কক্সবাংলা ডটকম(১০ সেপ্টেম্বর) :: নিয়মিত কফি পানে কমে ডায়াবেটিস ও মৃত্যু ঝুঁকি। স্পেনে এক গবেষণায় দেখা গেছে, এ পানীয় একজন মানুষের মৃত্যুঝুঁকি ৬৪ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে। এমনকি যাদের বয়স ৪৫ বছরের বেশি, তারা দিনে অতিরিক্ত দুই কাপ কফি পান করলে মৃত্যুঝুঁকি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে।
স্পেনের প্যামপ্লুনার হসপিটাল ডি নভারায় ১০ বছর ধরে ২০ হাজার মানুষের ওপর এ গবেষণা চালানো হয়। এতে দেখা গেছে, এক কাপ নয়, বরং দৈনিক চার কাপ কফি পানই স্বাস্থ্যসম্মত।
অন্যান্য পানীয়র মতো কফিতেও হরেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এটি পান করলে শরীরে ক্যালরি জোগানের সঙ্গে সঙ্গে নানা উপকার সাধিত হয়। যেমন— কফিতে ক্যাফেইন আছে, যা মনকে চাঙ্গা করে। এতে আছে ভিটামিন বি২, যা কার্বোহাইড্রেটকে শক্তিতে রূপান্তরে সহায়তা করে। এ উপাদান ত্বক ও চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। এমনকি আমিষ ও স্নেহজাতীয় খাবার বিপাকে সহায়তা করে।
কফিতে ম্যাগনেসিয়াম আছে, যা রক্তচাপ ও হূত্কম্পন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। এ উপাদান হাড়কে শক্তিশালী করে। এছাড়া কফিতে পটাশিয়াম, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও জৈব অ্যাসিড আছে।
আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, আমেরিকানরা ফল ও সবজির চেয়ে কফি পানের মাধ্যমে বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গ্রহণ করে। এ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশকিছু মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
২০১২ সালে ইউরোপে পরিচালিত আরেক গবেষণায় জানা গেছে, পর্যাপ্ত পরিমাণ কফি পান হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়। এ গবেষণা অনুযায়ী, আট আউন্স কাপে দিনে চারবার কফি পান এ ঝুঁকি ১১ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কফি পান ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও সহায়তা করে। এ পানীয় টেস্ট্রোজেন ও ইস্ট্রোজেন হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী প্রোটিনের পরিমাণ বাড়াতে সহায়তা করে। এ দুই হরমোনকে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী করা হয়। হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথের এক গবেষণায় জানা গেছে, কফি পানে এ রোগের ঝুঁকি ১০ শতাংশের বেশি কমে।
নতুন ওই গবেষণার পর ডেনমার্কের গবেষকরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত কফি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
এর আগে একটি গবেষণায় ডেনমার্কের অরহাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখেছিলেন, কফির মধ্যে থাকা ক্যাফেস্টল যৌগ প্যানক্রিয়াসের কোষে ইনসুলিন উৎপাদনে সাহায্য করে। অ্যান্টি ডায়াবেটিক ড্রাগের মতোই পেশীতে গ্লুকোজ সঞ্চয়ের মাত্রা বাড়াতেও সাহায্য করে। সেই গবেষণার ভিত্তিতেই দ্বিতীয় বার ইঁদুরদের নিয়ে আরেকটি গবেষণা করেন।
গবেষকরা টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন ইঁদুরদের তিনটি দলে ভাগ করা হয়। এদের মধ্যে দুই দলকে নিয়মিত ক্যাফেস্টলের ডোজ দেওয়া হয়।
১০ সপ্তাহ গবেষণার পর দেখা যায় যে দুই দল ইঁদুরকে নিয়মিত ক্যাফেস্টলের ডোজ দেওয়া হয়েছে তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ইনসুলিন ক্ষরণের ক্ষমতাও বেড়েছে।
আবার ক্যাফেস্টল হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত কমিয়েও দেয় না। যা অধিকাংশ অ্যান্টি-ডায়াবেটিক মেডিসিন করে থাকে। প্রতিদিন ক্যাফেস্টল শরীরে পৌঁছলে তা শর্করার স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রেখেই টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে।
জার্নাল অব ন্যাচারাল প্রোডাক্টস-এ এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
Posted ১:৩০ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta