নজরুল ইসলাম,কুতুবদিয়া(১৪ ডিসেম্বর) :: কুতুবদিয়ায় যথাযোগ্য মর্যাদায় গভীর শ্রদ্ধা ও শোকের সাথে পালিত হয়েছে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস।
দিবসটি উপলক্ষে ১৪ ডিসেম্বর (শনিবার) সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুপ্রভাত চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জিয়াউল হক মীর। আলোচনার শুরুতেই পালন করা হয় এক মিনিট নিরবতা।
আলোচনা সভায় স্মৃতি চারণ করেন, কুতুবদিয়া উপজেলা কমান্ডের বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিন বিহারী। বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য বিশিষ্ট রাজনীতিবীদ মাস্টার আহমদ উল্লাহ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর মোঃ মঈন উদ্দিন, প্রভাষক নজরুল ইসলাম, কুতুবদিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভাঃ) জিগারুন নাহার, কুতুবদিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম ও সাংবাদিক এম.এ মান্নান।
সভায় সারগর্ভ আলোচন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিয়াউল হক মীর। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল পরাক্রমের সামনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল। তারা চেয়েছিল আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যার মাধ্যমে জাতিকে মেধাশূন্য করতে।
এজন্য তারা বেছে বেছে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ,চিকিৎসক,সাহিত্যিক,সাংবাদিক,দার্শনিক ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রের অগ্রগণ্য মানুষদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। পাকিস্তানি ঘাকদের এই বর্বর হত্যাকান্ডে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেছিল রাজাকার -আলবদর বাহিনী।
মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে ১৪ ডিসেম্বর এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল ঘাতকরা। বিজয় অর্জনের পর ঢাকার রায়েরবাজারের পরিত্যাক্ত ইটখোলা ও মিরপুর সহ বিভিন্ন বধ্যভূমিতে একে একে পাওয়া যায় হাত-পা-চোখ বাঁধা দেশের খ্যাতিমান এই বুদ্ধিজীবীদের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ।
এসব মৃতদেহ পাওয়ার পর উন্মোচিত হয় তাদের ওপর পৈচাশিক নির্যাতনের চিহ্ন ও ঘাতকদের নীলনকশা। প্রতিবছর বিজয় দিবসের আগে দিনটি বাঙালি জাতি গভীর শ্রদ্ধা ও বেদনার সঙ্গে স্মরণ করে। আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযোদ্ধের চেতনায় দেশ প্রেমে উদ্ভুদ্ধ হয়ে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখার আহবান জানান তিনি।
এরপর ইউএন সভায় উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তার কার্যালয়ে ডেকে পারিবারিক খোঁজখবর নেন।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ সিকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবু ভোলা নাথ, বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিন বিহারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী, উপজেলা প্রকৌশলী ছিদ্দিকুর রহমান, বিআরডিবি কর্মকর্তা নন্দ দুলাল সাহা, সমাজসেবা কর্মকর্তা আমজাদ হোছাইন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তায়ন কর্মকর্তা খোকন চন্দ্র দাশ, আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের উপজেলা সমন্বয়কারী সুপানন্দ বড়–য়া, কবি জসিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়েল প্রধান শিক্ষক আনিচুর রহমানসহ বিভিন্ন সামাজিক,সাংস্ককৃতিক ও সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগণ এবং শিক্ষক ও সাংবাদিকবৃন্দ।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় অংশ করে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধীক কোমলমতি শিক্ষার্থী।
সভায় শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ইমরান হোছাইন।
Posted ১১:২২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta