মুকুল কান্তি দাশ,চকরিয়া(১৯ সেপ্টেম্বর) :: চকরিয়ায় এক যুবককে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে জোরপূর্বক মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুজিবুল হকের বিরুদ্ধে।
বুধবার দুপুর বারোটার দিকে পৌরশহর চিরিঙ্গার এস আর প্লাজার সামনে থেকে ওই যুবককে ধরে বায়তুশ শরফ সড়কের একটি সেলুনে নিয়ে গিয়ে মাথা ন্যাড়া করা হয়।
এ সময় সেলুনের এক কর্মচারীকে বাধ্য করা হয় ওই যুবকের মাথা ন্যাড়া করে দিতে। ওই জনপ্রতিনিধির নির্দেশ মতে সেলুন কর্মচারী ওই যুবককে ন্যাড়া করে দেয় মাথা। ঘটনাটি বুধবার দুপুরের পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, যুবককে ধরে নিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মুজিবুল হক।
ঘটনার শিকার যুবকের নাম মো. ইব্রাহিম নয়ন (২৫)। সে চকরিয়া পৌরসভার ফুলতলা গ্রামের আবদুল মালেকের পুত্র। তবে কয়েকমাস আগে সে উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের পাহাড়িয়া পাড়ায় বসবাস করে আসছিল।
ঘটনার শিকার যুবক মো. ইব্রাহিম নয়ন দাবি করেন, গতকাল দুপুর বারোটার দিকে পৌরশহরের চিরিঙ্গা কাঁচাবাজার এলাকায় এক মহিলাকে উত্ত্যক্ত করে অপর এক বখাটে। এ সময় ওই মহিলার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম আমি। তখন উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় ওই বখাটেকে ধরতে ওই মহিলা অনুরোধ করেন আমাকে। মূহুর্তের মধ্যে বখাটের ফোনে আরো কয়েকজন বখাটে উপস্থিত হয় পৌরশহরের এস আর প্লাজার সামনে।
এ সময় ওই স্থান থেকে আমাকে ধরে নিয়ে যায় পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুজিবুল হকের কার্যালয়ে। সেখানে শারিরিকভাবে মারধরের পর নিয়ে যাওয়া হয় সেলুনে। এর পর কাউন্সিলরের নির্দেশমতে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত চকরিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুজিবুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, যুবকটি মূলত মোবাইল চোর। সে পৌরসভার সওদাগরঘোনা এলাকার এক ব্যবসায়ীর মোবাইল ছিনতাই করে পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা ধাওয়া দেয়।
এ সময় সে আমার সামনে পড়ে গেলে তার কাছ থেকে একটি মোবাইলও উদ্ধার করে ছিনতাইয়ের শিকার ব্যবসায়ীকে ফেরত দিই। পরে স্থানীয় জনতার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সেলুনে নিয়ে গিয়ে মাথা ন্যাড়া করে দিই।
চকরিয়া থানার ওসি মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ওই যুবক যদি কোন অপরাধও করে থাকে, তাহলে তাকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করার নিয়ম রয়েছে। জনপ্রতিনিধি হলেও কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার আইন সমর্থন করেনা। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ২:৪১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta