রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজারের শরনার্থী শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গাদের মিছিল ও সমাবেশ : রোহিঙ্গা ধর্ষণ-হত্যার সুবিচার দাবী

শনিবার, ২৫ আগস্ট ২০১৮
367 ভিউ
কক্সবাজারের শরনার্থী শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গাদের মিছিল ও সমাবেশ : রোহিঙ্গা ধর্ষণ-হত্যার সুবিচার দাবী

কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৫ আগস্ট) :: আজ ২৫ আগষ্ট মিয়ানমারের রাখাইনে ২৪টি সীমান্ত চৌকিতে স্বশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলার জেরধরে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের হত্যা,ধর্ষণ ও নৃশংস হামলার এক বছর। গত বছরের এদিনে এই সন্ত্রাসী হামলার সুত্রধরে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী, সীমান্তরক্ষী, নৌ-সদস্য ও উগ্র রাখাইনদের হাতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু ধর্ষণ এবং নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার হয়। এ ঘটনায় নিজ ভূমি থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা। আর বাংলাদেশের কক্সবাজার সীমান্তে রোহিঙ্গা ঢল শুরুর এক বছর পূর্ণ হয়েছে আজ।

তাই ঘটনাবহুল এ ২৫ আগস্টকে কালো দিন আখ্যায়ীত করে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে কক্সবাজারের শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে।

শনিবার সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বেশ কয়েকটি শরনার্থী ক্যাম্পে এ কর্মসূচী পালন করা হয়। উখিয়ায় অবস্থানরত রোহিঙ্গারা সেদিনের ঘটনার বিচার চেয়ে ও নিরাপদে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার দাবি জানিয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উখিয়ার কুতুপালং বাজারের সামনের প্রধান সড়কে মাথায় লাল ফিতা বেধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।এছাড়া বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে উখিয়ার কুতুপালং বাজার, মধুছড়া, লম্বাশীয়া, জামতলী, তাজনিমারখোলাসহ আরও ১০টি ক্যাম্পে। তাদের দাবী একটাই সম্মানের সাথে তাদের ফিরিয়ে নিয়ে তাদের অধিকার বুঝিয়ে দিতে হবে। মায়ানমারে নির্যাতনের স্বীকার রোহিঙ্গারা তাদের নির্যাতনের বিচার চায়। রাখাইনে তারা সহায় সম্বল নিয়ে বাঁচতে চায়। অধিকার ছাড়া তারা মায়ানমারে ফিরে যাবেনা।

এদিকে কালোদিবস উপলক্ষে কুতুপালং ক্যাম্পের ব্লক-৩ এ আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ আমাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমরা কতদিন এদেশে থাকবো? আমরা দিনে দিনে এদেশের বোঝাতে পরিণত হচ্ছি। তাই আমরা ফিরে যেতে চাই স্বদেশে। আন্তর্জাতিক মহলকে অনুরোধ, মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ করুন যাতে সরকার দ্রুত আমাদের নিয়ে যায়। নিরাপদ প্রত্যাবাসন বিলম্ব করতে মিয়ানমার সামরিক জান্তা টালবাহানা শুরু করেছে। বিশ্বমোড়লরা কেন মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর বিষয়ে নিশ্চুপ এটি আমাদের মাথায় ঢুকছে না।তবে বিক্ষোভটি কারা আয়োজন করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নায্য অধিকার আদায়ের জন্য কোনো কিছুই আয়োজন করতে হয় না। এখানে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসেছে।

বিক্ষোভ মিছিলে থাকা মোঃ আয়ুব নামের এক রোহিঙ্গা বলেন, আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই আমরা আজকের এই বিক্ষোভ করেছি। আমরা কি চাই তাই জানানোর জন্যই আমাদের এই প্রয়াস। তিনি আরও বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। নিজ দেশে ফিরে যেতে চাই। আর সেজন্য আন্তর্জাতিক মহলের সহযোগিতা চাই। আমরা সেদিন ঘটনার জন্য দোষীদের বিচার চাই।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, বছর ঘুরে চলে এলো সেই কালোদিন। এ দিনটিকে আমরা কালদিবস হিসেবে পালন করবো। এই দিনে আমরা সব ধরনের কাজকর্ম থেকে বিরত থাকবো। ঘরে রান্নাবান্নাও হবে না। ওই নেতা আরও বলেন, ৩০টি ক্যাম্পের সব ব্লকেই কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে নিরাপদে স্বদেশে ফেরার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করা হচ্ছে।

এবিষয়ে জানতে চাইলে উখিায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান জানান, নিরাপদে স্বদেশে ফেরার দাবিতে রোহিঙ্গারা বিক্ষোভ করছে। তাই ক্যাম্পগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বার্তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

অপরদিকে সকাল ৯টা হতে টেকনাফের রইক্ষ্যং পুটিবনিয়া, হ্নীলার আলীখালী, লেদা, নয়াপাড়া, শালবন, জাদিমোরা, দমদমিয়ায় ও বাহারছড়ার শামলাপুর বস্তিতে রোহিঙ্গারা মিছিল-সমাবেশ করেছে। ক্যাম্পে নিয়োজিত আইন-শৃংখলা বাহিনীর চাপে তারা কোণঠাসা হয়ে থাকলেও পুটিবনিয়া এবং শালবনে রোহিঙ্গাদের বিরাট বিক্ষোভ মিছিল তাদের ক্যাম্প আভ্যন্তরীণ সড়ক সমুহ প্রদক্ষিণ করেন। এরপর নির্দিষ্ট স্থানে সমাবেশ করে।

এতে রোহিঙ্গারা সরকারী বাহিনীর হাতে নারী ধর্ষণ, শিশু ও নিরীহ রোহিঙ্গা হত্যাকারীদের আর্ন্তজাতিক আইনের আওতায় এনে সুবিচার দাবী করা হয়। এছাড়া নিরাপত্তা, নাগরিক সুবিধা, ফেলে আসা সম্পত্তি ফেরত ও রাষ্ট্রের অংশ-গ্রহণমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ দিলে বাংলাদেশে অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফিরে যেতে আগ্রহী বলে মত প্রকাশ করেন।বিক্ষোভে রোহিঙ্গারা স্লোগানে নিরাপদে স্বদেশে ফেরত যাওয়ার কথা বলে।

এদিকে একটি মহলের দাবী, ক্যাম্প অভ্যন্তরে আশ্রয় নেওয়া আরসা গ্রুপ সদস্যদের প্ররোচনা ও উস্কানিতে এসব হয়েছে।

এই বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল হোসেন জানান, এই বিষয়টি সরকারের নজরে রয়েছে। তবে এই ঘটনায় কেউ ক্যাম্পের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা করলে কঠোর হাতে দমন করা হবে।

উল্লেখ্য,২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট রাতের প্রথম প্রহরে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিম রাজ্যের পাহাড়ের পূর্ব পাশে রাশিদং, রাজারবিল, বড়ছড়া, আন্দাম, ধুপমাইল, কুল্লুং, শীতাইক্যা, মন্ডুর মেরুল্লা, হাসছুরাতা, বাগঘোনা, তালাসখ, রাবাইল্যা, ঝিমংখালী, কুয়াংছিপং, তুমব্রু, ক্যাংবং, বুচিদংস্থ টংবাজার, মিংনিশি, পীরখালী, মগডিল, বলী বাজার, ফৈরা বাজার, কুয়ারবিল, মন্ডুর হাইন্ডার পাড়াসহ ২৪টি এলাকার সীমান্ত চৌকি ও সেনা ঘাটিতে স্বশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে। এই সময় হামলাকারী ও সরকারী বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি এবং সংঘর্ষের সুত্রপাত হয়ে পুরো এলাকায় ছড়িয়ে থেমে থেমে লড়াই চলতে থাকে।

এ ঘটনায় রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। আর জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের হিসাব অনুযায়ী মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের কক্সবাজার সীমান্তে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১২ লাখে দাঁড়িয়েছে। তাই এই দিনটি কালোদিন হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন রোহিঙ্গারা। এসব হত্যার বিচার ও নিরাপদ প্রত্যাবাসনের দাবিতে তাদের এ কমসূচী।

367 ভিউ

Posted ৪:৩৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৫ আগস্ট ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com