দীপক শর্মা দীপু(২৬ জানুয়ারী) :: দেশে প্রথম ইকো এ্যাডভেঞ্চার হয়েছে কক্সবাজারের ফাঁসিয়াখালি বন্যপ্রানী অভয়ারন্য ও মেদাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যানে। নিরবে নিরাপত্তায় বন্যপ্রানী দেখার পাশাপাশি নানা ইকো এ্যাডভেঞ্চারের নানা ব্যতিক্রম আইটেম রয়েছে। ১৭০০ হেক্টর বনভূমিতে গড়ে উঠা দেশের প্রথম ইকো অ্যাডভেঞ্চার উদ্বোধনের মাধ্যমে উন্মুক্ত হলো।
উদ্বোধন করেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী। তিনি বলেন, এই ইকো অ্যাডভেঞ্চার পার্ক পর্যটনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। সারা পৃথিবীতে প্রকৃতি পর্যটকদের আকর্ষন করে। প্রচার প্রসার হলে প্রকৃতি পর্যটন সম্প্রসারনে এটি হবে মাইলফলক।
আলোচনা সভা, প্রতিযোগিতা আর পুরস্কার বিতরণসহ নানা আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপ-প্রধান সংরক্ষক ও ক্রেল প্রকল্পের পিডি আবদুল লতিফ মিয়া, চট্রগ্রামের বন সংরক্ষক ড. জগলুল হোসাইন, ক্রেল ডিসিওপি আবু মোস্তফা কামাল, দক্ষিণ বনবিভাগীয় কর্মকর্তা মো: আলী কবীর, উত্তর বন বিভাগীয় বন কর্র্র্র্র্র্র্মকর্তা হক মাহবুব মোর্শেদ, চকরিয়ার ইউএনও মোহাম্মদ শিবলী নোমান।
নেকম-ক্রেল প্রকল্পের চকরিয়া সাইট অফিসার মো: আবদুল কাইয়ুমের পরিচালনায় উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন নেকম-ক্রেল প্রকল্পের সমন্বয়কারি আবদুল মান্নান, ক্রেল কমিউনিকেশন ম্যানেজার ওবায়দুল ফাতাহ তানভীর, এসিল্যান্ড কে এমডি ইকতিয়ার উদ্দিন, এসিএফ বেলায়েত হোসেন, পরিবশে অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক সাইফুল আশ্রাফ ও মেদাকচ্ছিপিয়া ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন।
ইকো অ্যাডভেঞ্চার দেখা মেলবে মেছো বাঘ, হাতির পাল, বানর, উল্টো লেজ বানর, বনবিড়াল, খাটাশসহ শত প্রকার বন্যপ্রানী, বনমোরগ. শুষক, ঈগল, সবুজ ঠোট, ফিংগে, চিল, শ্যামাসহ দেড়শতাধিক প্রজাতির পাখি, গুই সাপ, হ্যাজা সাপসহ নানা প্রজাতির সাপ, নানা বিরল প্রজাতির বন্যপ্রানী। তাও আবার দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় রেখে। তবে শর্ত হচ্ছে দর্শকদের নিরবতা পালন।
শুধু তাই নয় বন ভ্রমণকারিদের জন্য রয়েছে ইকো এ্্যাডভেঞ্চার। এর মধ্যে অনেক নতুন এ্যাডভেঞ্চার রয়েছে যা অত্যন্ত রোমাঞ্চকর। একদিকে বনের ভিতর বন্যপ্রানী দেখার সুযোগ অন্যদিকে রোমাঞ্চকর ইকো এ্যাডভেঞ্চারে নিজেদের মাতিয়ে রাখতে পারবে প্রকৃতি প্রেমি ভ্রমণকারিরা। যা বাংলাদেশে প্রথম। এমন তথ্য দেন কক্সবাজার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উত্তর) মাহবুব মোরশেদ।
বাংলাদেশে প্রথম পর্যটক আর দর্শনার্থীদের জন্য ইকো এ্যাডভেঞ্চার ব্যবস্থাপনা করছে ন্যাচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (ুনেকম) এর ক্রেল প্রজেক্ট।
ন্যাচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম) এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারি মো: আলম খান জানান, কক্সবাজারের মেদাকচ্ছপিয়া জাতীয় উদ্যান ও ফাঁসিয়াখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে হচ্ছে এ ইকো এ্যাডভেঞ্চার। ২৪ জানুয়ারী থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পর্যটকসহ সকল দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। তবে অবশ্যই বন্যপ্রানীদের স্বার্থে কিছু শর্ত পালন করতে হবে দর্শনার্থীদের।
নেকম এর সাইট অফিসার মো: আবদুল কাইয়ুম জানান, বিশাল বনাঞ্চলে যে সব এ্যাডভেঞ্চার রয়েছে তা হচ্ছে. ট্রি এ্যাডভেঞ্চার, সাইক্লিন, হৃদে বোটিং, ফিসিং, টি হাউজ, ইকো হাউজ, তাবু জলসা, হেমগ, গাছে ঝুলা, ট্রেল হাইকিং, পর্যবেক্ষণ টাওয়ারসহ ব্যতিক্রম এ্যাডভেঞ্চার।
তিনি আরো জানান, রাতে বা দিনে গাছের মাছায় উঁচু স্থানে নিরাপদে বন্য প্রানী দেখা, রাতে গাছে রাত্রিযাপন। ঝুলিয়ে এক গাছ থেকে অন্য গাছে যাওয়া, গাছের দোলনায় গা দুলিয়ে দেয়াসহ প্রকতির কোলে বিশ্রাম নেয়ার অনন্য সুযোগ। দর্শনাথীদের জন্য ইকো ট্যুর গাইড রয়েছে। তা ছাড়া রয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ।
মেদাকচ্চপিয়া বিট অফিসার সৈয়দ আবু জাকারিয়া জানান, এটি বাংলাদেশের বৃহৎ মাদার গর্জন বাগান। উঁচু নিচু পাহাড়, সমতল এলাকা নিয়ে ৩৯৫.৯৩ হেক্টর বনভুমিতে গর্জন ছাড়াও ডুম্মর, বহেড়া, অর্জন, বাঁশঝাড়, বেত, বাদাম, চাতিমসহ নানা প্রকারের গাছ রয়েছে। যা পর্যটকদের ভ্রমণে আকৃষ্ট করবে। এই বনভূমি রক্ষা করা হয়েছে জীবন ঝুঁকি নিয়ে।
ফাঁসিয়াখালির বিট অফিসার এস এম এনামুল হক জানান, ফাঁসিয়াখালি অত্যন্ত ঘন বন। এখানে বিরল প্রজাতির শুষক পাখি, বিরল প্রজাতির উল্টো লেজ বানর রয়েছে। রয়েছে হাতির প্রজনন স্থান। নিরবে হাটা আর উঁচু স্থানে অবস্থান করে নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী দেখার সুযোগ রয়েছে।
ইকো এ্যাডভেঞ্চার বিষয়ে অবহিত করার জন্য প্রকৃতি পর্যটন প্রসারে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় ও প্রকৃতি পর্যটন স্থান পরিদর্শনের আয়োজন করে ।
এতে বক্তব্য রাখেন ক্রেল আঞ্চলিক সমন্বয়কারি মো: আলম খান, ফাঁসিয়াখালির বিট অফিসার এস এম এনামুল হক, মেদাকচ্চপিয়া বিট অফিসার সৈয়দ আবু জাকারিয়া, সহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবুল হোসেন, সদস্য আক্তার কামাল, জাহাঙ্গীর আলম আকাশ, মকতুল হোসেন।
সভা পরিচালনা করেন ক্রেল সাইট অফিসার মো: আবদুল কাইয়ুম। এতে বক্তারা বলেন, প্রকৃতি নিয়ে পর্যটনের সম্প্রসারণ এটি হবে মাইলফলক।
Posted ১:৪৪ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৭ জানুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta