কক্সবাংলা রিপোর্ট(১৮ অক্টোবর) :: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে প্রতিদিন সীমান্ত দিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে ঢুকছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা।এ কারণে শরনার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের মাঝে এইচআইভি পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এদিকে দিন দিন এইডস রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে।
বুধবার পর্যন্ত এইডস রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে ১৮ জন নারী, ১০ পুরুষ এবং ৫ জন শিশুও রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী মিয়ানমারে এইডস রোগীর সংখ্যা আড়াই লাখের উপরে অর্থাৎ সে দেশের প্রতি এক হাজার জনে আট জনই এইচআইভি পজেটিভ।
আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থা বা আইওএম’র হিসেবে গত ২৫ আগস্ট থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ৫ লাখ ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। বেসরকারি হিসেবে এ সংখ্যা সাত লাখ ছাড়িয়েছে। মানবিক কারণে তাঁদের আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসা সেবাসহ সব সহযোগিতা দিচ্ছে সরকার। তবে এখন চিন্তার খোড়াক যোগাচ্ছে এইডস রোগ।
কক্সবাজারের স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে,২৫ আগস্টের পর এ পর্যন্ত ৩৩ জন রোহিঙ্গা এইডস রোগী শনাক্ত করা গেছে। এরমধ্যে ৩৩ জনের ২২ জনই মিয়ানমার থাকাকালীন শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত করেন।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আরএমও ডা: মো: শাহীন আবদুর রহমান জানিয়েছেন এ পর্যন্ত একজনের মৃত্যু হলেও বাকিরা চিকিৎসাধীন। তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হওয়া রোগীদের পুনরায় পরীক্ষা করে কনফার্ম করে সরকারিভাবে ফ্রিতে চিকিৎসা সেবা এবং কাউন্সিলিং করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে এইচআইভি শনাক্ত করার জন্য উখিয়া এবং টেকনাফে দুটি ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও রোগ প্রতিষেধক টিকা কার্যক্রমের সমন্বয়কারী ডা. মিসবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা নিয়ে আসছে এইডসসহ মারাত্মক সব সংক্রামক রোগ। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুস সালাম বলেন, আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের মাঝে এখন পর্যন্ত এইডস রোগী পাওয়া আমাদের জন্য অতি উদ্বেগের বিষয়। তবে একসাথে খাবার খাওয়া, ঘুমানো বা স্বাভাবিক মেলামেশায় এইডস ছড়ায় না। শুধুমাত্র শারীরিক মিলন ও আক্রান্ত রোগীর রক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে রোগটি ছড়ায়। তাই রোহিঙ্গা নারীদের ব্যবহারে সতর্ক হতে অনুরোধ জানান তিনি। পাশাপাশি এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো গেলে শঙ্কা অনেকাংশে কমে যায় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
Posted ১২:৪৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta