বিশেষ প্রতিবেদক :: প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে আশ্রয় নেওয়া ২৮৮ সেনা ও বিজিপি সদস্যকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেন্ট মার্টিন উপকূল হয়ে রাখাইন রাজ্যের সিথুরে (আকিয়াব) বন্দরের দিকে রওনা হয় সেনা ও বিজিপির সদস্যবাহী জাহাজটি।
এর আগে সকাল সাতটার দিকে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট থেকে মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রথমে বাংলাদেশি একটি জাহাজে তোলা হয়।
জাহাজটি মিয়ানমারের নৌবাহিনীর জাহাজের কাছে ওই নাগরিকদের হস্তান্তর করে।
গত বুধবার দুপুরে একই জাহাজে করে দেশটির কারাগারে সাজার মেয়াদ শেষ হওয়া ১৭৩ জন বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
বিজিবি, পুলিশ ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ২৮৮ জনের মধ্যে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্য আছেন ২৬১ জন, সেনাসদস্য ২৩ জন এবং বাকি ৪ জন ইমিগ্রেশন সদস্য। আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে ১১টি বাসে করে তাঁদের প্রায় ৩৪ কিলোমিটার দূরে বাঁকখালী নদীর বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাটে আনা হয়।
সকাল সাতটার দিকে তাঁদের তোলা হয় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি জাহাজে। জাহাজটি বঙ্গোপসাগরে অপেক্ষমাণ মিয়ানমারের নৌবাহিনীর জাহাজের কাছে গিয়ে তাদের নাগরিকদের হস্তান্তর করা হয়। তবে এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের কেউ গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
কক্সবাজার পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, গত বুধবার দুপুরে নৌবাহিনীর জাহাজে করে শহরের বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাটে আসেন মিয়ানমারের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল। এরপর কক্সবাজার থেকে সড়কপথে ওই প্রতিনিধিদলের সদস্যদের নেওয়া হয় নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
সেখানে অবস্থান করেছিলেন সম্প্রতি সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশ পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ২৮৮ জন নাগরিক। মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা পালিয়ে আসা নাগরিকদের পরিচয় শনাক্ত করেন এবং দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার সম্মতি প্রকাশ করেন।
গত ৩ মার্চ থেকে মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে একাধিক দফায় সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর ২৮৮ জন সদস্য নাফ নদী ও স্থলসীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশের টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়িতে পালিয়ে আশ্রয় নেন। এত দিন তাঁদের বিজিবির হেফাজতে নাইক্ষ্যংছড়ির একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছিল। এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আরও ৩৩০ জন সেনা ও বিজিপি সদস্যকে জাহাজে করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে এ পর্যন্ত ছয় শতের অধিক আশ্রয়প্রার্থী মিয়ানমারের বিজিপি ও সামরিক বাহিনীর সদস্যকে মানবিক বিবেচনায় আশ্রয় প্রদান ও প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিজিবি কর্তৃপক্ষ আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার বিজিপি, সেনা সদস্য ও অন্যান্যদের মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগে তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
Posted ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta