সোয়েব সাঈদ,রামু(২৯ নভেম্বর) :: কক্সবাজার সদরের পূর্ব খরুলিয়া নয়াপাড়া এলাকায় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুর হামলা এবং মিথ্যা মামলায় আক্রান্ত হতদরিদ্র পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে গ্রামবাসী। ক্ষুব্দ গ্রামবাসী নিজেদের অর্থ দিয়ে আহতদের চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি ভূমিদস্যু চক্রের জমি জবর-দখল ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করার ঘোষনা দিয়েছে।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) পূর্ব খরুলিয়া নয়াপাড়া জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর এলাকার সর্বস্তুরের মুসল্লী হামলার শিকার পরিবারের সদস্যদের খোঁজ খবর নেন।
এসময় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে পূর্ব খরুলিয়া নয়াপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি মৌলভী রফিক, সেক্রেটারী মাস্টার আবুল হোছন, ব্যবসায়ি জাফর আলম, নাজির হোছাইন, গ্রাম সর্দার মোহাম্মদ উল্লাহ, আবদু শুক্কুর, আবুল হোসেন, বশির আহমদ, আবুল হোছন, আবদু শুক্কুর কালা মিয়া, মমতাজ মিয়া, আলতাজ মিয়া, কবির আহমদ, মো. শফি, আতাউর রহমান, ফরিদুল আলমসহ শতাধিক জনতা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, সম্প্রতি সাবেক মেম্বার আবদুল হামিদ প্রকাশ মুনিয়া, আবদু শুক্কুরের ছেলে আবদুল্লাহ, মৃত মালেকুজ্জামানের ছেলে চিহ্নিত ভূমিদস্যু শামসুল আলম ও তার ছেলে পারভেজ, ফারেজ, রায়হান ও রইয়ানের নেতৃত্বে একদল ভাড়াটে লোকজন একই এলাকার মৃত এজাহার মিয়ার ছেলে হতদরিদ্র মকবুল আহমদ, মোকতার আহমদ ও মোজাম্মেল হকের স্বত্ত্বঃদখলীয় জমি জরর-দখলের উদ্দেশ্যে পাকা সীমানা দেয়াল নির্মাণ শুরু করে।
এসময় জবর-দখলে বাধা দিতে গেলে শামসুল আলম ও তার সহযোগিরা জমির মালিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের দেশীয় অস্ত্র ও লাটি-সোটা নিয়ে ব্যাপক মারধর করে।
হামলাকারিদের নিবৃত করতে গিয়ে এলাকার সর্দার মোহাম্মদ উল্লাহও মারধরের শিকার হন। হামলায় আরো আহত হন জমির মালিক মোজাম্মেল হক, মকবুল আহমদ, মো. শিরোয়ান ও গৃহবধু রুপিয়া আকতার। এদের মধ্যে শিরোয়ানের অবস্থা সংকটাপন্ন। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রামে চিকিৎসাধিন রয়েছেন।
হামলার শিকার গৃহবধু রুপিয়া আকতার জানান, হামলার পর আহতরা কক্সবাজার সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও থানায় তাদের কোন সহায়তা দেয়া হয়নি। পুলিশ রহস্যজনক কারনে জবর-দখলকারিদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই মামলা রুজু করে এবং আহত ব্যক্তিদের আটক করে।
তিনি আরো জানান, জমির বিষয়টি এলাকার সর্দার মোহাম্মদ উল্লাহ সহ গন্যমান্য ব্যক্তিরা সমাধানের উদ্যোগ নিলেও শামসুল আলম এসবের তোয়াক্কা না করে তাদের নিকটাত্মীয় সাবেক মেম্বার আবদুল হামিদ প্রকাশ মুনিয়া ও আবদু শুক্কুরের ছেলে আবদুল্লাহসহ কতিপয় ক্যাডারের অংশগ্রহনে ভাড়াটে লোকজন নিয়ে জমিটি ফিল্মী স্টাইলে জবর-দখলের চেষ্টা চালিয়েছে।
এ ঘটনায় থানা পুলিশ তাদের কোন প্রকার সহায়তা না করায় নিরুপায় হয়ে তিনি গত ২৭ নভেম্বর কক্সবাজার বিজ্ঞ সিনিয়র জুড়িসয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন।
মৃত এজাহার মিয়ার স্ত্রী জমির মালিক ৭৫ বছর বয়সী গোলজার বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, এ জমিতে তারা দীর্ঘদিন আবাদ করে আসছে। সম্প্রতি মাদক ব্যবসার মাধ্যমে কোটিপতি বনে যাওয়া শামসুল আলম তাদের অসহায়ত্বের সুযোগে পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তাদের একমাত্র সম্বল এ জমিটি দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
ক্ষুব্দ গ্রামবাসী বলেন, একটি হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে পিটিয়ে তাদের স্বত্ত্বঃদখলীয় জমি জবর-দখল চেষ্টার ঘটনায় এলাকার সর্বস্তুরের মানুষের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এলাকাবাসী যেভাবেই হোক ভূমিদস্যুদের প্রতিরোধ করবে। পাশাপাশি প্রত্যেক বাড়ি থেকে চাঁদা তুলে হামলার শিকার পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা হচ্ছে। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে গ্রামবাসী।
Posted ২:৫৮ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta