কক্সবাংলা ডটকম(১৯ জুলাই) :: দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন সফরকে নিছক সফর হিসেবে দেখছে না বিএনপি। দলটির কাছে এ সফর রাজনৈতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং সরকারবিরোধী আন্দোলন- এ দুই ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে লন্ডনে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নেতা চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন।
বিএনপির প্রভাবশালী নেতারা বলছেন, লন্ডনে থাকা দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে খালেদা জিয়া রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক নানা বিষয়ে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেবেন। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয়- সরকারবিরোধী আন্দোলন ও নির্বাচনে অংশ নেওয়া না নেওয়ার বিষয়ও রয়েছে।
গত ১৫ জুলাই লন্ডন সফরে যান বেগম খালেদা জিয়া। দলের পক্ষ থেকে সেখানে তার পায়ের ও চোখের চিকিৎসার কথা বলা হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই খালেদা জিয়ার পায়ের সমস্যা বেড়েছে। আর এর আগে তিনি লন্ডনে চোখের অপারেশন করিয়েছিলেন।
চিকিৎসার পাশাপাশি সেখানে থাকা পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ঈদুল আজহা উদযাপন করে খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন বলে জানানো হয়েছে।
যদিও তার দেশে ফেরার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অাওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। তারা মনে করছেন, দুর্নীতির মামলায় সাজা হওয়ার ভয়ে খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন না।
বিএনপির বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এটাই হতে পারে খালেদা জিয়ার শেষ লন্ডন সফর। তাই নির্বাচনের প্রস্তুতিসহ সার্বিক বিষয়ে এই সফরেই তারেক রহমানের সাথে আলোচনা চূড়ান্ত করতে চান বিএনপি প্রধান। এর মধ্যে রয়েছে সরকারবিরোধী আন্দোলন, জাতীয় নির্বাচন, স্থায়ী কমিটির শূন্য পদ পূরণ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পদে পদায়ন ও গুরুত্বপূর্ণ জেলা কমিটি গঠন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খালেদা জিয়া এবার লন্ডনে ৪২ দিন থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দেশে না ফেরা পর্যন্ত তিনি তারেক রহমানের বাসায়ই থাকবেন।
তারেক রহমানের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার আবু সায়েম এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বেগম জিয়া মূলত তার চিকিৎসার জন্য লন্ডনে এসেছেন। প্রথমে চিকিৎসা করাবেন। এরপর কিছুদিন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিশ্রামে থাকবেন।
খালেদা জিয়া যদি ৪২ দিন সেখানে থাকনে তাহলে এটিই হবে তার সবচেয়ে দীর্ঘ বিদেশ সফর।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমি জানি না তিনি ঠিক কতোদিন থাকবেন। ৪২ দিন থাকার কোন কথা তিনি আমাদের জানাননি। আর লন্ডনের কে কি জানিয়েছেন তা আমরা জানি না।’
‘‘আর যদি এতোদিনও থাকেন, তবে এটিই তার দীর্ঘদিনের বিদেশ সফর কিনা তার কোন সঠিক রেকর্ড আমাদের জানা নেই।”
তিনি আরো বলেন, ‘চেয়ারপারসন নিছক কোনো সফরে যাননি।নিজের চিকিৎসা করাতে গিয়েছেন। এর মধ্যে অন্য কিছু নেই। সেখানে কতোদিন থাকবেন তা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঠিক হবে। এ জন্য যতোদিন প্রয়োজন ততোদিন তিনি লন্ডনে অবস্থান করবেন।’
রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এর আগেও বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়েছেন। সৌদি আরবে ওমরাহ কিংবা চীনে। তখন বড়জোর ১ সপ্তাহ বা ১০ দিনের বেশি ছিলেন না।
২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া সর্বশেষ লন্ডন সফর করেছিলেন। সেবারও তিনি চিকিৎসার জন্য সেখানে গিয়ে প্রায় দেড় মাসের মতো লন্ডনে ছিলেন।
Posted ২:১৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৯ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta