শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের জন্য সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ চান ব্যবসায়ীরা

বৃহস্পতিবার, ০৪ নভেম্বর ২০২১
329 ভিউ
কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের জন্য সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ চান ব্যবসায়ীরা

বিশেষ প্রতিবেদক :: এমনিতেই করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা পড়েছে দেশের প্রধান পর্যটন নগরী কক্সবাজারে। সেই প্রভাব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন পর্যটনশিল্পের সঙ্গে জড়িত সবাই। কিন্তু তাঁদের সেই চেষ্টায় ছেদ পড়েছে জেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে। এই দ্বন্দ্বের জের ধরে এক দফা কক্সবাজার অচল হয়েছে, আবারও অচল হতে পারে– এমন আশঙ্কা তাঁদের।

পর্যটনশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত রোববারের ঘটনায় অনেক পর্যটক আতঙ্কিত হয়ে কক্সবাজার ছেড়েছেন। অনেকে তাঁদের বুকিং বাতিল করে দিয়েছেন। পর্যটনের ভরা মৌসুমে এই অবস্থা চলতে থাকলে জেলার পর্যটনশিল্প বিপাকে পড়বে। তাঁরা বলছেন, এই শিল্প বিকাশের জন্য সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ থাকা খুবই জরুরি।

কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মোনাফ সিকদারকে হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানকে। এর প্রতিবাদে মেয়রের কর্মী-সমর্থকেরা গত রোববার কক্সবাজার শহর অচল করে দেন। শহরে যেসব পর্যটক ছিলেন, তাঁদের অনেকেই রাতের খাবার পর্যন্ত খেতে পারেননি। অনেক পর্যটক আতঙ্কিত হয়ে শহর ছাড়েন।

ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং প্রধান পর্যটন নগরীর মেয়রের বিরুদ্ধে একটি মামলা হতেই এভাবে শহর অচল করে দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক? এ প্রশ্ন করতেই মেয়র মুজিবুর বলেন, ‘এ দায় আমার নয়। যারা আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে, এটা তাদের দায়।’ তিনি মামলা করার উসকানিদাতা হিসেবে কক্সবাজার-১ আসনের সাংসদ জাফর আলমের নাম বলেন।

মেয়রের অভিযোগ সম্পর্কে কক্সবাজার-১ আসনের সাংসদ জাফর আলম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ঠিক না। আমি চকরিয়া-পেকুয়ায় পড়ে থাকি। এ ঘটনা যিনি ঘটিঢেছেন, তাঁকে ধরলেই গডফাদার কে তা বের হয়ে যাবে।’

তাহলে শহরের পরিস্থিতি এত খারাপ হওয়ার দায় কার? মুজিবুরের কাছে এ প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ‘আমার নামে মামলা হয়েছে শুনে ভক্তরা কক্সবাজার শহরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ করে। আমি কাউকেই বলিনি এই প্রতিবাদ সভা করার জন্য। বরং আমি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সবাইকে আন্দোলন না করার জন্য বলেছি।’

কক্সবাজারের বাসিন্দারা বলেছেন, এই বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে শহরের সুগন্ধা পয়েন্টের ১ একর ১০ শতক জমির দখল নিয়ে। জমিটির অর্ধেকের দখল আছে মেয়রের অনুসারী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরোয়ার কাবেরী ও আতাউল্লাহ সিদ্দিকীর। আর বাকি অর্ধেকে আছেন সুগন্ধা শুঁটকি মার্কেট নির্মাতা ওবাইদুল হোসেন ও মোনাফ সিকদাররা।

এই দখলের সমাধান নিয়ে এর আগে মেয়র মুজিবুর রহমানের কাছে নালিশ করেন আতাউল্লাহ সিদ্দিকী। মেয়র জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য তিনি চাচাতো ভাই রাশেদকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এই জমি নিয়ে দুই পক্ষ বিভিন্ন সময়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এতে পৌর মেয়রের বিরোধী পক্ষের লোকজনরা মোনাফ সিকদারের পক্ষে অবস্থান নেয়। এতে পরিস্থিতি জটিল হয়ে যায়। তারই জের ধরে হামলা ও মামলায় অচল হয় কক্সবাজার।

সুগন্ধা পয়েন্টের এক রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী মঙ্গলবার রাতে বলেছেন, রোববারের আন্দোলনের প্রভাব এখনো রয়ে গেছে। কেনাবেচা অর্ধেকে নেমে এসেছে।

বিচের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের একই বক্তব্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সৈকতকর্মী বলেন, শীতে কক্সবাজারে পর্যটক আসে বেশি। করোনার প্রভাবের কারণে প্রায় দীর্ঘ সময় পর্যটক সমাগম নিষিদ্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষে পর্যটকের উপস্থিতি বাড়ে অনেকাংশে। কিন্তু রোববারের ঘটনার পরে পর্যটকের উপস্থিতি কমেছে।

রোববারের আন্দোলনের প্রভাব কক্সবাজারের পর্যটনশিল্পে পড়েছে বলে স্বীকার করেন মেয়র মুজিবুর রহমানও। এই ঘটনার পর উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে নগরীর হিল টাউন সার্কিট হাউসে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তাফা, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান ও কক্সবাজার-২ আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক। সেখানে প্রশাসনের কর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নেতাদের অনুরোধ জানান।

বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা কর্মকর্তাদের বলেন, ‘আমরা কেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করব? যারা মামলা করেছে, তাদের বলেন এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে।’ তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধ মোনাফ সিকদার ছাত্রলীগের দুঃসময়ের নেতা ছিলেন। সুগন্ধা পয়েন্টের যে জায়গাটি নিয়ে বিরোধ, তার মূল মালিকানা জেলার চকরিয়ার ছায়েরা খাতুনের। তিনি মারা গেছেন। তাঁর সন্তানেরা বেঁচে থাকলেও জায়গায় দখল নিতে পারেননি।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন, কাজের চাপ, পারিবারিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে মানুষ কক্সবাজারে বেড়াতে আসে। এসব ঘটনা পর্যটকদের আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছে। কক্সবাজারের নিরাপত্তা বাড়াতে প্রশাসনের আরও মনোযোগী হওয়া দরকার।

 

329 ভিউ

Posted ২:৫৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৪ নভেম্বর ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com