শনিবার ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজার-১ আসনে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে আওয়ামী লীগ,পুনরুদ্ধারের আশা বিএনপির

সোমবার, ০৫ মার্চ ২০১৮
351 ভিউ
কক্সবাজার-১ আসনে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে আওয়ামী লীগ,পুনরুদ্ধারের আশা বিএনপির

বিশেষ প্রতিবেদক(৪ মার্চ) :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য তৎপর আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বিএনপির প্রত্যাশা, দলের কেন্দ্রীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদকে সামনে রেখে এ আসনটি আবারও দখলে নেবে।

বসে নেই জাতীয় পার্টিও। দলটির ধারণা, বর্তমান এমপি মোহাম্মদ ইলিয়াছ আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের মনোনয়ন পাবেন। হাল ছাড়ছে না জাতীয় পার্টিও (জেপি)। দলটির প্রেসিডিয়াম  সদস্য সালাহ উদ্দিন মাহামুদ মহাজোটের মনোনয়ন পেতে নিবিড় যোগাযোগ রাখছেন শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে। আপাতত চুপ থাকলেও জামায়াতে ইসলামীও চাইছে সময়মতো শক্তিশালী প্রার্থী নিয়ে মাঠে নামতে।

এ আসনের দুই উপজেলায় ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৭৫ হাজার ৬৭৬। এর মধ্যে চকরিয়ায় দুই লাখ ৭১ হাজার ৪৫৩ এবং পেকুয়ায় এক লাখ ৪ হাজার ২২৩। পরিসংখ্যানগত কারণেই এ আসনের জয়-পরাজয় নির্ধারণ করে চকরিয়ার ভোট।

এ আসনে বিএনপি পাঁচবার, জাতীয় পার্টি তিনবার এবং জামায়াতে ইসলামী একবার জয় পেলেও ১৯৭৩ সালের পর গত ৪৪ বছর আওয়ামী লীগ জয়ী হতে পারেনি।

এ অবস্থায় সরকারি দলের শীর্ষ নেতাকর্মীরা আগামী নির্বাচনে আসনটি পুনরুদ্ধারের আশা করছেন।

জেলার শীর্ষ নেতারা বলছেন, বর্তমান সরকারের সময়ে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে কক্সবাজার। এবার জেলার চারটি আসনেই নৌকা জয়ী হবে। তবে প্রার্থীর সংখ্যাধিক্য ও নেতাকর্মীদের দ্বিধাবিভক্তি এ ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।

এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন- দলের চকরিয়া উপজেলার সভাপতি ও চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আলম, দলের জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি, চকরিয়ার সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, দলের জেলা কমিটির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন, চকরিয়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, জেলা কমিটির শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ড. আশরাফুল ইসলাম সজীব, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক খালেদ মোহাম্মদ মিথুন এবং বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক কমর উদ্দিন আহমদ।

এ প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বলেন, মনোনয়নপ্রত্যাশীরা মাঠে কাজ করছেন। তবে শেষ পর্যন্ত দল যাকে মনোনয়ন দেবে, সবাই তার পক্ষেই থাকবেন।

তিনি জানান, কক্সবাজারে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ভোটাররা জেলার চারটি আসনেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী করবেন।

আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী জাফর আলম এরই মধ্যে ভোটের মাঠে নেমেছেন। সহযোগী নেতাকর্মীদের নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড। যুদ্ধাপরাধীদের সাজা কার্যকরের সময় চকরিয়ায় জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন ঠেকাতে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে তৎপর ছিলেন জাফর আলম।

গত নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়ন পেলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ ইলিয়াছের সমর্থনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছিলেন। তাই এবার অতীতের মূল্যায়নের পরিপ্রেক্ষিতে মনোনয়ন পেতে আশাবাদী জাফর আলম। গত কয়েক বছরে এ লক্ষ্যে তিনি দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির পাশাপাশি উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও করেছেন বলে জানান তিনি।

এদিকে সালাহ উদ্দিন আহমদ সিআইপি এ আসনে তিনবার নির্বাচন করলেও নৌকার জয় অধরাই থেকে গেছে। তবে নির্বাচনের লক্ষ্যে এরই মধ্যে সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু করেছেন তিনি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইলে আবারও প্রার্থী হবেন। মনোনয়ন না পেলে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাবেন।

এখনও মাঠে দেখা না গেলেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, চকরিয়া পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে তিনি এলাকায় অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করেছেন, জেলা আইনজীবী সমিতির নেতৃত্বও দিয়েছেন। তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গেও তার সুসম্পর্ক রয়েছে। এসব বিবেচনায় নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাকেই মনোনয়ন দেবেন বলে মনে করছেন তিনি।

গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী জানান, বর্তমান সরকারের সময়ে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। তাই দলও সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে অবশ্যই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানান তিনি। মনোনয়ন না পেলেও প্রচার কার্যক্রম চালাবেন দলীয় প্রার্থীর পক্ষে।

ড. আশরাফুল ইসলাম সজীবের বাবা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা নুরুল ইসলাম। তার চাচা সাবেক এমপি ও জেলার সাবেক গভর্নর অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম। ড. আশরাফুল ইসলাম সজীব বলেন, যোগ্য প্রার্থী মনোনয়নের পাশাপাশি নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ৪৪ বছর পর এবার এ আসনে নৌকার জয় অবশ্যম্ভাবী।

খালেদ মোহাম্মদ মিথুন বলেন, কোন নেতাকে মনোনয়ন দিলে দলের বিজয় সুনিশ্চিত হবে, সেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুব করেই জানেন। তিনি যোগ্য প্রার্থীকেই দলের মনোনয়ন দেবেন। দলের মনোনয়ন চাইবেন বলে জানান খালেদ মোহাম্মদ মিথুন।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ পেকুয়া উপজেলার বাসিন্দা ও এ আসনের দু’বারের এমপি। কারাগারে থাকায় ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি অংশ নিতে পারেননি। তবে তখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছিলেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমদ। ভারতে অবস্থানরত এই নেতা আগামী নির্বাচনে দলের প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ভারতে মামলা বিচারাধীন।

জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী বলেন, সালাহউদ্দিন আহমদের পছন্দের ব্যক্তিই এই আসনে দলের মনোনয়ন পাবেন। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না জানান, সালাহউদ্দিন আহমদের মামলা এখন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন। তাই আগামী নির্বাচনে তার প্রার্থী হতে কোনো সমস্যা হবে না। কোনো কারণে তিনি প্রার্থী হতে না পারলে তার স্ত্রী হাসিনা আহমদ প্রার্থী হবেন।

এ ব্যাপারে হাসিনা আহমদ বলেন, সালাহউদ্দিন আহমদ এলাকায় অনেক জনপ্রিয়। তিনি আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হবেন, এটাই মানুষের প্রত্যাশা। কোনো কারণে তিনি নির্বাচনে অংশ না নিলে দল যাকে মনোনয়ন দেবে, নেতাকর্মীরা তার পক্ষেই নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশ নেবেন।

এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী জানান, পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে তিনি এ আসন থেকে দলের মনোনয়ন চাইতে পারেন। ঢাকার যে কোনো একটি আসনেও তার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সব কিছুই নির্ভর করছে দলের সিদ্ধান্তের ওপর।

বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তিনি নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। সেইসঙ্গে পার্টির সাংগঠনিক শক্তিও আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। তিনি আবারও মহাজোটের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।

সাবেক এমপি ও জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য সালাহ উদ্দিন মাহামুদ স্থানীয় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন। তিনি জানান, দলের সিদ্ধান্ত হলে তিনি অবশ্যই আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

১৯৯১ সালের নির্বাচনে কক্সবাজার-১ আসনে জয়ী হন জামায়াতে ইসলামীর অধ্যাপক এনামুল হক মঞ্জু। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট কিংবা এককভাবে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে গেলে তিনি মনোনয়ন চাইবেন।

আবু তাহের চৌধুরী

351 ভিউ

Posted ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৫ মার্চ ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com