রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজারের শরনার্থী শিবিরে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়াচ্ছে রোহিঙ্গারা : একবছরে ২১টি হত্যাকান্ড

সোমবার, ২৭ আগস্ট ২০১৮
383 ভিউ
কক্সবাজারের শরনার্থী শিবিরে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়াচ্ছে রোহিঙ্গারা : একবছরে ২১টি হত্যাকান্ড

কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৬ আগস্ট) :: কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রিত শরণার্থী শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গারা দিন দিন অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠছে। ২০১৭ সালে ২৫ আগস্টের পর থেকে শরণার্থী শিবিরগুলোতে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে।এছাড়া ক্যাম্পের বাইরে জেলার একাধিক উপজেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবাস রয়েছে আরও প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা।

সরকারের নানা তৎপরতা, দেন-দরবার আর কঠোর ব্যবস্থার ঘোষণার মধ্যেই এ অঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে অবৈধ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা।আর এই বিপুল রোহিঙ্গাকে স্থানীয় প্রশাসন সামাল দিতে হিমশিম খাওয়ার সুযোগ নিয়ে শরণার্থী ক্যাম্পে বসেই এদের অনেকে জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ।

ইতিপূর্বে রোহিঙ্গা শিবির এলাকা থেকে বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার, রোহিঙ্গাদের হাতে রোহিঙ্গা খুন, তাদের হামলায় আহত ব্যক্তির মৃত্যুসহ গত এক বছরে ২১টি হত্যাকান্ড সহ নানা অপরাধমূলক ঘটনার জন্ম দিয়েছে রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা এসব মানুষেরা। এছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে ইয়াবাসহ ধরা পড়ছে আশ্রিত রোহিঙ্গারা।আর মিয়ানমারের এসব রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় লোকজন অসহায় হয়ে পড়ছে দিন দিন।

এছাড়া রোহিঙ্গারা অবাধে বাংলাদেশি সিম ব্যবহার করার কারণে সহজে নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে যাচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।কারণ আগের তিন দফায় প্রবেশকৃত রোহিঙ্গাদের কারও কারও জঙ্গি তৎপরতাসহ জেলার ৮০ শতাংশ অপরাধে রোহিঙ্গাদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশের তথ্যমতে, রামুতে বৌদ্ধ বিহারে সন্ত্রাসী হামলায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। রোহিঙ্গারা জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম, মাদক পাচার, মানব পাচার, অস্ত্র বেচাকেনা, ধর্ষণ, ভাসমান পতিতাবৃত্তি, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, চোরাকারবারি, চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই ইত্যাদি অপরাধ কর্মকান্ডে যুক্ত । পক্ষান্তরে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে মানব পাচার, নারী ও শিশু পাচার, ধর্ষণ, ছিনতাই, শারীরিক নির্যাতন, যৌন নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধের জড়িয়ে পড়ছে।এছাড়াও রোহিঙ্গাদের কারনে কক্সবাজারের সীমান্ত এলাকার শিক্ষা,সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা মারাত্বক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।

সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট থেকে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা গত এক বছরে ২১টি হত্যাকান্ড সহ মোট ২৩৮ টি অপরাধে জড়িয়েছে । খুনের পাশাপাশি ধর্ষণ, অপহরণ, চোরাচালান, ডাকাতির প্রস্তুতির মতো অপরাধও রয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের তথ্যমতে, গত ১৭ আগস্ট পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বা স্থানীয়দের সঙ্গে ফৌজদারি অপরাধে জড়িয়ে পড়ায় ক্যাম্পে ২৪৬টি মামলা হয়েছে। টেকনাফ ও উখিয়া থানায় দায়ের ১৭ ধরনের মামলার ৪৭১ রোহিঙ্গাকে আসামি করা হয়েছে। তবে পুলিশের খাতায় আসামিরা পলাতক!

পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, গত এক বছরে ক্যাম্পে ১২টি অস্ত্র মামলায় আসামি ২৭ জন, ৮২টি মাদক মামলায় আসামি ১২২ জন, ৬টি ধর্ষণ মামলায় আসামি ৭ জন, একটি গণধর্ষণ মামলায় আসামি ৩ জন, ১০টি ফরেনার্স অ্যাক্ট মামলায় আসামি ১২ জন, ৪টি অপহরণ মামলায় আসামি ২৫ জন, ৫টি চোরাচালান মামলায় আসামি ১০ জন, দুটি চুরি মামলায় আসামি ৩ জন, ৬টি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলায় আসামি ১৯ জন, ২২টি হত্যা মামলায় আসামি ৬১ জন, অন্যান্য ৯৬ মামলায় আসামি ১৮২ জন।

এসব পরিসংখ্যানই বলে দেয় রোহিঙ্গাদের নিয়ে এখন আর স্বস্তিতে নেই কক্সবাজারবাসী। খাদ্য-বাসস্থানের সংস্থান আর তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানোর ইস্যুতে বাংলাদেশের মাথাব্যথার বিষয়টি বেশ কিছুদিন ধরেই স্পষ্ট। হঠাৎ একটি নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়ে যে মানবিকতা বাংলাদেশ দেখেয়েছিল, তা এখন গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়েই দেখা দিয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সংস্থার একাধিক সূত্রে স্বীকার করা হয়েছে, রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এসে উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ ইয়াবাপাচার, ডাকাতি ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। জানা গেছে,বর্তমানে টেকনাফ ও উখিয়ার ৩০টি আশ্রয় শিবির রয়েছে। এরমধ্যে উখিয়ায় ২৩টি ও টেকনাফে ৭টি।আর আশ্রয় শিবিরগুলোতে নতুন-পুরাতন মিলে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। দুইটি উপজেলায় টেকনাফ ও উখিয়া থানা পুলিশের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তায় ৫টি নতুন পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে ৩২টি চেকপোস্ট রয়েছে। তারপরও রোহিঙ্গারা যত্রতত্র চলাফেরাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে।

সূত্র মতে, টেকনাফ বাহারছড়া, উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালং ক্যাম্পে রোহিঙ্গারা মাদকের আস্তানা গড়ে তুলেছে। টেকনাফের শামলাপুর ক্যাম্পটি সমুদ্র ঘেঁষা হওয়ায় ইয়াবা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত রোহিঙ্গারা সাগর পথে ইয়াবার চালান এনে ঢুকাচ্ছে ওই ক্যাম্পে। আবার সীমান্ত থেকে অতি কাছাকাছি হওয়ায় রোহিঙ্গারা বালুখালী ও কুতুপালং ক্যাম্পে ইয়াবার চালান এনে সরবরাহ দিচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। আর এ ইয়াবা ব্যবসার বিরোধ নিয়ে রোহিঙ্গা শিবিরে অনেকগুলো খুনের ঘটনাও ঘটেছে। ইয়াবা বিক্রির টাকা ও কমিশন ভাগাভাগি নিয়ে শিবিরগুলোতে প্রতিদিনই কোনো না-কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। গত বছর আগস্টের শেষ দিকে রোহিঙ্গা শরণার্থী আসা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত উখিয়া ও টেকনাফ থানায় রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মাদক-সংক্রান্ত মামলা হয়েছে ৭৯টি।

পুলিশের সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৩ জুলাই মাসে টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের পাশের একটি পাহাড়ি ছড়া থেকে শামসুল হুদা ও রহিম উল্লাহ নামে দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এর আগে গত ১৮ জুন রাত ৮টার দিকে রোহিঙ্গাদের শীর্ষস্থানীয় নেতা (হেড মাঝি) আরিফ উল্লাহ নিজ বাসায় ফেরার পথে বালুখালী রাস্তার উপরে দুর্বৃত্তরা তাকে গলাকেটে হত্যা করে। এ সময় সে প্রাণে বাঁচার জন্য চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।

১৭ মার্চ কুতুপালং ক্যাম্পে প্রতিপক্ষরা হাতুড়ি দিয়ে নির্মমভাবে নুর হাকিম (৩৫) নামে এক সাধারণ রোহিঙ্গাকে প্রকাশ্য হত্যা করে। তার দোষ, সে নাকি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন খবরাখবর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরবরাহ করতো। এ কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

এছাড়া ১৬ মার্চ থাইংখালী তাজনিমারখোলা ক্যাম্পের জঙ্গল থেকে পুলিশ অজ্ঞাতনামা এক রোহিঙ্গা মৌলভীর লাশ উদ্ধার করে।

২ মার্চ রাত ৮টার দিকে কুতুপালং ক্যাম্পের ই ব্লকের বাসিন্দা আবু তাহের (৩০) কুতুপালং বাজার থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার সময় দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।

গত ১৯ ফেব্রুয়ারি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ির এক পর্যায়ে স্বামীর হতে খুন হয় স্ত্রী রেনুয়ারা বেগম (৩২) পুলিশ ঘাতক স্বামী মোঃ হোছনকে গ্রেফতার করে।

২৩ জানুয়ারি ভোর রাতে বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মসজিদের ইমাম ইউছূপ জালাল (৬০) আযান দেওয়ার জন্য মসজিদে আসার সময় ৫-৬ জন দুর্বৃত্ত পেছন থেকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করলে তিনি ঘটনাস্থলে মারা যান।

২১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাখাইনে সাতগরিয়া পাড়ার হুকাট্টা (চেয়ারম্যান) মোহাম্মদ ইউছূপ (৪৬) থাইংখালী তাজনিমারখোলা ক্যাম্পের নিজ বাড়িতে বসে পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে আলাপচারিতা কালে কে বা কারা গুলি করলে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান।

১৩ জানুয়ারি কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পের ডি-৪ ব্লকে বাসিন্দা মমতাজ আহমদ (৩৫) দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে ৫ থেকে ৬ জন দুর্বৃত্ত তাকে অপহরণ করে পার্শ্ববর্তী মধুরছড়া জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে হাত-পা বেধে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর উখিয়ার কুতুপালং এলাকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একে অপরের হামলায় এক রোহিঙ্গা খুন হয়।

৭ অক্টোবর কুতুপালংয়ের একটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকার পার্শ্ববর্তী তেলপাড়া খাল থেকে এক অজ্ঞাত রোহিঙ্গার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

গত ২ অক্টোবর শিবিরের বস্তিতে সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা স্বামী নুর মোহাম্মদ পিটিয়ে হত্যা করে তার স্ত্রী খতিজা খাতুনকে (২৫)।

৪ অক্টোবর রাতে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী রোহিঙ্গাদের হামলায় নিহত হয় শরণার্থী জাহেদা বেগম (৩৫) এবং আহত হয় আরো ৪ জন।

৭ অক্টোবর কুতুপালংয়ের একটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকার পার্শ্ববর্তী তেলপাড়া খাল থেকে এক অজ্ঞাত রোহিঙ্গার বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

১০ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গা শরণার্থী হোছন আহাম্মদের নির্যাতনে খুন হয় তিন সন্তানের জননী স্ত্রী হাসিনা আকতার (৩০)।

এছাড়া কুতুপালং এলাকায় মধুরছড়ায় রাখাইনের এক হিন্দু শরনার্থীকে হত্যা করে মাটিতে পুতে ফেলার অভিযোগ রয়েছে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে।এর বাইরে প্রায় প্রতিদিন উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন ধরনের অপরাধমুলক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকে বলে জানান স্থানীয়রা।

তবে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতারা বলছেন, উখিয়া-টেকনাফের সব রোহিঙ্গা শিবিরে অপরাধমূলক কর্মকান্ড হচ্ছে এটা ঠিক নয়। কয়েক শিবিরে কিছু ঘটনা ঘটাচ্ছে কিছু অসাধু রোহিঙ্গা চক্র। তাদের জন্য সব রোহিঙ্গার দুর্নাম হচ্ছে। তাদেরকে আইনের আওতায় আনলে সব রোহিঙ্গা দুর্নাম থেকে বেঁচে যাবে। তবে তাদের সঙ্গে কিছু স্থানীয় লোকজনও জড়িত থাকার কথাও জানান তারা।

এ ব্যাপারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ইউনিয়ন পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী আশ্রিত রোহিঙ্গাদের অপরাধ কর্মকান্ড নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে কক্সবাংলাকে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের কারণে আজ উখিয়া-টেকনাফের মানুষ সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে। এতে স্থানীয়দের নিরাপত্তা দিন দিন ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।গত এক বছরে ২১ জন খুন হয়েছে,সামনের দিনগুলোতে আরও বেশি খুন হতে পারে। কারণ কমিউনিটি পাওয়ার মানুষকে হিংস ও অপরাধী করে তোলে। এসব বিষয়ে এখন ভাবার সময় এসেছে।’ তিনি আরও বলেন,বালুখালীতে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা নিয়ন্ত্রণে ৫টি পুলিশ ক্যাম্পের লোকবল যথেষ্ট নয়। তারপরও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী দমনে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে এলাকাবাসী খুশি। এলাকার মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না। কারণ ক্যাম্পে কর্মরত কতিপয় এনজিও মানবিক সেবার নামে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রত্যাবাসন বিরোধী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে লালন পালন করায় তারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। গত ১ বছরে উখিয়ায় যেসব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে টেকনাফের হ্নীলা ইউয়িনের চেয়ারম্যান এইচএম আনোয়ারী কক্সবাংলাকে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মানবিক চিন্তা থেকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা এখন অপরাধের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি গত বছর স্থানীয় ইউপি সিরাজুল ইমলামকে রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকি গুলি করে হত্যা করেছিল। পাশাপাশি নিজেদের দ্বন্দের কারণে খুন,অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা। তবে তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে কিছু স্থানীয় চক্র। তাদের কারণে প্রতিনিয়ত আমাদের বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।’

উখিয়াা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের কক্সবাংলাকে বলেন, ‘নানা কারণে রোহিঙ্গারা অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। এদের অনেকের কোনো পিছুটান নেই। ক্যাম্পে অবস্থানরত কতিপয় রোহিঙ্গা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করার চেষ্টা করছে। অনেকে আবার উদ্বাস্তু জীবনে অসন্তুষ্ট। তারপরও এত বিপুলসংখ্যক অশিক্ষিত রোহিঙ্গারা যেখানে একসাথে বসবাস করছে সেখানে অপরাধ ঠেকানো সত্বিই কঠিন।তবুও আমরা সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্চি।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার বাচাঁও আন্দোলনের সভাপতি এডভোকেট আয়াছুর রহমান কক্সবাংলাকে বলেন, “এই বিপুলসংখ্যক রাখাইন প্রদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠী ভবিষ্যতে নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। “সর্বোপরি অবৈধ অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পরিবেশগত ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মাদকদ্রব্য পাচার, অস্ত্র ও মানব পাচার, চোরাচালানসহ বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত রয়েছে। তারা সীমান্ত এলাকায় একটি অপরাধচক্র তৈরি করে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা, জাতীয় পরিচয় ও আর্থসামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে। রোহিঙ্গারা এ অঞ্চলে স্থানীয় শ্রম বাজার ও কর্মসংস্থানেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তাই আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন করে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা জরুরী হয়ে পড়েছে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন কক্সবাংলাকে বলেন, লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের মাঝে কিছু উশৃঙ্খল ও খারাপ প্রকৃতির লোক আছে। অপরাধ ঠেকাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো গভীর পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সেখানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, র‌্যাব, বিজিবি এবং সব গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন কাজ করছে। অপরাধ করে পার পাবে না কেউ। তাছাড়া ক্যাম্পে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ক্যাম্পগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারী বাড়ানো হয়েছে।

383 ভিউ

Posted ১:১১ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৭ আগস্ট ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com