কক্সবাংলা ডটকম(৩ সেপ্টেম্বর) :: একাত্তরের জননী খ্যাত বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরী মারা গেছেন। সোমবার ভোর ৪টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ রমা চৌধুরী। ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। রোববার সন্ধ্যায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিউতে নেয়া হয়। এরপর রাতেই লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়। ওই অবস্থায়ই ভোরে মারা যান একাত্তরের জননী।
রমা চৌধুরী ১৯৩৬ সালের ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের ১৩ মে তিন শিশু সন্তান নিয়ে বোয়ালখালীর পোপাদিয়ার গ্রামের বাড়িতেই ছিলেন রমা চৌধুরী। ওই সময় এলাকার রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি বাহিনী রমা চৌধুরীর বাড়িতে হানা দেয়, ধর্ষণের পর তাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় হানাদাররা। আগুনে পুড়ে ওই দিন তার দুই ছেলে সাগর ও টগর মারা যায়।
‘একাত্তরের জননী’, ‘এক হাজার এক দিন যাপনের পদ্য’ এবং ‘ভাব বৈচিত্র্যে রবীন্দ্রনাথ’ সহ ১৮টি বই লিখেছেন রমা চৌধুরী। বই বিক্রির টাকা দিয়ে চলতো তার পরিবার। পাশাপাশি বই বিক্রির টাকা দিয়ে একটি অনাথআশ্রম খোলার ইচ্ছেও ছিল তার।
তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চট্টগ্রামে। শোক প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
গত বছর ডায়াবেটিকসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হলে তাকে ৪ বার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গত ২৫ ডিসেম্বর বাসায় পড়ে গিয়ে তার কোমরের হাড় ভেঙ্গে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তাকে চিকিৎসা না দিয়ে ৪ ঘন্টা ফেলে রেখেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এরপর কোনো চিকিৎসা না করিয়ে রমা চৌধুরী ক্ষুব্ধ হয়ে চমেক হাসপাতাল ছেড়ে প্রাইভেট মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি হন।
গত ১৪ জানুয়ারি রমা চৌধুরীকে দেখতে হাসপাতালে যান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তার চিকিৎসার খোঁজ খবর নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসার সব ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
১৫ জানুয়ারি রমা চৌধুরী ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
Posted ১:১৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta