালেখা বন্ধ রয়েছে।
উপকূলীয় এলাকার মাদারবনিয়া-ছেপটখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাস্টার মোক্তার আহমদ জানান, ঘূর্ণিঝড় মোরা ও সাম্প্রতিক সময়ের বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোসহ আসবাবপত্রের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখা চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থের বিবরণসহ একটি আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বাবু সুব্রত কুমার বড়–য়া জানান, বন্যায় অধিকাংশ স্কুল প্লাবিত হয়েছে। তাছাড়া যেসমস্ত স্কুলে পানি উঠেনি সেসব স্কুল গুলো আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হওয়ায় এসব স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
Posted ৯:৩১ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১১ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta