
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুতুবদিয়া :: কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় ঘরের দখল ছেড়ে না দেয়ায় বয়োবৃদ্ধা নানী ও মামা-মামীকে পরিকল্পিতভাবে মারধরের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় এজাহার দায়ের করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
আপন নাতিদের এমন আচরণে বাকরুদ্ধ বয়োবৃদ্ধা নানী আনোয়ারা বেগম(৭২)। মানসিক টেনশনে নাওয়াখাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। যে নাতিনদের কোলাহলে তাঁর ঘর মুখরিত থাকার কথা ছিল।
সে ঘরে আজ কান্নার রোল। সুখের হাহাকার। ঘুমহীন রাত যাপন। যেন ক্ষনে ক্ষনে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আপন মেয়ে ও নাতিনদের শৈশব কৈশোর যেন বারবার মনে পড়ছে। ভেসে ভেড়াচ্ছে চোখের সামনে। সেই সুখময় স্মৃতি মনে ভাসছে আর দু’চোখের জলে ভয়ে যাচ্ছে নদী।
আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার নাতিনরা সন্ত্রাসী ভাড়া করে আমার ঘরে ঢুকে আমার গায়ে হাত তুলেছে। তাদের মামা-মামীকে মেরেছে। বাচ্চাদের মেরেছে। আমার চুল টেনে ছিড়েছে। লাথি দিয়েছে।
তাদের মামিকে ঘর থেকে চুল ধরে টানতে টানতে ঘরের বাইরে নিয়ে গেছে। তাদের কাছ থেকে আর কি পাওনা আছে? যথেষ্ট পেয়েছি।
এমনই নেক্কার জনক ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সদর বড়ঘোপ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড বায়তুশ শরফ এলাকায়। এলাকার ইউপি সদস্য ও ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শীদের সাথে কথা বলে যা জানা যায় তা আরও হৃদয় বিদারক।
এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
ভুক্তভোগীদে ভাষ্যমতে শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে খাবার খেয়ে বাড়ির একটি কক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন দুই শিশু সন্তান সহ সরওয়ার আলম (৫৫) ও সেলিনা আকতার (৪০)। অন্য কক্ষে অসুস্থ বৃদ্ধা আনোয়ারা বেগম (৭২) শোয়ে ছিলেন। হঠাৎ দরজায় আঘাতের শব্দে চমকে উঠেন তারা।
বৃদ্ধা বলেন, নিজের মেয়ে, নাতি মোরশেদ, নাতনি ফেন্সি ও হাবিবা সাথে বহিরাগত আরও কয়েকজন সন্ত্রাসী নারী কিছু বুঝে উঠার আগেই ঘরে ঢুকে পড়ে। আমাদের উপর মারধর শুরু করে।
আমার ছেলে এবং ছেলের বউ এগিয়ে আসলে ভাড়াটে নারী সন্ত্রাসীরা তাদের উপর আক্রমণ করে এলোপাতাড়ি মারধর করে রক্তাক্ত ফুলা জখম করেছে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মাঈনুদ্দিন হাশেম মিন্টু। তিনি বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। ঘরের ভেতরে কিছু বহিরাগত মহিলাকে দেখতে পাই। তাদের মুখ কাপড়ে ঢাকা ছিল। পরে জানতে পারি বসতঘর দখল করে দিতে তাদেরকে ভাড়া করা হয়েছে। তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে।
এসময় ঘটনাস্থলে বিভিন্ন মিডিয়া হাউজে কর্মরত সাংবাদিকের উপস্থিতি দেখতে পাই। পরে থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে কাউকে গ্রেফতার করেনি।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে কুতুবদিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে সরওয়ার আলমের আঘাত গুরুতর হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করেন।
জানা গেছে, এ ঘটনায় উভয় পক্ষ কুতুবদিয়া থানায় এজাহার দায়ের করেছে।
ঘটনার বিষয়ে কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভরঞ্জন চাকমা বলেন, ঘটনা শুনেছি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Posted ৮:০৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta