এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া(৪ ডিসেম্বর) :: চকরিয়া উপজেলার বানিয়ারছড়া স্টেশনের অদুরে ফাইতং পুলিশ ফাঁড়ির পেছনে আদালতের আদেশ লঙ্ঘনের মাধ্যমে কয়েকদিন ধরে অনাথ পরিবারের সৃজিত বাগানের গাছ কেটে লুটের মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবারও দিনদুপুরে বাগানে ঢুকে অন্তত ৫০-৫৫টি ছোট-বড় গাছ কেটে লুটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তদল।
বিকেলে চকরিয়া প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ ধরণের অভিযোগ তুলেছেন বাগান মালিক ফাইতং ইউনিয়নের সুতাবাদী পাড়া গ্রামের বাসিন্দা মরহুম আতিকুল মাওলার মেয়ে জারিন তাসনোভা সামিহা (২০)। ওইসময় সামিহার মা উম্মে আম্মারাও উপস্থিত ছিলেন।
বাগান মালিকের মেয়ে জারিন তাসনোভা সামিহা বলেন, ৩০৬ নম্বর ফাইতং মৌজার হর্টি ৩০ নম্বর হোল্ডিংয়ের অধীন ১২৬৯, ১৪১৬, ১৪৮৮ ও ১৬২৯ আন্দর দাগের একশত একর জায়গা সমহারে ও যৌথভাবে তাঁর বাবা মরহুম আতিকুল মাওলার নামে রেকর্ডভুক্ত আছে। উল্লেখিত জায়গায় আতিকুল মাওলা জীবিতকালে বিপুল টাকা বিনিয়োগ করে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছের চারা লাগিয়ে বাগান সৃজন করে শান্তিপুর্ণভাবে ভোগদখলে রয়েছেন।
১৯৯৮ সালে আতিকুল মাওলা মারা গেলে সেই থেকে স্ত্রী উম্মে আম্মারা ও মেয়ে জারিন তাসনোভা সামিহা বাগানসহ জায়গা সমুহ রক্ষনাবেক্ষন করে আসছেন।
জারিন তাসনোভা সামিহার অভিযোগ, তাঁর বাবা বেঁেচ নেই। মা উম্মে আম্মারা চট্টগ্রামে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত আছেন। তিনিও মায়ের সঙ্গে সেখানে থাকেন। সেই সুযোগে ফাইতংয়ের বাসিন্দা জাহাংগীর আলম ও তাঁর ছেলে জহিরুল ইসলাম কুটকৌশল অবলম্বন করে বাাগানসহ সমুদয় জায়গা দখলে নেয়ার জন্য কয়েকমাস ধরে নানাভাবে অপচেষ্ঠা চালাতে শুরু করেছে।
এরই জেরে অভিযুক্তরা ভাড়াটে লোকজন নিয়ে সর্বশেষ গত ২৫ নভেম্বর সকালে বাগানের জায়গা জবরদখলের জন্য হামলা চালায়। খবর পেয়ে সামিহা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলাকারীদের বাঁধা দেন। কিন্তু অভিযুক্তরা ওইসময় তাকে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে বাগান থেকে চলে আসতে বাধ্য করে।
এ ঘটনায় বাগান মালিকের মেয়ে জারিন তাসনোভা সামিহা বাদি হয়ে গত ২৯ নভেম্বর লামা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে অভিযুক্ত জাহাংগীর আলম ও তাঁর ছেলে জহিরুল ইসলামসহ চারজনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৪ ধারায় একটি লিখিত এজাহার করেন।
এরপর শুনানী শেষে আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেট ও লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-এ-জন্নাত-রুমি বাদির অভিযোগ মতে বিষয়টি যাছাই পুর্বক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে ও শান্তি-শৃঙ্খলা দেখভালে লামা থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এই সঙ্গে আদালত ওই জায়গায় স্থিতাবস্থা আদেশ জারি করেন।
মামলার বাদি জারিন তাসনোভা সামিহার অভিযোগ করেছেন, আদালতের আদেশ স্থিতাবস্থা আদেশ থাকলেও তা লঙ্ঘনের মাধ্যমে কয়েকদিন ধরে অভিযুক্ত বিবাদিদের লেলিয়ে দেয়া ভাড়াটে দুর্বৃত্তরা বাগানের রকমারি গাছ কেটে লুটের মহোৎসব চালাচ্ছে। এমনকি গতকাল মঙ্গলবারও দিনদুপুরে বাগানে ঢুকে অন্তত ৫০-৫৫টি ছোট-বড় গাছ কেটে লুটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তদল।
জানতে চাইলে লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, ফাইতংয়ের বাগানের জায়গা জবরদখল চেষ্ঠা সংক্রান্ত আদালতের আদেশের বিষয়টি অবগত হয়েছি। ইতোমধ্যে আদালতের নির্দেশক্রমে সংশ্লিষ্ট বাগানে যে কোন ধরণের অনভ্রিপ্রেত ঘটনা এড়াতে ফাইতং পুলিশ ফাড়ির আইসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে বাগানের গাছ কেটে লুটের ঘটনাটি আমার জানা নেই। তিনি বলেন, গাছ কাটার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
Posted ১২:০২ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta