বিশেষ প্রতিবেদক(২ ডিসেম্বর) :: পর্যটননগরী কক্সবাজার জেলায় চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসন। বলতে গেলে জেলার পাওয়ার হাউস এ আসনটিতে অবস্থিত।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতও ভিন্ন কৌশলে মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ইতিমধ্যে সরগরম হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের রাজনীতিক অঙ্গন। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রায় অর্ধ ডজন। আর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর একজন করে প্রার্থী মাঠে সরব রয়েছেন।
কক্সবাজার (৩) রামু-সদর আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী কানিজ ফাতেমা আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারমযান, জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য রাশেদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল ও কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ এবং বর্তমান জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ জয়।
মতাদর্শ একদলের হলেও এরমধ্যে বর্তমান সংসদ সদস্য কমলের পরিবারে তিনজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। রামুতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিকে বহুভাবে বিভক্ত করেছে এই পরিবার।
ঘরের মধ্যেই এমপি কমলের বড় ভাই আ’লীগের উপজেলা সভাপতি সোহেল সরওয়ার কাজল। একইভাবে দলীয় মনোনয়নে আশাবাদী বর্তমান সংসদ সদস্যের বোন জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্ম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরীও।
আর এ সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করবেন না সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী লুৎফর রহমান কাজল। এ ছাড়া সফল নারী নেত্রী হিসেবে কানিজ ফাতেমা আহমেদের প্রতি মানুষের কিছুটা আগ্রহ আছে। মুজিবুর রহমান দুঃসময়ে দলের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
কউক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদকে দিয়েও আওয়ামী লীগের একটি অংশ লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এ আসনের শক্তিশালী প্রার্থী হতে পারে মনে করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। আগামী নির্বাচনে তাকেও দলীয় মনোনয়ন দিতে পারেন বলে ধারণা করছেন অনেকেই।
রামু উপজেলায় দুই ভাই কমল ও কাজলের দ্বন্দ্বে দলীয় কর্মকাণ্ড ঝিমিয়ে পড়েছে বলে দাবি করছেন আওয়ামী লীগের অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মী। এ আসনে এবারও সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে বিএনপি। এ আসনে সবচেয়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল।
বিএনপি নেতা লুৎফুর রহমান কাজল নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে যোগাযোগ রাখছেন। ভোটারদের সঙ্গে তার ভালো সখ্য রয়েছে। এ ছাড়া বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত তিনিই একমাত্র প্রার্থী। বিএনপির এই প্রার্থীর অবস্থান অত্যন্ত শক্তিশালী।
কক্সবাজারের রাজনীতির মাঠে জামায়াত সবসময় যথেষ্ট প্রভাব রাখে। কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যানের পদে আছেন জামায়াত নেতা। যদিও আইনি জটিলতা ভিন্ন বিষয়।
ফলে বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ নির্বাচনে গেলে জামায়াত ভোটব্যাংক হিসাব করে এ আসনটি চাইতে পারে। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জি এম রহিমুল্লাহ ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সলিমুল্লাহ বাহাদুর জামায়াতের মনোনয়ন পেতে স্থানীয়ভাবে এবং কেন্দ্রে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন।
কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তারেকের নাম জাতীয় পাটির প্রার্থী হিসেবে শোনা যাচ্ছে। জাপা চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের আস্থাভাজন নেতা হিসেবে জেলা জাপার সিনিয়র সহসভাপতি তারেকই হতে পারেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী।
সবকিছু মিলে আওয়ামী লীগ,বিএনপি,জামাত ও জাতীয়পার্টির মধ্যে দুটি বড় দলের মনোনয়নের উপর নিভর্র করবে সর্ব সাধারণ জনগণের ভোট।
ফলে এ আসনের হিসাব নিকেশ করে আগ থেকে কিছু অনুমান করাও অত্যন্ত কষ্টসাধ্য বলে জানান জেলার সচেতন মহল।
Posted ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta