হাবিবুর রহমান সোহেল,নাইক্ষ্যংছড়ি(১১ এপ্রিল) :: কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়ায় সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে জন্ম নিবন্ধন জালিয়াতি করে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আগামী শুক্রবার তার বিয়ে হওয়ার কথা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গর্জনিয়া ইউনিয়নের বড়বিল গ্রামের ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে একই ইউনিয়নের থোয়াংগেরকাটা গ্রামের প্রবাসি এক যুবকের (২৮) বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে।
আগামী শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে। কনের বাবা প্রবাসে থাকলেও তাঁদের পক্ষের লোকজন বিয়ের অনুষ্ঠানকে ঘিরে যাবতীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নুরুল ইসলাম কনের পরিবারের বরাত দিয়ে বলেন, ‘নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারী উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়লেও মেয়ের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ায় নাকি বিয়ে ঠিক করেছেন। এ সংক্রান্ত অনলাইনের জন্ম তথ্য যাচাই পত্রও তাকে দেখিয়েছেন।’ এ বিষয়ে ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
বাইশারী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রিবাস চন্দ্র দাশ বলেন, মেয়েটি তাঁদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। তার শ্রেণি ক্রমিক নাম্বার ২৩। ছাত্রীর বিয়ের বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। তবে ছাত্রীটি এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যালয়ে আসছে না। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন আগে তাঁর কাছে ওই মেয়েটির পরিবারের লোকজন জন্মনিবন্ধন সনদে বয়স বাড়াতে এসেছিলেন। তিনি বলেছেন, তা অসম্ভব। মেয়েটি সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী হওয়ায় এবং ১৮ বছর হওয়ার কোনো কাগজপত্র না দেখাতে পারায় তিনি জন্মনিবন্ধন সনদ দেননি।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানান, ইউপি চেয়ারম্যান ছাত্রীটির জন্ম নিবন্ধন সনদে বয়স না বাড়ালেও ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালত সহকারি মাওলানা জাবেরের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকায় অনলাইনে জন্ম তথ্য যাচাই পত্রে বয়স ১৯ করেছেন। যে পত্রটিতে কোন ধরনের ইউনিয়ন কোড বা স্ব ওয়ার্ডের বালাম নাম্বার নেই। বিষয়টি যথাযথ নিয়মে তদন্ত করলেই প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব।
গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত পরিদর্শক কাজি আরিফ উদ্দিন বলেন, এই বাল্যবিবাহ বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.শাজাহান আলি বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধের পাশাপাশি বেআইনিভাবে অনলাইনে কিভাবে বয়স বাড়ানো হয়েছে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।