কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৮ জুলাই) :: কক্সবাজারের ঝিলংজা ইউনিয়নের বিসিক শিল্প নগরী এলাকার মুহুরী পাড়ার সেই বিশাল পাহাড়টির ধসের ঝুঁকিতে ১২০ পরিবারকে
নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ ৪০টি বাড়ি ভেঙ্গে ব্যবহারের অনুপযোগী করে দেয়া হয়েছে।
বিসিক শিল্প নগরী এলাকার পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা লোকজনদের সরিয়ে নিতে শনিবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, পরিবেশ অধিদপ্তর ও রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকরা অংশ নিয়েছেন।
এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে শুক্রবার বিকাল থেকেই সুউচ্চ এই পাহাড়টির পশ্চিম পাশের কিছু অংশ ধসে পড়ে। এ সময় পাহাড়ের পূর্ব পাশে ও মাঝখানে বড় ধরনের ফাটল ধরে যায়। শুক্রবার বিকালে সেই ফাটল ধরা পাহাড়ের কিছু অংশ তাৎক্ষণিক ধসে পড়লে ১০টির মত ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাবিবুল হাসান জানান, পাহাড়টিতে ফাটল ধরার পর মাটি ধসের পর পরই লোকজনকে আগে ভাগে সরিয়ে ফেলার কারণে জানমালের ক্ষতি হয়নি। তিনি জানান, তবে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় উপকরণ ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাব জানান, কক্সবাজার পৌর এলাকার মহাজের পাড়া, ঘোনার পাড়া, বৈদ্যঘোনা, বাদশাহ ঘোনা, বাচামিয়ার ঘোনা, লাইট হাউজ পাহাড়, কলাতলি, সাহিত্যিকা পলি সহ বিভিন্ন এলাকার পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসে রয়েছে কমপক্ষে অর্ধ লক্ষাধিক বাসিন্দা। প্রবল বর্ষণ শুরু হবার পর গত তিন দিনে প্রশাসন পাহাড়ে পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ঝুঁকিতে থাকা কয়েক হাজার লোককে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছে। তিনি দুঃখের সঙ্গে জানান, টানা ভারি বর্ষণের সময় পাহাড় ধসের চরম ঝুঁকির সময়েও লোকজনকে সরানো যায় না।এরমধ্যেও শনিবার ১২০ পরিবারকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ ৪০টি বাড়ি ভেঙ্গে ব্যবহারের অনুপযোগী করে দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান জানান-‘ সুউচ্চ পাহাড়টিতে শুক্রবার বিকালে আকস্মিক মাঝখান দিয়ে ফাটল সৃষ্টি হয়।পাহাড়টির পার্শ্বে ঝুঁকির মুখে থাকা শতাধিক বসতবাড়ি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এসব তালিকাভুক্ত পরিবারকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বাকি সবগুলো পরিবারকে নিরাপদ স্থানে না নেয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলবে।
এসময় অভিযানে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের বিজ্ঞ এ.ডি.এম জনাব আশরাফুল আফসার, কক্সবাজার পৌরসভার সদ্য নির্বাচিত প্রার্থী মাননীয় মেয়র জনাব মোঃ মুজিবুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজ ফারজানা প্রিয়াংকা, বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোহাম্মদ সেলিম শেখ, বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ খোরশেদ আলম, বিজ্ঞ নির্বাহী জনাব হুমায়ুন রশীদ, দক্ষিণ বনবিভাগের ডিএফও, জনাব আলী কবির, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যবৃন্দ, কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের সদস্যবৃন্দ, ১৫ আনসার ব্যাটেলিয়ান সদস্যবৃন্দ, সিপিপি-এর সদস্যবৃন্দ, রেড ক্রিসেন্ট-এর সদস্যবৃন্দ, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার ও পরিবেশ অধিদপ্তর, কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক জনাব সাইফুল আশ্রাব, পরিদর্শক, মিজ জাহানারা ইয়াসমিন, এবং পরিদর্শক জনাব মোঃ মুমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুলাই ভোরে কক্সবাজার শহরের রুমালিয়ারছড়ার বাচামিঞার ঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসে একই পরিবারের ৪ সদস্যের মৃত্যু হয়। রাতভর ভারি বৃষ্টির পর ভোরে বসতবাড়ির ওপর পাহাড় ধসে পড়ে। কক্সবাজার শহরের পাহাড়ের পাদদেশে এখনও ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে হাজার হাজার পরিবার।
Posted ১০:২২ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৯ জুলাই ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta