মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

খালেদা-তারেক ছাড়া ভোটে যাবে না বিএনপি

সোমবার, ২৯ জানুয়ারি ২০১৮
234 ভিউ
খালেদা-তারেক ছাড়া ভোটে যাবে না বিএনপি

কক্সবাংলা ডটকম(২৮ জানুয়ারি) :: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ছাড়া আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে না বিএনপি। দলের নেতারা দাবি করছেন, বেগম জিয়াকে ’মাইনাস’ করে আগামী নির্বাচন করতে চাইছে সরকার। তাড়াহুড়ো করে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারীতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ে বেগম জিয়াকে দন্ডিত করার মাধ্যমে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র চলছে।

আর  দুর্নীতির মামলায় অন্যূন দুই বছর দন্ডপ্রাপ্ত হলে সংবিধান ও গণপ্রনিতিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) অনুযায়ী নির্বাচন করাটা দু:সাধ্য হয়ে পড়বে। এই সার্বিক পটভূমি বিবেচনায় নিয়ে শনিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে,বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। সেই সাথে নির্বাচন প্রতিহত করা হবে।
এর আগে গত ৯ জানুয়ারী বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে না জোটের কোন শরিকদল। এদিকে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত গতকাল রবিবার নির্বাচন কমিশনকে আনুষ্টানিকভাবে জানিয়েছে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল।
নির্বাচন কমিশনের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছে দলটির নেতারা। বিকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাত করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, আগামী নির্বাচন থেকে বেগম জিয়াকে অন্যায়ভাবে বাইরে রাখার জন্য সরকার ষড়যন্ত্র করছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ছাড়া আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে না বিএনপি। সিইসির সাথে সাক্ষাত শেষে নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বাইরে রাখার জন্য যদি অন্যায়ভাবে চেষ্টা করা হয় তাহলে বিএনপির কেউ নির্বাচনে অংশ নিবে এটা মূর্খ ছাড়া কেউ ভাববে না।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ না করলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আসলে হয়না। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়। সেই অংশগ্রহণের পথে বাধা সৃষ্টি করার আমরা চক্রান্ত বা অপচেষ্টা দেখছি। একেবারেই কোনো কারণ ছাড়া, কোনো প্রমাণ ছাড়া আমাদের নেত্রীকে অভিযুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে।
আমাদের নেতা তারেক রহমান এবং আরো কিছু নিরীহ মানুষকে অভিযুক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেরকম কোনো কিছু হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের যে আকাঙ্ক্ষা, যে প্রয়োজন সেটা বিঘ্নিত হবে। সেজন্য আমরা আশা করি যে সেরকম কিছু হবে না। আমরা সবাই মিলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারব।
সিইসি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা জানি এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের করার কিছু নেই। সম্ভবত দোয়া করা ছাড়া কিছু করার নেই। কিন্তু একটা জিনিস আমরা আলোচনায় অনুভব করেছি যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে যেন বাধা সৃষ্টি করতে পারে এরকম কিছু যেন না হয় সে ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, ভাবনা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের রয়েছে।
আমরা বলেছি যে, সরকারের যে চক্রান্ত দেখছি সেটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে প্রচন্ড বাধা হবে। সে ব্যাপারে একমত তিনি নিশ্চয়ই বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না।
সিইসি কোনো আশা দিয়েছেন কিনা-জানতে চাইলে তিনি বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান তারা। এখনও তারা সে বিষয়ে আগ্রহী। আমরাও বলেছি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। আওয়ামী লীগকে বাইরে রেখে আমরা নির্বাচন করতে চাইনা।
নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা আছে কিনা-সেটা জানিনা। সময়ই বলে দেবে। আমরা আশা করি নৈতিক অবস্থান থেকে নির্বাচন যেন অংশগ্রহণমূলক হয় সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন ভূমিকা নেবে।
ঢাকা সিটিতে ইসির আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে বিএনপি জানতে চেয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ঢাকা সিটি আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমরা প্রার্থী দিয়েছিলাম, নির্বাচনে যুক্ত হয়েছিলাম এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের যেসব কথা আমরা শুনেছি দেখেছি যে কারণে স্থগিত করা হয়েছে সেরকম কারণ নাকি ছিল না। তাহলে নির্বাচন স্থগিত হলো কেন।
সাধারণ মানুষ সন্দেহ করে যে সরকার এই নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়ে ভীত হয়ে নানান কৌশলে এই নির্বাচন স্থগিত করেছে। সেই কৌশল থেকে এই প্রক্রিয়াটাকে মুক্ত করার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের যা কিছু করার দরকার করবে বলে আমরা আশা করি।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বন্ধ হয়ে গেল। আমরা তা চাইনি। আমরা আশাবাদী ছিলাম জয়লাভ করব। এটা আদালতের নির্দেশে বন্ধ করেছে। নির্বাচন কমিশন করে নাই। এরপরও আরও নির্বাচন আছে। এরপর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আমরা এইটুকু মনে করি যে সব নির্বাচনই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হবে এবং অংশগ্রহণমূলক হবে। আর যদি কোনো নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হয় তাহলে সেটা নির্বাচন নয়। ওটা নির্বাচনের নামে প্রহসন বা খেলা। আমরা খেলা বা প্রহসনে যুক্ত হতে চাইনা। আমরা নির্বাচনে অংশ নিতে চাই।
প্রতিনিধি দলে আরো ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ ও খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
এদিকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,এটা সুস্পস্ট যে,জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও দেশনেত্রীকে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে বাইরে রাখার জন্য দ্রুত রায় ঘোষণা অপচেষ্টার অংশ । তবে আমরা আগেও বলেছি এখনো বলছি,বেগম জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া এই দেশে আগামী নির্বাচন হবে না। সে ধরনের নির্বাচনের চেস্টা করে কেউ সফল হতে পারবে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর মতো কিছু ভাবলে আওয়ামীলীগকে জনগন রাজনীতি থেকে বিদায় করতে প্রস্তুত।
এটা ২০১৮ সাল। তিনি বলেন,খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবেনা। আর খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন অতো সহজ না। আগামীতে সরকার বুঝতে পারবে তাদের কি পরিনতি হতে যাচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন,মামলার রায় দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ওই সময়ের পরিস্থিতি দেখে তখন আমরা বলবো আমরা কি করতে যাচ্ছি।খালেদা জিয়ার বিচার প্রক্রিয়া দেশে দেশের প্রতিটি সচেতন মানুষ জেনে গেছে, এমন ঘটনা শুধু অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত নয়, রহস্যজনক।
২৫ জানুয়ারি বিশেষ জজ আদালতে বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য হঠাত্ সমাপ্ত করে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এই রায়ের তারিখ ঘোষণা কেন্দ্র করে গোটা জাতি আজ উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ। এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্র। স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, জাল-জালিয়াতি করে বিচারের নামে প্রহসন ও বিরোধী পক্ষকে দমনের জন্য আদালতকে ব্যবহার করার আরেকটি নোংরা দৃষ্টান্ত স্থাপিত হতে যাচ্ছে। বিচার বিভাগ ও আইনের শাসন নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এমন আচরণ দেশের জনগন আর মানবে না। এবার জবাব দেয়ার পালা।
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় রাজধানীতে পৃথক অনুষ্ঠানে বলেছেন,খালেদা জিয়া ছাড়া এদেশে কোন নির্বাচন হবে না। তাকে ছঅড়া নির্বাচনে যাবে না বিএনপি । জনগন রাজপথে নেমে সরকারের পতন ঘটাবে। গয়েশ্বর বলেন,খালেদা জিয়াকে আপনারা জেল দেবেন,দেন।
ভাবছেন আমরা কান্না-কাটি করুম, না। কান্নাকাটি করুম না। ঘরে বসে থাকবো? না,বলে দিতে চাই, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আগে আপনাদের পতন ঘটাব। সরকারের পতন হলেই এবার খালেদা জিয়া মুক্ত, সরকারের পতন হলে এবার বাংলাদেশের মানুষ মুক্ত হবে। তারপর নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে যাবে বিএনপি।
এদিকে জানাগেছে,নির্বাচন নিয়ে উভয় সংকটে আছে দলটি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলে গণপ্রনিতিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) অনুযায়ী বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে।  আর খালেদা জিয়া দন্তিত হলে নির্বাচন করা সুদুরপরাহত হবে। রায়ে দন্ডিত হলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আদৌ অংশ নিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে তারা শঙ্কিত। দন্ডিত ব্যক্তির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের (২)(ঘ) উপ-অনুচ্ছেদে।
এ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে— ‘নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বত্সরের কারাদন্ডে দন্ডিত হন এবং তাহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বত্সরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে’ তা হলে তিনি নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য হবেন। আবার গণপ্রনিতিধিত্ব অধ্যাদেশেও (আরপিওতেও) একই কথা বলা হয়েছে।
এই অবস্থায় বিএনপি সামনে আন্দোলন করে তাদের দাবী আদায় ছাড়া বিকল্প দেখছে না।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভা ৩ ফেব্রুয়ারি
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা ৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। সিইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণাকে সামনে রেখে এই বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। জোটের সঙ্গেও তার বৈঠকের কথা রয়েছে।
234 ভিউ

Posted ৩:৪২ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৯ জানুয়ারি ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com