এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া(৫ মে) :: চকরিয়া উপজেলার হারবাংয়ে দরগার মসজিদের সভাপতি পদ দাবীর বিরোধের জেরে মাজারের খাদেম ও তার চার ছেলেকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামের বাড়িতে মারধরের এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন আহত মাজার খাদেম। বর্তমানে আহত বাবা ও ছেলেরা চকরিয়া সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হারবাং হযরত শাহ ছুফি (র:) মাজারের খাদেম ফয়েজ আহমদ জানান, প্রায় ৫০বছর ধরে তিনি মাজারের দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি তিনি মাজার সংলগ্ন মসজিদটি নির্মাণের পর থেকে সভাপতির দায়িত্বও পালন করে আসছেন। মসজিদটি নির্মান করতে সরকারী-বেসরকারী সাহায্য ছাড়াও তার ব্যক্তি মালাকানাধীন পাহাড়ি এলাকার সম্পদ বিক্রি করেছেন।
খাদেম ফয়েজ আহমদ অভিযোগ করেছেন, দুইবছর আগে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মিরানুল ইসলাম হারবাং ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর মাজারের নিয়ন্ত্রন নিতে তৎপরতা শুরু করেন। এক বছর আগে চেয়ারম্যান নিজে নিজে মাজার মসজিদের স্বঘোষিত সভাপতি বনে যান। তারপর নুরুল ইসলাম নামের এক মৌলভীকে তিনি ইমাম নিয়োগ করেন।
খাদেম ফয়েজ আহমদের অভিযোগ, ইমাম নিয়োগের পর থেকে তাঁর মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকা থেকে মসজিদের নামে চাঁদা তুলে ভাগবাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করে আসছেন কথিত সভাপতি।
এলাকাবাসি জানায়, সম্প্রতি সময়ে ইমামের পরিবারে কোন সন্তান সন্ততি না হওয়ার পর এলাকায় তাকে নিয়ে মুখরোচক আলোচনা শুরু হয়। এ ধরণের কথা প্রকাশের পর ওই ইমামের পিছনে নামাজ পড়তে অনিহা প্রকাশ করেন খাদেমের অনুসারী এলাকার মুসল্লিরা।
বিষয়টি জানিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে একটি সুরাহা করতে নালিশ দেন মাজারের প্রধান খাদেম মোহাং ফয়েজ আহমদ। কিন্তু চেয়ারম্যান বিষয়টি সমাধানে আজকাল করে সময়ক্ষেপন শুরু করেন। এ অবস্থার কারনে মুসল্লিরা অন্য মসজিদে চলে যাচ্ছেন।
সর্বশেষ বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রাত আটটার দিকে চেয়ারম্যানের বাড়িতে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। চেয়ারম্যানের কথা মতো বৈঠকে খাদেম মোহাং ফয়েজ আহমদ ও তার চার ছেলে বৈঠকে উপস্থিত হন।
খাদেমের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলে আবুল হাসেম (২৩) জানান, রাত সাড়ে ৮ টায় তার বয়োবৃদ্ধ বাবা খাদেম মোহাং ফয়েজ আহমদকে (৯৫) ঘরের ভিতরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে চেয়ারম্যান বলেন, আমি সভাপতি থাকতে ইমাম পরিবর্তন করার দাবী করার মজা দেখাই তোদের।
এই কথা বলে, চেয়ারম্যান ও তার লোকজন লাটি দিয়ে মারধর করতে থাকেন খাদেমকে। তার শোর চিৎকারে বাবাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলে আবুল হাসেম (২৩), মোহাং সুলতান (৩৬), জাকারিয়া (২৮) ও সাজ্জাদ হোসেন সাকিব (২২) প্রতিবাদ করলে একই কায়দায় মারধর করে।
জানতে চাইলে হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম গতকাল রাত ১০টায় মুঠোফোনে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমার বাড়িতে মসজিদের একটি বিষয় নিয়ে বৈঠক চলছিল। ওইসময় খাদেমের ছেলে হাশেম অসৌজন্যমুলক আচরণ করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, আমি ওই সময় তাকে ধমক দিই। তখন সে আমার বাড়ি থেকে দৌঁেড় পালিয়ে যায়। পরে আমি পরিষদের চৌকিদার ও দফাদার দিয়ে তাকে ধরে স্থানীয় পুলিশ ফাঁিড়তে পাঠাই। রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আলম বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেন। এরপর খাদেম ও তাঁর ছেলেদের ভুল স্বীকার সাপেক্ষে আটক ছেলেকে ছেঁেড় দিই।
Posted ১১:৩৮ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৫ মে ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta