এম রমজান আলী,মহেশখালী(২৮ নভেম্বর) :: হারিয়ে যেতে বসেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত মহেশখালী সোনাদিয়া দ্বীপ। বঙ্গোপসাগরের কূল ঘেষে কক্সবাজার জেলার অপূর্ব সৌন্দর্য্য বেষ্টিত পর্যটন, কুুতুবজোম ইউনিয়নের একটি বিছিন্ন সোনাদিয়া দ্বীপ। সোনাদিয়া দ্বীপের আয়তন ৪৯২৮হেক্টর। সৃষ্টি শৈল্পিক আদলে গড়া কক্সবাজার জেলার পর্যটন শিল্পের আরেক সম্ভাবনাময় সৈকতের নাম সোনাদিয়া।
এখানে রয়েছে বালিয়াড়ি, কাছিম প্রজনন ব্যবস্থা, চামচ ঠোটের বাটন পাখি এবং অতিথি পাখির অভয়ারণ্য। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির পরিমান ০৩.১৫ একর। শুটকী মহাল রয়েছে ২টি চিংড়ী চাষ যোগ্য জমির পরিমান ৯৮.০০ একর।
বন বিভাগের জমির পরিমান ২১০০ একর। বাকী সব প্রাকৃতিক বনায়ন ও বালুময় চরাঞ্চল। দূষণ ও কোলাহল মুক্ত সৈকত, লাল কাকড়া মিলন মেলা, বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক কাছিম, জেলেদের সাগরের মাছ ধরার দৃশ্য, সৃর্য অস্থের দৃশ্য, প্যারাবন বেষ্টিত আঁকা-বাঁকা নদী পথে নৌকা ভ্রমন। যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বে ও এ দ্বীপে সরকারী বা বেসরকারী ভাবে যথাযথ উদ্যোগ ও পরিকল্পনার অভাবে এ পর্যন্ত পর্যটন আর্কষনের আধুনিক কোন পদক্ষেপ বলতে গেলে নেওয়া হয়নি।
সঠিক পরিকল্পনা পূর্বক তা বাস্তবায়ন করা গেলে পর্যটন রাজধানী হিসাবে পরিচিত কক্সবাজার শহরের অতীব নিকটবর্তী এ দ্বীপটি পর্যটন বিকাশে অন্যতম স্থান হতে পারে যা দেশের তথ্য কক্সবাজারের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি দ্বীপ বাসিঁর জন্য বিকল্প আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
এই দ্বীপে দ্বীপবাসীর সম্পৃক্ততায় কমিউনিটি ভিত্তিক ইকোট্যুারিজমের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। সোনাদিয়ার দ্বীপের নামকরণের সঠিক কোন ঐতিহাসিক তথ্য থাকলে ও সোনাদিয়ার দ্বীপকে ঘিরে আদিকাল হতে সোনা সমতূল্য দামী পন্য মৎস সম্পদ আহরিত হত বলে এই দ্বীপ সোনার দ্বীপ, সোনাদিয়া বলে পরিচিত।
দ্বীপটি সোনাদিয়া হিসাবে বর্তমানে প্রজন্মের কাছে ও বই পুস্তক স্থান পাচ্ছে। কালক্রমে মানুষ মহেশখালীর অপরাপর এলাকা সমুহে বসবাস শুরু করলেও আদিকাল পরিচিত সূচনা হয় সোনাদিয়া ঘিরে। কারণ প্রাচীন কালের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র প্রাচীন মাধ্যমে ছিল নদী পথ, তদুপরি মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম ও ছিল মৎস শিকার।
তাই উভয় কারণে সোনাদিয়ার সাথে মানুষের পরিচয় ঘটে অনেক পূর্ব থেকে। মহেশখালীতে মূলত ১৫৫৯ সালের ভয়বহ জলোচ্ছাসের পর হতে বসতি আরম্ভ হয় তদপূর্বে মহেশখালী কক্সবাজারের সাথে যুক্ত ছিল বলে ইতিহাসে প্রমান্য।
স্বাধীনতা যুদ্ধেকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এই দ্বীপে অবস্থান করেছিলেন। সোনাদিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা তেমন উন্নত নয়। সাদা বাইন, কালো বাইন, কেওড়া, হরগোজা, নোনিয়া সহ প্রায় ত্রিশ প্রজাতির প্যারাবন সমৃদ্ধ উদ্ভিদ বিদ্যামান।
মোহনা, চর ও বন ভূমিতে ঊনিশ প্রজাতির চিংড়ি, চৌদ্দ প্রজাতির শামুক, ঝিনুক নানা ধরনের কাকড়া (যেমন, রাজা কাকড়া, হাব্বা কাকড়া, জাহাজি কাকড়া, সাতারো কাকড়া সহ প্রায় আশি প্রজাতির সাদা মাছ, পঁয়ষট্টি প্রজাতির (বিভিন্ন প্রায়) স্থানীয় ও যা-যা-বর পাখি এবং কমপক্ষে তিন প্রজাতির ডলফিন বিচরণ করে থাকে।
বাণিজ্যিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছের মধ্যে কোরাল, বোল, বাটা, তাইল্যা, দাতিনা, কাউন (কনর মাছ) ও প্যারাবন সমৃদ্ধ এলাকার অন্যান্য মাছ পাওয়া যায়। সরকারী ভাবে পর্যটনের ব্যবস্থা করলে দ্বীপের অবহেলিত মানুষের কর্ম সংস্থান হবে।
এ ব্যাপারে মহেশখালী নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবুল কালাম জানান, সোনাদিয়া দ্বীপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন কেননা এই দ্বীপে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অবস্থান করেছিলেন। এই দ্বীপে সরকারের সু-নজর রয়েছে এখানে গুরুত্বপূর্ন কিছু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
Posted ১২:২৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta