কক্সবাংলা ডটকম(৩ নভেম্বর) :: গত কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে ব্যাপক হারে বাড়তে শুরু করেছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। প্রথম দিকে ব্যবসায়ীরা দেশজুড়ে টানা বৃষ্টিকে দায়ী করলেও; বর্তমানে দেশি ও আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে বলে দাবি করছেন তারা।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনই দাম কমার কোনো পূর্বাভাস পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুলসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। বাজারে সবজি, মাছসহ সব ধরনের পণ্যের দামও চড়া।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ আজকের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকা দরে। এছাড়া আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ গত সপ্তাহে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হলেও আজকের বাজারে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
হাতিরপুল বাজারের ব্যবসায়ী সবুজ বলেন, নতুন মৌসুমের অল্পস্বল্প পেঁয়াজ উঠতে শুরু করবে কিছু দিন পর। তখন কিছুটা কমতে পারে। তবে পেঁয়াজের ঘাটতি পূরণ হতে সময় লাগবে। তাই দ্রুত দাম না–ও কমতে পারে।
তবে পেঁয়াজের দাম বাড়তি হলে কাঁচা মরিচে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৪০ টাকা কমে আজকের বাজারে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা দরে।
বাজারে এই দামের সঙ্গে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যতালিকা পর্যালোচনা করে কিছুটা পার্থক্য দেখা গেছে।
টিসিবির মূল্য তালিকায় দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৭৫-৮৫ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকা দেখা গেছে।
এখন ভারতের বাইরে অন্য কোনো দেশ থেকে আমদানি করে পেঁয়াজের বাজার সামাল দেওয়ার সুযোগ দেখছেন না আমদানিকারকেরা। তাদের দাবি, মিসর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে কমপক্ষে দুই মাস সময় লাগবে। পাকিস্তান ও মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ নেই। কারণ, দাম সেখানেও চড়া।
তবে সপ্তাহের ব্যবধানে আদার দাম কিছুটা বাড়লেও আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে অধিকাংশ মুদি পণ্যের দাম। আজকের বাজারে কেজি প্রতি চীনের আদা ১৪০ টাকা এবং কেরালা আদা ১৫০ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা, দেশি মুগ ডাল ১৩০ টাকা, ভারতীয় মুগ ডাল ১২০ টাকা, মাষকলাই ১৩৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১২৫ টাকা, ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মসলার মধ্যে কেজি প্রতি দারুচিনি ৩৬০ টাকা, জিরা ৪৫০ টাকা, শুকনা মরিচ ২০০ টাকা, লবঙ্গ ১৫০০ টাকা, এলাচ ১৬০০ টাকা, হলুদ ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া কেজি প্রতি দেশি রসুন টাকা বেড়ে ১১০ টাকা, ভারতীয় রসুন ১১০ টাকা, আলু কেজি প্রতি বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা দরে।
ভোজ্য তেলের দাম আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। আজকের বাজারে ব্র্যান্ড ভেদে ৫ লিটারের বোতল ৫৩০-৫৪০ টাকা, প্রতি লিটারে ১-২ টাকা বেড়ে ১০৭ টাকা থেকে ১০৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুন কেজি প্রতি ৭০-৮০ টাকা, শিম ১৪০ টাকা, হাইব্রিড টমেটো ১৬০ টাকা, দেশি টমেটো ১০০ টাকা, শশা ৬০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০-৫৫ টাকা, কচুর লতি ৬০-৬৫ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, আমড়া ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিটি ফুলকপি ৩৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা এবং লেবু হালি প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা, পালং শাক আঁটি প্রতি ২০ টাকা, লালশাক ২০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা এবং লাউশাক ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম ১-২ টাকা কমেছে। আজকের বাজারে মোটা স্বর্ণা চাল প্রতি কেজি ৪৪ টাকা, পারিজা চাল ৪৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মিনিকেট (ভালো মানের) ৫৮-৬০ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ৫৬-৫৮ টাকা, আমদানি করা ভারতীয় বিআর-২৮ ৪৮ টাকা, দেশি বিআর-২৮ ৫০ টাকা, নাজিরশাইল (কাটারি) ৬৩ টাকা, নাজিরশাইল (নরমাল) ৬৫ টাকা, পাইজাম চাল ৪৮ টাকা, বাসমতি ৫৩ টাকা এবং পোলাও চাল ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২০০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৫০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা।
আর বাজারে মাঝারি আকারের ইলিশ হালি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ টাকা দরে।
এদিকে ছোট দেশি মুরগির দাম আগের বাড়তি দামে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা দরে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ১৩০-১৩৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৮০ টাকা এবং পাকিস্তানি লাল মুরগি ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আজকের বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
Posted ১১:২২ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৩ নভেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta