এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া (১১ ডিসেম্বর) :: মৌসুমের শুরুতে চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নে লবণ মাঠ দখলে নিতে প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা মহড়া দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী লবণ মাঠ মালিক ও চাষীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আশপাশের চাষীরা ওই এলাকায় বড় ধরণের সংঘাত এড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ভুক্তভোগী লবণ মাঠ মালিক পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত হেদায়ত আলীর ছেলে হাজি ছৈয়দুর রহমান জানান, চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের বহলতলী মৌজায় তাদের দুই একর ৪৫ শতক লবণ জমি রয়েছে।
এসব জমি রক্ষণাবেক্ষনের জন্য ডুলাহাজারা ইউনিয়নের বালুরচর গ্রামের নজির হোসেনের ছেলে জাগির হোছাইন ও একই গ্রামের বাসিন্দা বদিউল আলমের ছেলে শফিকুর রহমানকে এটর্নি মুলে ২০০৯ সালের ১৯ ডিসেম্বর ক্ষমতা দেয়া হয়। এরপর থেকে ভোগদখলে থেকে তাঁরা ওই জমিতে চাষাবাদ করে আসছেন।
মালিক ও চাষীরা অভিযোগ করেছেন, চলতিবছর মৌসুমের শুরুতে তাদের লবণ জমি জবরদখলের জন্য ডুলাহাজারা ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের মৃত বদরু মেহেরের ছেলে আবুল কালাম নানাভাবে অপচেষ্ঠা চালাচ্ছে।
ইতোমধ্যে অভিযুক্ত আবুল কালাম হয়রানি করতে কৌশলে চাষী জাগির হোছাইন গংয়ের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় জাগির হোছাইনসহ আসামি পক্ষের সকলে চলতিবছরের ২ এপ্রিল চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত থেকে বেকসুর খালাস পান।
লবণ মাঠ মালিক ও চাষীরা জানান, অভিযুক্ত আবুল কালাম লবণ মাঠ দখলের কু-উদ্দেশ্যে ইতোপুর্বে ২০১৩ সালের ২৭ মার্চ জাকির গংকে অভিযুক্ত করে তিনজনের বিরুদ্ধে ও ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারী ৬জনের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় দুইটি অভিযোগ করেন।
পরে দুটি অভিযোগ তদন্ত করে ঘটনা মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় তৎকালীন চকরিয়া থানার ওসি (বর্তমানে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় কর্মরত) রনজিত বড়–য়া সকল আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে অভিযোগ দুইটির ফাইনাল রির্পোট দেন।
এরপর আবুল কালাম আবারও প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে ২০১৪ সালের ১৯ আগষ্ট জাগির গংকে আসামী করে চকরিয়া থানায় ৫ জনের বিরুদ্ধে আরো একটি অভিযোগ দায়ের করে। থানার ওসির নির্দেশে তৎকালীন এ.এস.আই নাছির উদ্দীন সরেজমিন তদন্ত করে ওই অভিযোগটিও ফাইনাল রির্পোট দেন। তাকে বিবাদি জাকির গং অব্যাহতি পান।
সর্বশেষ চলতিবছরের ১৪ নভেম্বর আবুল কালাম পুন:রায় বাদী হয়ে লবণ মাঠের রক্ষক জাগির সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় নতুন একটি অভিয়োগ দায়ের করেছে। এরপর থেকে অভিযুক্ত আবুল কালাম ও ইউপি মেম্বার নুরুল আবচার প্রায় প্রতিদিনই লবণ মাঠ জবরদখলের জন্য নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। পাশপাশি ভাড়াতে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত জড়ো করে অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে।
এ অবস্থায় অনেকটা নিরুপায় হয়ে লবণ মাঠের রক্ষক জাকির হোছাইন বাদি গয়ে গত ১৪ নভেম্বর চকরিয়া থানায় আবচার মেম্বারসহ ৬জনের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরী রুজু করেছেন। উভয়পক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে চকরিয়া থানার ওসি বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, ইতোমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন দুইপক্ষের বিষয়টি পূর্ণাঙ্গভাবে সমাধানে জন্য কক্সবাজার শহরের একজন আইনজীবির কাছে উকিল মতামত চেয়েছেন। এরই প্রেক্ষিতে ওই আইনজীবি উভয়পক্ষের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে লিখিতভাবে মতামতও প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, উকিল মতামতে লবণ মাঠের মালিকানা প্রকৃত মালিক হাজি ছৈয়দুর রহমানের পক্ষে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, উকিল মতামতের আলোকে সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি সমাধানের পথে না গিয়ে আবাবও দখল চেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছে।
Posted ১:১৯ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta